আসতাগফিরুল্লাহ দোয়া আরবী বাংলা

আসতাগফিরুল্লাহ দোয়া আরবী বাংলা

আসতাগফিরুল্লাহ শব্দের অর্থ কি? অর্থাৎ, আমি ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিই। ফলস্বরূপ, বাংলা ও আরবি উভয় ভাষায় আসাতাগফিরুল্লাহ দুয়া বোঝা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রার্থনার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাইতে পারি।

আসতাগফিরুল্লাহ দোয়া আরবী বাংলা

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে তওবা কর এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। প্রতিদিন আমি আমার পাপ স্বীকার করি এবং ক্ষমা প্রার্থনা করি। এটা ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাওয়ার তাৎপর্য ও প্রয়োজনীয়তা দেখায়। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

ঈশ্বরের ক্ষমার বিকল্প নেই। কুরআন ও সুন্নাহ সম্পর্কে, ক্ষমা করার জন্য আল্লাহ তা ‘আলার কাছে অসংখ্য অনুরোধ করা হয়েছে। তবে, সাধারণ, সহজ প্রার্থনার মাধ্যমেও ক্ষমা চাওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে, আস্তাগফিরুল্লাহ সর্বাধিক পঠিতদের মধ্যে একজন। আমরা আজ মুসলমানদের জন্য ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পাঁচটি পদ্ধতির রূপরেখা তৈরি করতে যাচ্ছি।

আসতাগফিরুল্লাহ দোয়া আরবী ও বাংলা উচ্চারণ

আরবী – أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’
অর্থ: আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

পড়ার নিয়ম: আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর এই দোয়াটি ৩ বার পড়তেন।

আরবী – أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ: ‘আস্‌তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।’

অর্থ: ‘আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।’ (আয়াতুল কুরসি)

পড়ার নিয়ম: দিনের যে কোনো ইবাদত-বন্দেগি তথা ক্ষমা প্রার্থনার সময় এভাবে তাওবাহ করতে পারেন। হাদিসে এসেছে- এভাবে তাওবাহ-ইসতেগফার করলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নকারী হয়।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)

আরবী – أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ

উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।

অর্থ: আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।

পড়ার নিয়ম: এ দোয়াটি প্রতিদিন ৭০/১০০ বার পড়া উচিত। নবীজী হযরত মোহাম্মদ (সা.) প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তাওবাহ ও ইসতেগফার করতেন।’ (বুখারি)

আরবী- اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউলাকা বিজাম্বি ফাগ্ফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।’

অর্থাৎ, “হে প্রভু! আমার প্রভু আপনি। তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আমি তোমার সৃষ্টি। আপনার সেবক হিসাবে, আমি আপনার কাছে আমার কথা রাখতে বাধ্য। আমি আমার কৃত সমস্ত পাপ থেকে সান্ত্বনার জন্য আপনার কাছে দৌড়াচ্ছি। তুমি যা দেবে আমি তা-ই নেব। আর আমি আমার ভুল স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা কর। যেহেতু আপনি ছাড়া কেউ আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না।

পড়ার নিয়ম: সকালে ও সন্ধ্যায় এ দোয়া পাঠ করা উচিত। কেননা হাদিসে এসেছে- যে ব্যক্তি এ ইসতেগফার সকালে পড়ে আর সন্ধ্যার আগে মারা যায় কিংবা সন্ধ্যায় পড়ে সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে যাবে।’ (বুখারি)

আরবী- رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।’

অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।’

পড়ার নিয়ম: রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)

আসতাগফিরুল্লাহ দোয়া আরবী বাংলা

আসতাগফিরুল্লাহ এর ফজিল

আল্লাহ তা ‘আলার পরম করুণাময় ও ক্ষমাশীল হওয়ার গুণাবলী থেকে অসংখ্য নিয়ামত পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে মানুষ, তোমরা নিজেদের পাপ থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও এবং তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা চাও। প্রতিদিন আমি আমার পাপ স্বীকার করি এবং ক্ষমা প্রার্থনা করি। (নাসাঈ)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের উপর আল্লাহ তা ‘আলা সন্তুষ্ট হোন। নবী (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি সবসময় এস্তেগফার প্রতি আসক্ত থাকে, তবে আল্লাহ তা’ আলা তার জন্য প্রতিটি সংকটের সময় পথ খুলে দেন, তাকে সব ধরনের উদ্বেগ থেকে মুক্তি দেন এবং তাকে এমনভাবে খাদ্য দান করেন যা তার বোধগম্যতার বাইরে।আবুবা দাউদ

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘এক বান্দা পাপ করে বললো, হে আমার পালনকর্তা, আমার অপরাধ ক্ষমা করুন। তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হোক “।আমার বান্দা জানে যে, তার একজন রব আছেন, যিনি পাপ ক্ষমা করেন এবং শাস্তি দেন। আমি আমার পরিচারককে দোষমুক্ত করি। (Islamic and Bukhari).

“হাদীসে আরও বলা হয়েছে,” “যদি কেউ শুক্রবার ফজরের আগে তিনবার ‘আস্তাগফিরুল্লাহজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হায়ুল কাইয়ুম ওয়া আতুবু ইলাইহি’ বলে, তবে তার পাপ সমুদ্রের ফেনা সমান হলেও ক্ষমা করা হবে।”

কুদসীতে আল্লাহ তা ‘আলা আবু জারকে বলেন, হে আমার বান্দাগণ, তোমরা দিনরাত পাপ করছ এবং আমি সব পাপ ক্ষমা করে দিচ্ছি। অতএব আপনি আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন, আমি আপনাকে তা প্রদান করব। (মুসলিম)।

আরো পড়ুনঃ

Leave a Comment

You cannot copy content of this page

Scroll to Top