একই শব্দের বিভিন্নার্থে প্রয়োগ ঃ শব্দই ভাষার সম্পদ। বাংলা ভাষার শব্দ ভান্ডারে অসংখ্য শব্দ রয়েছে। এক একটি শব্দের এক একটি বিশেষ অর্থ আছে।
কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে কোন একটি শব্দ শুধুমাত্র একটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন বিশেষ বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়। শব্দের এরূপ ব্যবহারকে ভিন্নার্থে প্রয়োগ বলা হয়। বাংলা ব্যাকরণে এরূপ কতকগুলো শব্দের ভিন্নার্থক বিশেষ্য, বিশেষণ ও ক্রিয়াপদের প্রয়োগ দেখানো হল।
একই শব্দের বিভিন্নার্থে প্রয়োগের ব্যবহার
অঙ্ক
- ক্রোড় –শিশুর কাছে মাতৃঅঙ্কই সবচেয়ে নিরাপদ।
- গণিত- সে অঙ্কে ভালো নম্বর পেয়েছে।
- নাটকের অধ্যায়- নাটকটি তিন অঙ্কে বিভক্ত।
- হিসাব- যেভাবে ঋণের অঙ্ক বাড়াচ্ছ, শোধ করবে কেমনে?
- রেখা- সে কাগজে বিচিত্র অঙ্কপাত করল।
- একই শব্দের বিভিন্নার্থে প্রয়োগ
অর্থ
- মানে – মনোযোগ দিয়ে পড়, তাহলেই অর্থ বুঝতে পারবে।
- ধন – সারাজীবন তো অর্থই জমালে, সুখ কতটুক পেলে?
- প্রয়োজন- অর্থ ছাড়া যে তুমি আসনি, তা তোমার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
- ইঙ্গিত- তোমার কথার অর্থ আমি বুঝতে পেরেছি।
- উদ্দেশ্য – জানি না হঠাৎ করে আমাকে টেলিগ্রাম করার অর্থ কি!
উত্তর
- দিক বিশেষ- হিমালয় বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত।
- জবাব- চুপ করে আছ কেন, উত্তর দাও।
- পরবর্তী- স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশে নাটকের প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে।
- ভবিষ্যৎ- দোয়া করি উত্তরকালে তুমি একজন দেশবরেণ্য নেতা হও।
- পরে – শব্দের উত্তরে প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়।
উপায়
- কৌশল- চোরেরা চুরি করার আশায় নিত্যনতুন উপায় খুঁজে।
- রোজগার- জমি বিক্রি করে আর কতদিন চলবে, একটা উপায় খুঁজ।
- প্রতিকারের পথ- বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের সঠিক উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
- আরোহণ করা- গাছে ওঠা খুব সহজ কাজ নয়।
- জাগা- আর কত ঘুমুবে, এবার উঠে পড়।
- সংগৃহীত- মহল্লায় নাটক হবে, ছেলেরা তাই বাড়ি বাড়ি চাঁদা উঠাচ্ছে।
- লোপ পাওয়া- স্বার্থের টানাপড়েন কলেজটি শেষ পর্যন্ত উঠেই গেল।
- খুশি হওয়া- তাকে যতই দাও না কেন, মন উঠবে না।
- ছাপা হওয়া- বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের ক্রীড়ানৈপুণ্যের খবর ব্রিটেনের পত্রিকায় উঠেছে।
উচ্চ
- লম্বা – ইংরেজরা দৈহিকভাবে বেশ উচ্চ।
- উদার- তাঁর মতো অমন উচ্চ মনের মানুষ আর দেখিনি।
- ভালো- পত্রিকাটি উচ্চমানের।
- সম্ভ্রান্ত – হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী উচ্চ বংশের সন্তান ছিলেন।
- জোরাল- উচ্চকণ্ঠী নরেন বিশ্বাস আর বেঁচে নেই।
কর
- হাত- তোমার কর স্পর্শ করে আমি যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, তা আমি রক্ষা করব।
- খাজনা- সরকারের রাজস্ব আয়ের একটি বিরাট অংশ কর থেকে আসে।
- কিরণ- আজি এ প্রভাতে রবির কর।
- হাতির শুঁড় – করীর আঘাতে ছোট ছেলেটির অকাল মৃত্যু হলো।
- করা- আর দেরি না করে কাজটি করে ফেল।
কথা
- প্রতিশ্রুতি – কথা দিচ্ছি, তোমার কাজটি আমি করে দেব।
- অনুরোধ- আশা করি আমার কথা রাখবেন।
- প্রসঙ্গ – এ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের কথা জানতে হবে।
- বাক্যলাপ- তার সাথে কথা বলে বড় আনন্দ পেয়েছি।
- গল্প – অনেক দিন আগের কথা, এক দেশে এক রাজা ছিল।
করা
- কাজ করা- তাড়াতাড়ি কাজটি করে ফেল।
- কানভারী- স্বার্থ আদায়ের জন্য সে বড় সাহেবের কানভারী করছে।
- গালাগালি করা- কথায় কথায় এত মুখ কর কেন?
- বশে আনা- তাকে হাত করতে গিয়ে তো পয়সা খোয়াচ্ছ, ফল কতটুক হবে?
- লালন-পালন করা- এ বাজারে সংসার লালন-পালন করা বড়ই কঠিন।
- ইতস্তত করা- যা করবার করে ফেল, এত ইতস্তত কর কেন?
- ভাড়া করা- পায়ে হেঁটে এতদূর যাওয়া যাবে না, রিক্সা করে যেতে হবে।
- সাহায্য করা- ভেব না, আমি তোমাকে সাহায্য করব।
কড়া
- নির্মম – কুলি-মজুরদের সঙ্গে কড়া আচরণ করা ঠিক না।
- রন্ধনপত্র- এত ছোট কড়ায় কাজ হবে না।
- কপর্দক- এত সম্পত্তির মালিক ছিলেন তিনি অথচ এখন এক কড়া সম্পত্তিও তার নেই।
- দরজার হাতল- দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে তার ঘুম ভেঙে গেল।
- দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী- অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি বড়েই কড়া।
- একই শব্দের বিভিন্নার্থে প্রয়োগ
কাঁচা
- অপক্ব- কাঁচা আমের স্বাদই আলাদা।
- অদক্ষ- তোমার এ কাঁচা হাতের লেখা অনেকেই বুঝবে না।
- অসিদ্ধ – মাংস ভালোভাবে সিদ্ধ হয়নি, কাঁচাই রয়েছে।
- মাটির তৈরি – বন্যায় বহু কাঁচা ঘর-বাড়ি ভেসে গেছে।
- অশুষ্ক- এ রকম কাঁচা কাঠ দিয়ে রান্না হবে না।
- কাল- চল্লিশের উপরে বয়স অথচ চুল তার কাঁচাই রয়েছে।
- অপরিণিত- এ কাঁচা বয়সে মেয়েটাকে বিয়ে দেয়া ঠিক হয়নি।
কাল
- সময়- তাকে দেখতে চাইলে আর কালক্ষেপণ করা ঠিক হবে না।
- আগামীদিন, গতদিন- আমি আগামীকাল বাড়ি যাব।
- অবস্থা- এখন শৈশবকালের কথাই বেশি মনে পড়ে।
- সর্বনাশের কারণ- রাজনীতিই তার জন্য কাল হয়ে এল।
- মৃত্যু – ভয়াবহ এইডস মানুষের জন্য কাল হয়ে এসেছে।
কর্ম
- কাজ- কর্মের নেশায় সে পাগল হয়ে উঠেছে।
- অদৃষ্ট- কর্মফলকে অস্বীকার করবে কি করে?
- পেশা- এ কর্মে তার মন ভরছে না।
- কর্তব্য- কর্মই ধর্ম, কর্মই মুক্তি।
- অনুষ্ঠান- বিবাহের ক্রিয়াকর্মে অনেক টাকার প্রয়োজন।
- সামর্থ্য- ছেলেটি কোন কর্মের নয়।
কাটা
- খন্ডিত করা- আমগুলো কেটে আন।
- অপমানিত হওয়া- তার আচার-আচরণ দেখে লজ্জায় আমার মাথা কাটা গেল।
- সাঁতার কাটা – কতদিন হয় নদীতে সাঁতার কাটি না।
- খনন করা- পুকুর কেটে মাছের চাষ কর।
- বাজারে চলন- বইমেলায় নির্মলেন্দু গুণের বইয়ের বেশ কাটতি।
- চ্যুত হওয়া- সাবধানে গান গেও যাতে তাল না কেটে যায়।
- লজ্জিত হওয়া- তোমাকে জিভ কাটতে দেখেই বুঝে ফেলেছি যে তুমি লজ্জা পেয়েছ।
কান্ড
- গাছের অংশ- বট গাছের বিশাল কান্ড থাকে।
- সাধারণ বিবেচনা- কান্ডজ্ঞান থাকলে কি সে একাজ করে?
- অধ্যায়- উপন্যাসটি কয়েক কান্ডে বিভক্ত।
- বিষয়- ছেলেদের কান্ড দেখে অবাক না হয়ে পারলাম না।
- ব্যাপার- কি কান্ড বলতো দেখি?
গা
- শরীর- গায়ে জ্বর আছে, গোসল করো না।
- ওঠা – অনেক ঘুমিয়েছ, এবার গা তুলো।
- আরাম করা- এভাবে কতদিন আর গায়ে ফুঁ দিয়ে চলবে।
- অত্মগোপন করা- এতগুলো টাকা মেরে সে গা ঢাকা দিল।
- গ্রাহ্য করা- কাজটি করে দেবার জন্য তোমাকে এত করে বলছি অথচ তুমি মোটেই গা করছ না।
- স্বস্তি পাওয়া- কালা জাহাঙ্গীর ধরা পড়েছে জেনে গা জুড়ালো।
গরম
- উষ্ণ – এত গরম পড়েছে যে টেকাই দায়।
- উত্তপ্ত – দুথটুকু গরম করে আন।
- মসলা – মাংস পাকাতে হলে গরম মসলা প্রয়োজন।
- উগ্র- সাধারণ কথায় এমন গরম হও কেন?
- পশমি কাপড়- শীত না নামতেই বাজারে গরম কাপেড়ের ছড়াছড়ি।
- ধনের বড়াই- সামান্য কয়টা টাকা কামাই করেই এত গরম দেখাচ্ছ।
গলা
- শরীরের বিশেষ প্রত্যজ্ঞ –জিরাফের গলা লম্বা।
- উচ্চকণ্ঠ- সামান্য কয়টা টাকার জন্য এত বড় গলায় কথা বলছেন কেন?
- নিষ্ফল বক্তৃতা- গলাবাজি করলেই ভোট পাওয়া যায় না।
- ধিক্বারসূচক উক্তি- আর কিছু না পার, তো গলায় দড়ি দিয়ে মর।
- গম্ভীর – প্রিন্সিপাল স্যারের ভারী গলা আমাদের ভয় ধরিয়ে দেয়।
- অধিক মূল্য হাঁকা- ঈদের বাজারে জিনিসপত্রের গলাকাটা দাম থাকে।
গুণ
- উৎকর্ষ- সে কোন গুণেরই না, একেবারে অপদার্থ।
- পূরণ – দুই কে দুই দিয়ে গুণ করলে চার হয়।
- রজ্জু/রশি- বাতাস পড়ে যাওয়ায় মাঝিরা গুণ টানছে।
- বিশিষ্ট ধর্ম- লবণের সাথে চিনি মেশালে লবণের গুণ নষ্ট হয়।
- সুফল- বিদ্যাগুণে আজ সে এত বড় হয়েছে।
ঘন
- গাঢ় – রক্তের উচ্চচাপ থাকলে ঘন দুধ না খাওয়াই ভালো।
- নিবিড় – আমাজান অববাহিকায় ঘন বন রয়েছে।
- দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, ও উচ্চতার পরিমাণ- কক্ষটির ঘনফল নির্ণয় কর।
- মেঘ – ’নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে, তিল ঠাঁই আর নাহিরে।
- অল্প সময়ের ব্যবধান – সে এত ঘন ঘন আসছে কেন?
- একই শব্দের বিভিন্নার্থে প্রয়োগ
চাল
- চাউল- চাউলের দাম তেমন কমেনি।
- ফন্দি – যে চাল চেলেছ, সে না এসে কি পারে?
- আশ্রয়- ঐ চালচুলোহীন ছেলের হাতে মেয়েকে তুলে দিতে চাও?
- ঘরের ছাদ- টর্নেডোতে বহুঘরের চাল উড়ে গেছে।
- ব্যবহার- তাঁর চালচলন দেখেই বোঝা যায়, তিনি বনেদি ঘরের সন্তান।
- অহঙ্কার – খুব হয়েছে, আর বনেদি চাল দেখিও না।
চোখ
- বুদ্ধি হওয়া- যাক কর্তাবাবুর চোখ তাহলে এতদিনে খুলেছে।
- রোগ বিশেষ – সাবধানে থেকো- অনেকেরই কিন্তু চোখ উঠেছে।
- ভয় দেখানো – এখনকার দিনে চোখ রাঙানিতে ফায়দা হয় না।
- লজ্জাহীনতা- তুমি তো চোখের মাথা খেয়েছ, কিছুই দেখছ না।
- খেয়াল রাখা- ছেলেটার উপরে একটু চোখ রাখবেন, যেন দুষ্টুমি না করে।
ছল
- দোষ- কথার ছল ধরাটা তার পুরনো অভ্যাস।
- ছলনা- তোমার এ ছলচাতুরী একদিন ধরা পড়ে যাবে।
- কপট – সে যে এত বড় ছল, তা অগে জানতাম না।
- প্রসঙ্গ – কিছু মনে করে না, এমনি কথাচ্ছলে একথা বললাম।
- উদ্দেশ্য – গুপ্তচরটি কোন না কোন ছলে ফকির সেজেছে।
ছোট
- ক্ষুদ্র – ‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে।’
- কনিষ্ঠ –সে আমার ছোট ভাই।
নম্র – বড় হতে চাইলে অগে ছোট হতে হয়। - নীচ – ছিঃ! এত ছোট মন তোমার।
- অনধিকার চর্চা – ছোটমুখে বড় কথা মানায় না।
জোর
- উদাত্ত – তিনি জোর গলায় ঘেষণা করলেন যে, তিনি সব সময় আমাদের পাশে থাকবেন।
- শক্তি – জোর যার মুল্লুক তার।
- জবরদস্তি –মামুনের দোকান থেকে চাঁদাবাজরা জোর করে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে গেল।
- আস্ফালন- গলার জোর দেখাও কেন? তোমাকে আমি ডরাই নাকি।
- দ্রুত – জোর কদম, চলরে চল।
জাল
- নকল- এ জাল দলিল আমি মানি না।
- মায়া, ছল- জুয়েল আইচের ইন্দ্রজালে কে না অভিভূত হয়?
- ফাঁদ – জেলেরা জাল দিয়ে মাছ ধরে।
- কপট – জাল পীরের খপ্পরে পড়ে তার সর্বনাশ হয়েছে।
- মারপাঁচ – তার বুদ্ধির জ্বালে আমি জড়িয়ে গেছি।
তাল
- মাত্রাজ্ঞান – লোকটির গলা ভালো কিন্তু তাল বোধ একদম নেই।
- ভারসাম্য – সংসারের ঝামেলায় আর তাল সামলাতে পারছি না।
- ফলবিশেষ – তালের পিঠা বেজায় মিঠা।
- পাল্লা দেয়া- খামাখা তালাতালি করো না, ওর সাথে তোমরা পারবে না।
- মার – তাড়াতাড়ি সরে পড়, নইলে পিঠের উপর কিন্তু তাল পড়বে?
তোলা
- ব্যবসায় গুটানো – ধার দেনা যেভাবে পড়ে গেছে, দোকানপাট না তুলে উপায় নেই।
- প্রহার – যখন-তখন ছেলের গায়ে হাত তোল না।
- মারা যাওয়া – অনেক বয়স হয়েছে লোকটির, যে কোন সময় তিনি পটল তুলতে পারেন।
- আলস্য প্রকাশ করা – ঘন ঘন হাই তুলছ কেন? ঘুমাতে যাবে নাকি?
- উথাপন করা- এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা সভায় তোলা হলো না কেন?
- সমাজভুক্ত করা- অনেক চেষ্টা করেও তাকে আমরা জাতে তুলতে পারিনি।
দল
- রাজনৈতিক দল –বাংলাদেশে বহু রাজনৈতিক দল রয়েছে।
- ফুলের অংশ- দল, ফুলের একটি অংশ।
- গোষ্ঠী, সম্প্রদায় – মুসলমানেরা দল বেঁধে ঈদগায় যায়।
- সমূহ – তরুণ দলের উপর দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
- জলজ তৃণ- অরক্ষিত জলাশয়গুলো দলে পরিপূর্ণ থাকে।
দণ্ড
- খাঁচার দুয়ার – পিঞ্জর দণ্ডে বসে টিয়া পাখি শিস দিচ্ছে।
- লাঠি – দণ্ডের আঘাতে তার মাথা দ্বিখণ্ডিত হয়েছে।
- ন্যায় – সৃষ্টিকর্তা তার ন্যায় দণ্ড আমাদের প্রত্যেকের উপর অর্পণ করেছেন।
- শাস্তি – এ কাজের জন্য তোমার কঠিন দণ্ড হবে।
- ২৪ মিনিট কাল সময়- তোমাকে তিলেক দণ্ড না দেখলে আমি অস্থির হয়ে যাই।
- একই শব্দের বিভিন্নার্থে প্রয়োগ
নাম
- আখ্যা – কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন।
- খ্যাতি – লেখাপড়া শিখে যখন বড় হবে, তখন তোমার অনেক নাম হবে।
- পরিচয় –আপনার নাম কি?
- শপথ – আল্লাহ্’র নামে বলছি, আপনাকে আমি সাহায্য করব।
- স্মরণ- ওই ‘নাম’ জপলে মুক্তি পেয়ে যাবে।
- শব্দ মাত্র – সে নামেই নেতা, কামে নয়।
নাক
- নাসিকা- নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য নাক একটি অপরিহার্য অঙ্গ।
- দ্রুত খাওয়া- নাকে মুখে না গুঁজলে ট্রেনটা নিশ্চিত ফেল করতাম।
- সাজা – কতবার যে নাকে খত দিয়েছ তার হিসাব আছে।
- নির্ভাবনা- নাকে তেল দিয়ে ঘুমালে চলবে না, সাবধান থাকতে হবে।
- শব্দ – সে ঘুমানো মাত্রই নাক ডাকে।
পাকা
- পরিপক্ব- পাকা জাম খেতে মিষ্টি।
- খাঁটি – পাকা সোনায় খাদ থাকে না।
- অভিজ্ঞ – তিনি একজন পাকা লোক।
- দক্ষ – বুলবুল একজন পাকা খেলোয়াড়।
- স্থায়ী – শাড়িটির রং পাকা।
- সাদা – কী ব্যাপার, তোমার সব চুল দেখি পেকে যাচ্ছে।
- নিপুণ – তোমার মা রান্না-বান্নায় খুবই পাকা।
- বখাটে – ছেলেটা অল্প দিনেই পেকে গেছে।
- ইটের তৈরি – শহরের অধিকাংশ লোক পাকা বাড়িতে বাস করেন।
পড়া
- পাল্লায় পড়া- বখাটে ছেলেদের পাল্লায় পড়ে ফেরদৌসের জীবন আজ অন্ধকার।
- পঠন – মা এক ঘণ্টা ধরে কুরআন পড়ছেন।
- চেষ্টা করা – উঠে পড়ে লাগ, পরীক্ষায় অবশ্যই ভালো করবে।
- নতিস্বীকার- তোমার পায়ে পড়ি, এবারের মতো আমাকে রেহাই দাও।
- খরচ পড়া – অলঙ্কারগুলো বানাতে অনেক খরচ পড়েছে।
- প্রয়োজন হওয়া – আমার অত গরজ পড়েনি যে তাকে ডাকতে হবে।
- আটকে যাওয়া – তার ফাঁদে যদি একবার পড়, তাহলে আর নিস্তার নেই।
পা
- তোষামোদ – এই আপনার পায়ে ধরে বলছি হুজুর, আপনার কথার অন্যথা হবে না।
- অঙ্গ বিশেষ – পা দুখানা হারিয়ে সে একেবারে পঙ্গু হয়েছে।
- অবঙ্গা করা – হাতের লক্ষীকে পায়ে ঠেলে দিও না।
- চাটুকার – সে তো চৌধুরী সাহেবের পা-চাটা কুকুর।
- অনুনয় করা – তোমার দুটি পয়ে পড়ি, কাজটি আমায় করে দাও।
ফল
- পরিণতি –যে অন্যায় তুমি করেছ, এর ফল শুভ হবে না।
- ফলমূল – কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল।
- পরীক্ষার ফলাফল – রীতিমত লেখাপড়া না করলে, পরীক্ষায় ভাল ফল করবে কি করে?
- উন্নতি – বনায়ন কর্মকান্ডে অংশ নাও, ফল দেবে।
- লাভ – অনুরোধে কোন ফল হবে না।
বুক
- গর্ব করা – কোন রকমের একটা পাস দিয়েই নাসির বুক ফুলিয়ে হাঁটছে।
- সাহস – বড় সাহেবের মুখের উপর সত্য কথাটা বলতে পারলে? বুকের পাটা আছে তোমার।
- মন শক্ত করা – বুকে সাহস নিয়ে জীবন সংগ্রামে এগিয়ে যাও।
- হৃদয় বিদীর্ণ হওয়া – তার বুক ফাটা আর্তনাদ আমি সহ্য করতে পারিনি।
- সাহায্য করা – ভাইকে দূরে রেখ না, তোমার বিপদে সেইতো বুক পেতে দিবে।
বড়
- ভালো – তোমার বাবা বড় ভালো লোক ছিলেন।
- ধনী – প্রামাণিক সাহেব হলেন এ তল্লাটের বড়লোক।
- জ্যেষ্ঠ – তিনি আমার চেয়ে বয়সে বড়।
- বিখ্যাত – হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী একজন বড় রাজনীতিবিদ ছিলেন।
- উদার – তার সঙ্গে পরিচয় হলেই তুমি জানতে পারবে, তিনি কত বড় মনের অধিকারী।
- বিশাল – পৃথিবীটা অনেক বড়।
- অসাধারণ – তিনি একজন বড় মাপের লোক।
- অত্যন্ত – বড় বিপদে পড়ে তোমার কাছে এসেছি।
- বিশেষ – সামনেই বড় দিনের ছুটি।
ভালো
- সুন্দর –শুধু রূপে ভালো হলে চলবে না, গুনে ভালো হওয়া চাই।
- শুভ – আমি তোমার ভালো চাই।
- সুস্থ – আমি ভালো আছি।
- সৎ – ভালো লোক হয়েও তিনি এ প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারলেন না।
- উত্তম আচরণ – তোমার আছ থেকে আমি ভালো ব্যবহার আশা করেছিলাম।
- সরল – জাকির সাহেব বেশ ভালো লোক।
ভার
- বিষাদ – মুখ ভার করে থেকো না, একটু হাস।
- ওজন – এটুকু ছেলের মাথায় এত ভার দিয়েছ কেন?
- গুরুত্ব – আজকাল সমাজপতি হওয়া সহজ নয়, ধারেও কাটা চাই ভারেও কাটা চাই।
- কঠিন – এ ঊর্ধ্বগতির বাজারে, চলা বড় ভার।
- সমূহ – অসংখ্য মেঘের ভারে সারাটা আকাশ আচ্ছন্ন।
- দায়িত্ব – আমার ওপর এ কাজের ভার দেয়া হোক।
ভুল
- অন্যায় – ভুল করেছ, শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে।
- ভ্রম – সব মানুষেরই কিছু কিছু ভুল থাকে।
- খারাপ – তোমার প্রতি আমার এতদিন ভুল ধারণা ছিল।
অযথার্থ – ভালো কলে প্রশ্ন পড়ে নাও, ভুল উত্তর দিও না। - বিস্মৃতি – সে আজ ভুলের অতল তলে ডুবে গেছে।
ভাব
- চিন্তা – কবিতা লেখার আগে কবিরা ভাবে মগ্ন হন।
- মর্মার্থ – কবিতাটির ভাবার্থ লেখ।
- সম্প্রীতি –এ ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যথেষ্ট ভাব রয়েছে।
- অভিপ্রায় – তোমার ভাবগতিক কিছুই বুঝতে পারছি না।
- কুমতলব – লোকটার প্রতি লক্ষ রেখ, ভাবগতিক সুবিধার মনে হচ্ছে না।
- উন্মাদনা – গান শুনতে শুনতে তোমার ভাব লাগল নাকি?
মোটা
- স্থূল – এমন মোটা বুদ্ধি নিয়ে এ কাজ করা সম্ভব নয়।
- উচ্চৈঃস্বর – চাকর-বাকরকে ডাকার সময় স্বর একটু মোটাই হয়।
- প্রচুর – মোটা অঙ্কের ধার নিয়েতো মেয়ে বিয়ে দিচ্ছ, শোধ করবে কেমনে?
- বড় আকৃতি – আমার মামা একজন মোটা লোক।
- সাধারণ – কৃষকের জন্য মোটা ভাত মোটা কাপড়ই যথেষ্ট।
- খারাপ – কাউকে মোটা কথা বলা ঠিক নয়।
- অমৃসণ – কৃষক বধূরা মোটা কাপড় পরিধান করে।
- একই শব্দের বিভিন্নার্থে প্রয়োগ