ঘাসফড়িং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর |প্রাণীর পরিচিতি | ঘাসফড়িং বোর্ড প্রশ্ন | HSC | ২য় অধ্যায় সাজেশন থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বশেষ বোর্ডে আশা গুরুত্বপূর্ণ ও কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি।
দিনাজপুর বোর্ড ২০২১
১। আরশােলাসহ সকল স্থলচল পতঙ্গ বায়ুমণ্ডল থেকে 02 গ্রহণ করে। আমাদের মতাে ফুসফুস না থাকলেও বিশেষ ধরনের সূক্ষ্মনালী ও তার শাখা-প্রশাখার মাধ্যমে এরা প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। এই নালিকাগুলাের কিছু অংশ ভিতরে বায়ুর অনুপস্থিতিতে চুপসে যায় না, তবে কিছু অংশ চুপসে যায় ।
ক. ওমাটিডিয়াম কী?
খ. অসম্পূর্ণ রূপান্তর বলতে কী বােঝ?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিশেষ ধরনের নালিকাগুলাের গঠন বর্ণনা করাে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি রেখাচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করাে।
ক) পুঞ্জাক্ষির ষড়ভূজাকার দর্শন ষড়ভূজাকার দর্শন একককে ঘাসফড়িংয়ের ওমাটিডিয়াম বলে ।
খ) শিশু-প্রাণী যখন দেখতে প্রায় পূর্ণাঙ্গ প্রাণীর মতো দেখায় এবং এদের বিকাশের সময় খুব সীমিত বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ঘটে তখন ‘তাকে অসম্পূর্ণ রূপান্তর বলে। প্রত্যেক নিম্ফ দশা দেখতে প্রায় পূর্ণাঙ্গ পতঙ্গের ক্ষুদ্র প্রতিরূপের মতো দেখায়, কিন্তু এগুলো ডানা ও জননাঙ্গবিহীন থাকে এবং স্পষ্ট বর্ণ পার্থক্য প্রদর্শন করে। অসম্পূর্ণ রূপান্তরের শিশু অবস্থায় প্রাণীকে নিম্ফ বলে। উদাহরণ- ঘাসফড়িং ও তেলাপোকার রূপান্তর।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকে উল্লিখত বিশেষ ধরনের নালিকা সমন্বিত অংশটির নাম ট্রাকিয়ালতন্ত্র । নিচে ট্রাকিয়াল তন্ত্রের গঠন বর্ণনা করা হলো-
১. স্পাইরাকল : এগুলো ট্রাকিয়াল তন্ত্রের উন্মুক্ত ছিদ্রপথ যা ঘাসফড়িং-এর দেহের উভয়পাশে মোট দশ জোড়া বিদ্যমান । প্রতিটি শ্বাসরস্ত্র ডিম্বাকার ছিদ্র বিশেষ যা পেরিট্রিম নামক কাইটিন নির্মিত বেড় দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকে। রন্দ্রগুলোর মুখে সূক্ষ্ম রোমযুক্ত ছাঁকনি যন্ত্র থাকে ।
ট্রাকিয়া : : এটি ঘাসফড়িং-এর প্রধান শ্বসন অঙ্গ যা শ্বাসরন্ধ্রের উন্মুক্ত ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠ; অ্যাট্রিয়াম থেকে উৎপন্ন হয়ে সারাদেহে জালিকাকারে বিস্তৃত হয়। এদের প্রাচীর তিন স্তরবিশিষ্ট।বাইরের এপিডার্মিস গঠিত ভিত্তি ঝিল্লি, মাঝখানে চাপা বহুভুজাকার কোষে গঠিত এপিথেলিয়াম এবং কিউটিকল নির্মিত ইন্টিমা। কিছুটা পরপর ইন্টিমা পুরু হয়ে আংটির মতো বলয় গঠন করে যেগুলোকে টিনিডিয়া বলে।
৩. ট্রাকিওল : ট্রাকিয়াগুলো অতি সূক্ষ্ম শাখায় বিভক্ত হয়ে সবশেষে একটি বহুভুজাকৃতির কোষে পরিসমাপ্তি ঘটায় যাকে ট্রাকিওল কোষ বলে। এ কোষ থেকে ট্রাকিওল নামক কতকগুলো সূক্ষ্ম এককোষী নালিকা, সৃষ্টি হয় যা ১ mu ব্যাসবিশিষ্ট, ইন্টিমা ও টিনিডিয়াবিহীন প্রাচীরবিশিষ্ট এবং টিস্যুরসে পূর্ণ থাকে।
৪. বায়ুথলি : ট্রাকিয়ার কিছু শাখা প্রসারিত হয়ে বড়, ইন্টিমাবিহীন ও পাতলা প্রাচীরযুক্ত বায়ুথলি গঠন করে।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি নিম্নে রেখাচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো-
চিত্র : আরশোলাসহ সকল পতঙ্গের শ্বসন পথের রেখাচিত্র
ঘাসফড়িং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর |প্রাণীর পরিচিতি | ঘাসফড়িং বোর্ড প্রশ্ন | HSC | ২য় অধ্যায় সাজেশন
রাজশাহী বোর্ড ২০২১
নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ্য কর-
চিত্র বই থেকে দেখে নাও
ক) ওমাটিড কী?
খ) পতংগ আর্থোপোডা পর্বের অন্তর্ভূক্ত কেন?
গ) চিত্র-১ এর প্রানীরা কিভাবে বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন করে- ব্যাখ্যা কর।
ঘ) উদ্দীপকের পরিবর্তনগুলো চিত্র-১ এবং চিত্র-২ এর মাধ্যমে বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়-আলোচনা কর।
ক) ঘাসফড়িং এর পুঞ্জাক্ষির ষড়ভূজাকার দর্শন একককে ওমাটিডিয়াম বলে।
খ) পতঙ্গ আর্থোপোডা পর্বের অন্তর্ভুক্ত কারণ আর্থোপোডা পর্বের সকল বৈশিষ্ট্য পতঙ্গদের মধ্যে বিদ্যমান।
১. সকল পতঙ্গের মতো ঘাসফড়িং-এর দেহ মস্তক, বক্ষ ও উদর-এ বিভক্ত।
২. এদের রক্ষদেশে সন্ধিযুক্ত তিনজোড়া পা এবং একজোড়া ডানা থাকে।
৩. এরা ট্রাকিয়া নামের শাখা-প্রশাখাযুক্ত বায়ু নালিকার মাধ্যমে শ্বাসক্রিয়া চালায়।
৪. এদের জটিল পুঞ্জাক্ষি এবং একজোড়া অ্যান্টেনা বিদ্যমান।
৫. অন্যান্য পতঙ্গের ন্যায় ঘাসফড়িং, মালপিজিয়ান নালিকার সাহায্যে রেচন ক্রিয়া সম্পন্ন করে।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
গ উদ্দীপকটি অসম্পূর্ণ রূপান্তর। যা ঘাসফড়িং এর ক্ষেত্রে দেখা যায়। নিম্নে ঘাসফড়িং এর রেচন প্রক্রিয়া বর্ণিত হলো-
ঘাসফড়িং এর রেচন পদ্ধতি ম্যালপিজিয়ান নালিকা দ্বারা সম্পাদিত হয়। এই নালিকার গোড়ার অংশ নিঃসরণ বা ক্ষরণের জন্য এবং প্রান্তীয় অংশ শোষণের জন্য অভিযোজিত। এ নালিকার বদ্ধ প্রান্তীয় অংশ দ্বারা হিমোসিলের হিযোলিম্ফ থেকে পটাসিয়াম ইউরেট, পানি ও CO2 শোষিত হয়। নালিকার অভ্যন্তরে এগুলো পরিবর্তিত হয়ে পটাসিয়াম বাই কার্বনেট ও ইউরিক অ্যাসিডে পরিণত হয়। নালিকার গোড়ার অংশ দ্বারা পটাসিয়াম বাই কার্বনেট ও কিছু পানি পুনঃশোষিত হয়ে হিমোলিম্ফে ফিরে আসে। রেচন বর্জ্যরূপে ইউরিক অ্যাসিড পানির সাথে পৌষ্টিকনালির গহ্বরে প্রবেশ করে। পশ্চাৎ অন্ত্রের মলাশয়ে অধিকাংশ পানি পুনঃশোষিত হয় এবং প্রায় শক্ত ইউরিক অ্যাসিড মলের সাথে দেহ হতে নিষ্কাশিত হয়।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপক চিত্র-১ অসম্পূর্ণ রূপান্তর ও চিত্র-২ সম্পূর্ণ রূপান্তর।
উদ্দীপক চিত্র-১ ও চিত্র-২ এর মধ্যে বিভিন্ন পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়-
অসম্পূর্ণ রূপান্তর | সম্পূর্ণ রূপান্তর |
১. যে রূপান্তরে একটি পতঙ্গ ডিম ফুটে বেরিয়ে কয়েকটি নিম্ফ দশা অতিক্রমের পর পূর্ণাঙ্গ পতঙ্গে পরিণত হয় তাকে অসম্পূর্ণ রূপান্তর বলে বলে। | ১. যে রূপান্তরে শিশু প্রাণী ও পূর্ণাঙ্গ প্রাণীর মধ্যে কোনো আঙ্গিক মিল থাকে না এবং ব্যাপক পরিবর্তনের মাধ্যমে শিশু প্রাণী পূর্ণাঙ্গ অবস্থা প্রাপ্ত হয়, সে ধরনের রূপান্তরকে সম্পূর্ণ রূপান্তর বলে। |
২. অসম্পূর্ণ রূপান্তরে শিশু অবস্থায় প্রাণীকে নিম্ফ বলে। | ২. সম্পূর্ণ রূপান্তরে শিশু অবস্থায় প্রাণীকে লার্ভা বলে। |
৩. নিম্ফ দশায় বার বার পরিবর্তন ঘটে। | ৩. লার্ভা দশায় একবার পরিবর্তন ঘটে। |
৪ নিম্ফ দশায় শিশু প্রাণীর সামান্য পরিবর্তন ঘটে। | লার্ভা দশায় শিশু প্রাণীর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। |
৫. ঘাসফড়িং ও তেলাপোকার রূপান্তর নিম্ফের মাধ্যমে হয়। | ৫ মৌমাছি ও প্রজাপতির রূপান্তর লার্ভার মাধ্যমে হয়। |
ঘাসফড়িং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর |প্রাণীর পরিচিতি | ঘাসফড়িং বোর্ড প্রশ্ন | HSC | ২য় অধ্যায় সাজেশন
বরিশাল বোর্ড ২০২১
ঘাসফড়িং এর দর্শন ইন্দ্রিয় হলাে পুঞ্জাক্ষি। এই অঙ্গের মাধ্যমে উক্ত প্রাণীটি উজ্জ্বল ও মৃদু আলােতে বস্তুর ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবিম্ব গঠন করে। আবার জন্ম-বৃত্তান্তের ক্ষেত্রে লক্ষ করা যায় যে, উহা বারবার খােলস মােচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ পতঙ্গে পরিণত হয়।
ক. হিমােলি কী?
খ. ওভিপজিটর বলতে কী বােঝ?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ইন্দ্রিয়ের ক্ষুদ্রতর এককের চিহ্নিত চিত্র অঙ্কন করাে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শেষ বাক্যটি বিশ্লেষণ করাে।
ক) আর্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণীদের হিমোসিল নামক দেহগহ্বরে অবস্থিত লসিকা মিশ্রিত রক্তই হলো হিমোলিম্ফ।
খ) স্ত্রী ঘাসফড়িংয়ের নবম খণ্ডকের স্টার্নাম প্রলম্বিত ও রূপান্তরিত হয়ে ডিম পাড়ার অঙ্গ ওভিপজিটর গঠন করে। স্ত্রী ঘাসফড়িং এর উদরের শেষ প্রান্তে ৮ম ও ৯ম খণ্ডে অঙ্কীয়ভাবে অবস্থিত একটি নলাকৃতির বিশেষ অঙ্গ হলো ওভিপজিটর। এটি স্ত্রী জনন ছিদ্রের মাধ্যমে বেরিয়ে আসা ডিম্বাণুগুলো সাময়িক সময়ের জন্য জমা করে রাখে এবং পরে দেহ থেকে আলাদা হয়। এটি মাটিতে বা গাছে ডিম্বাণু রাখার স্থান নির্মাণেও ব্যবহৃত হয় ।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকের ঘাসফড়িংয়ের দর্শন ইন্দ্রিয় এর ক্ষুদ্রতম একককে ওমাটিডিয়াম বলে। নিম্নে ওমাটিডিয়ামের চিহ্নিত চিত্র প্রদান করা হলো-
চিত্র : ঘাসফড়িং-এর দর্শন একক (ওমাটিডিয়াম)
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি দ্বারা ঘাসফড়িং-এর রূপান্তর প্রক্রিয়া বুঝানো হয়েছে ।ঘাসফড়িং-এর নিম্ফ থেকে পূর্ণাঙ্গ ঘাসফড়িং সৃষ্টি একটি হেমিমেটা বোলাস” বা অসম্পূর্ণ ধরনের রূপান্তর প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় খোলস মোচন প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। সদ্য পরিস্ফুটিত নিম্ফের কাইটিন নির্মিত বহিঃকঙ্কাল থাকে যা স্বচ্ছ ও গাঢ় হতে থাকে। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের এ নিম্ফ একটু বড় হলে বহিঃকঙ্কাল আঁটসাঁট হয়ে দেহবৃদ্ধি রহিত করে দেয় তখন দেহবৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখতে পুরনো বহিঃকঙ্কাল মোচন প্রক্রিয়ায় ত্যাগ। করতে হয়।
নিম্ফ তখন ২য় ধাপের নিম্ফে পরিণত হয়। পরবর্তীতে আরো ৪ বার খোলস মোচনের পর পূর্ণাঙ্গ ঘাসফড়িং-এ রূপান্তরিত হয়। দ্বিতীয় ধাপের নিম্ফে ক্ষুদ্রাকার ডানা প্যাড থেকে ডানা সৃষ্টির সূত্রপাত ঘটে। প্রতিবার খোলস মোচনের পর নিম্ফ দেখতে পূর্ণাঙ্গ ঘাসফড়িং-এর মতো দেখায়। দুটি খোলস পরিবর্তনের মধ্যবর্তী সময়কালকে ইনস্টার বলে। শেষবার খোলস মোচনের মাধ্যমে সৃষ্ট দশাকে ইমাগো বলা হয়। পাখা ও জননাঙ্গের গঠন সম্পূর্ণ হলে ইমাগো দশাটি পরিণত ঘাসফড়িং হয়ে উঠে। অতএব দেখা যায় যে, নিম্ফ থেকে পূর্ণাঙ্গ ঘাসফড়িং-এ রূপান্তরের ক্ষেত্রে খোলস মোচন একটি অপরিহার্য প্রক্রিয়া ।
ঘাসফড়িং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর |প্রাণীর পরিচিতি | ঘাসফড়িং বোর্ড প্রশ্ন | HSC | ২য় অধ্যায় সাজেশন
সিলেট বোর্ড ও রাজশাহী বোর্ড ২০১৯
নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলাের উত্তর দাও:
ক) হিমোসিল কাকে বলে?
খ) মুক্ত সংবহন বলতে কি বুঝ?
গ) উদ্দীপকের প্রাণীটির জীবনে উল্লিখিত দশার ভূমিকা উল্লেখ কর।
ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত অঙ্গটি অনন্য কেন ? বিশ্লেষণ কর ।
ক) রক্তপূর্ণ দেহগহ্বরকে হিমোসিল বলে।
খ) যে সংবহনতন্ত্রে রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে নালিকা পথে বের হয়ে পরে উন্মুক্ত দেহ গহ্বরে প্রবেশ করে এবং দেহ গহ্বর থেকে পুনরায় নালিকা পথে হৃৎপিন্ডে ফিরে আসে তা মুক্ত রক্ত সংবহন। অর্থাৎ রক্ত সর্বদা রক্তবাহিকার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয় না। চিংড়ি, পতঙ্গ, মলাস্কা প্রভৃতি প্রাণীর দেহে এ ধরনের সংবহন দেখা যায়।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকের উল্লিখিত প্রাণীটি হলো ঘাসফড়িং। ঘাসফড়িং এর নিম্ফ দশার ভূমিকা নিচে উল্লেখ করা হলো-
ডিম ফুটে যে তরুণ ঘাসফড়িং বেরিয়ে আসে তাকে নিম্ফ বলে। বহির্গঠনের দিক থেকে নিম্ফ দেখতে প্রায় এক রকম, অন্ততঃ মুখোপাঙ্গ, সরলাক্ষি ও পুঞ্জাক্ষি, অ্যান্টেনা, পায়ু প্রভৃতি। অনুরূপভাবে, নিম্ফে এর জীবনধারণ, খাদ্যাভ্যাস, খাদ্য ও বসতিও এক রকম। সদ্য পরিস্ফুটিত নিম্ফ এর কাইটিন নির্মিত বহিঃকঙ্কাল থাকে স্বচ্ছ যা পরে ক্রমশ গাঢ় হতে থাকে। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের এ নিম্ফ একটু বড় হলে বহিঃকংকাল আঁটসাঁট হয়ে দেহবৃদ্ধি রহিত করে দেয় তখন দেহ বৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখতে পুরনো বহিঃকংকাল মোচন প্রক্রিয়ায় ত্যাগ করতে হয়। নিম্ফ তখন ২য় ধাপের নিম্ফে পরিণত হয়। পরবর্তীতে আরও ৩ বার খোলস মোচনের পর পূর্ণাঙ্গ ঘাসফড়িং-এ রূপান্তরিত হয়। দ্বিতীয় ধাপের নিম্ফে ক্ষুদ্রাকায় ডানা প্যাড থেকে ডানা সৃষ্টির সূত্রপাত ঘটে। প্রতিবার খোলস মোচনের পর নিম্ফ দেখতে পূর্ণাঙ্গ ঘাসফড়িং এর মতো দেখায়। তাছাড়া, এদের পরিস্ফুটনে কোনো বিশ্রাম দশাও নেই। পঞ্চম বার .খোলস মোচনের মাধ্যমে নিম্ফ পরিণত ঘাসফড়িং হয়ে ওঠে। অতএব বলা যায় যে, ঘাসফড়িং-এর জীবনে নিম্ফ দশা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকের উল্লিখিত অঙ্গটি হলো ঘাসফড়িংয়ের পুঞ্জাক্ষি। পুঞ্জাক্ষি হলো ঘাসফড়িংয়ের দর্শন অঙ্গ। গঠন ও ভিন্ন দর্শন কৌশলের জন্য এ অঙ্গটি অনন্য। নিচে এর কারণ বিশ্লেষণ করা হলো-
ঘাসফড়িং-এর মাথার পৃষ্ঠভাগের উভয় পাশে অবস্থিত বড় বৃন্তহীন,বৃক্কাকার, উত্তল কালো অংশকে বলা হয় পুঞ্জাক্ষি। প্রতিটি পুঞ্জাক্ষি প্রায় দু’হাজার ষড়ভূজাকার ওমাটিডিয়া নিয়ে গঠিত। প্রতিটি ওমাটিডিয়াম একেকটি দর্শন একক হিসবে কাজ করে থাকে। পুঞ্জাক্ষিতে অবস্থিত প্রতিটি ওমাটিডিয়ামের গঠন ভিন্ন ধরনের এবং তাদের কার্যপদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন।
ওমাটিডিয়ামে অবস্থিত কর্ণিয়া, কর্ণিয়াজেন কোষ, ক্রিস্টালাইন কোণ কোষ, আইরিশ, রঞ্জক আবরণ, রেটিনুলার কোষ, র্যাবডোম, ভিত্তি পর্দা ও স্নায়ুতন্তুর সমন্বিত কার্যাবলির মাধ্যমে ঘাসফড়িং তার দর্শন কার্য সম্পাদন করে থাকে। প্রতিবিম্ব সৃষ্টির মাধ্যমে বস্তুকে অবলোকন করলেও দিনের উজ্জ্বল আলো ও দিনের শেষে মৃদু আলোতে এই দুই সময়েই এদের সৃষ্টিশক্তি কার্যকর থাকে। মৃদু আলোয় এরা সুপারপজিশন এবং উজ্জ্বল আলোয় অ্যাপোজিশন প্রতিবিম্ব গঠনের মাধ্যমে ঘাসফড়িং দেখতে পায়। তাদের এরূপ ভিন্ন দর্শনকৌশল এবং দর্শন অঙ্গের ব্যতিক্রমধর্মী গঠনের জন্যই অঙ্গটি অনন্য।
ঘাসফড়িং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর |প্রাণীর পরিচিতি | ঘাসফড়িং বোর্ড প্রশ্ন | HSC | ২য় অধ্যায় সাজেশন
যশোর বোর্ড ২০২১
সীমা পুকুর পাড়ে ঝোপঝাড়ে বিশেষ একটি প্রাণী লাফালাফি করতে দেখলাে যা দেখতে সুবজ বর্ণের, সন্ধিপদী ও ডানাযুক্ত । আলাের তারতম্যের উপর ভিত্তি করে এর দর্শন কৌশল নিয়ন্ত্রিত হয়।
ক. সিলােম কী?
খ. মুখােপাঙ্গ বলতে কী বােঝ?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাণীটির শ্বসনতন্ত্রের বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকের শেষােক্ত উক্তিটি বিশ্লেষণ করাে।
ক) ভ্রূণীয় মেসোডার্ম থেকে উদ্ভূত ভিসেরাল পেরিটোনিয়াম পর্দা দ্বারা আবৃত দেহ গহ্বরই হলো সিলোম।
খ) মুখের চারদিকে নড়মক্ষম, সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গগুলোকে একত্রে মুখোপাঙ্গ বলে। ঘাসফড়িং-এর মুখোপাঙ্গ মস্তকের অঙ্কীয়দেশে অবস্থিত। কচিপাতা বা কাণ্ড চর্বনে ব্যবহৃত হয় বলে ঘাসফড়িং-এর মুখোপাঙ্গকে চর্বন-উপযোগী বা ম্যান্ডিবুলেট মুখোপাঙ্গ বলে। পাঁচটি অংশের সমন্বয়ে মুখোপাঙ্গ গঠিত— ল্যাব্রাম, ম্যাণ্ডিবল, ম্যাক্সিলা, ল্যাবিয়াম ও হাইপোফ্যারিংক্স।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকে উল্লেখিত প্রাণীটি হলো ঘাসফড়িং। ঘাসফড়িং এর শ্বসনতন্ত্রের নাম ট্রাকিয়াল তন্ত্র । নিম্নে ট্রাকিয়াল তন্ত্রের বর্ণনা প্রদান করা হলো-
স্থলজ অন্যান্য পতঙ্গের ন্যায় ঘাসফড়িং-এর শ্বসন প্রক্রিয়া কতকগুলো শ্বাসনালি বা ট্রাকিয়া এবং সূক্ষ্ম শ্বাসনালিকা বা ট্রাফিওলের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এজন্য ঘাসফড়িং-এর শ্বসনতন্ত্রকে ট্রাকিয়ালতন্ত্র বলা হয় ট্রাকিয়ালতন্ত্র শ্বাসরন্ধ্র, শ্বাসনালি, শ্বাসনালিকা এবং বায়ুথলি নিয়ে গঠিত।
১. শ্বাসরন্ধ্র : ঘাসফড়িং-এর বক্ষদেশে দুইজোড়া এবং উদর অঞ্চলে আটজোড়া অর্থাৎ মোট ১০ জোড়া শ্বাসরন্দ্র অনুদৈর্ঘ্যভাবে অবস্থান করে। রন্দ্রগুলোর মুখে সূক্ষ্ম রোমযুক্ত ছাঁকনি থাকায় ধুলাবালি, জীবাণু, পানি ইত্যাদি ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। শ্বাসরন্ধ্রগুলো পেশি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কপাটিকার সক্রিয়তায় বদ্ধ ও উন্মুক্ত হয়।
২. শ্বাসনালি বা ট্রাকিয়া : শ্বাসরন্দ্রগুলো দেহমধ্যস্থ অ্যাট্রিয়াম গহ্বর পথে যে স্থিতিস্থাপক, সূক্ষ্মনালিতে উন্মুক্ত হয় তাদের ট্রাকিয়া বলে। ট্রাকিয়াগুলো পরবর্তীতে শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে সমগ্র দেহে জালিকাকারে বিন্যস্ত হয়। শাখা-প্রশাখা সৃষ্টিকারী ট্রাকিয়াকে ট্রাকিয়াল কাণ্ড বলা হয়ে থাকে। ঘাসফড়িং-এর দেহে তিন জোড়া ট্রাকিয়াল কাণ্ড থাকে। এরা পৃষ্ঠীয় অঙ্কীয় ও পার্শ্বীয়ভাবে অবস্থান করে থাকে। ট্রাক্রিয়াগুলো উজ্জ্বল এবং দেহের প্রাচীর পুরু ও পেশিবহুল।
৩. ট্রাকিওল : ট্রাকিয়া থেকে সৃষ্ট অতিসূক্ষ্ম শ্বাসনালিকাকে ট্রাকিওল বলে। ট্রাকিওলের বর্ণ অস্বচ্ছ, প্রাচীর পাতলা এবং অন্তঃপ্রাচীর টিনিডিয়াবিহীন। ট্রাকিওল কোষগুলো তরলে পূর্ণ থাকে। এ তরলের মাধ্যমে দেহকোষে গ্যাসীয় আদান-প্রদান ঘটে।
৪. রায়ুথলি : ঘাসফড়িং-এর কতকগুলো ট্রাকিয়া প্রসারিত হয়ে পাতলা প্রাচীর বিশিষ্ট বায়ুথলি সৃষ্টি করে। বায়ুথলিতে বাতাস সঞ্চিত থাকে, যা শ্বসনের সময় বায়ু প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকের ঘাসফড়িং এর দর্শন কৌশলের কথা বলা হয়েছে। পতঙ্গের দর্শন অঙ্গটি আলোর ভিন্নতার উপর ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবিম্ব সৃষ্টি করতে সক্ষম— এর যথার্থতা নিচে যাচাই করা হলো-
ঘাসফড়িং-এর দর্শন অঙ্গটি দিনের উজ্জ্বল আলো ও দিনের শেষে মৃদু আলোতে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের প্রতিবিম্ব সৃষ্টি করে এদের দৃষ্টিশক্তি কার্যকর করে। মৃদু আলোয় সুপার পজিশন এবং উজ্জ্বল আলোয় অ্যাপোজিশন প্রতিবিম্ব গঠন করে।
সুপার পজিশন পদ্ধতিতে মৃদু আলোয় রেটিনাল সিথের রঞ্জক কণিকা সংকুচিত হয়ে কর্নিয়ার দিকে ঘনীভূত হয় এবং ক্রিস্টালাইন কোণের অধিকাংশ অনাবৃত হয়ে পড়ে। উলম্ব আলোকরশ্মি একটি ওমাটিডিয়ামের কর্নিয়ার ভেতর প্রবেশ করে তার র্যাবডোমে পৌছালেও তির্যক আলোকরশ্মি একটি ওমাটিডিয়ামের ক্রিস্টালাইন কোণের অনাবৃত অংশের মধ্য দিয়ে পাশের ওমাটিডিয়ামের র্যাবডোমে পৌঁছায়।
অর্থাৎ একটি ওমাটিডিয়াম তার নিজস্ব কর্নিয়া থেকে আগত আলোক রশ্মি ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ওমাটিডিয়ামের কর্নিয়া থেকে আগত রশ্মিও পেয়ে থাকে। পুঞ্জাক্ষির উপর কোনো বস্তুর বিভিন্ন অংশের প্রতিবিম্বগুলো একে অপরের উপর পড়ায় সম্পূর্ণ বস্তুটির অস্পষ্ট প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে অ্যাপজিশন বা মোজাইক পদ্ধতিতে উজ্জ্বল আলোয় প্রতিটি ওমাটিডিয়াম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। উজ্জ্বল আলোতে রেটিনাল সিথের কোষের রঞ্জকপদার্থ ক্রিস্টালাইন কোণের নিচের দিকে এমনভাবে ছড়িয়ে যায় যাতে তার চারদিকে একটি কালো পর্দার সৃষ্টি হয় ।
ফলে একটি ওমাটিডিয়াম কেবলমাত্র নিজস্ব কর্নিয়া থেকে আগত লম্বভাবে প্রতিফলিত রশ্মিই গ্রহণ করতে পারে। তির্যকভাবে আগত পার্শ্ববর্তী ওমাটিডিয়ামের আলোকরশ্মি আইরিসের রঞ্জক পদার্থে শোষিত হয়। এ অবস্থায় একটি ওমাটিডিয়াম দিয়ে গঠিত প্রতিবিম্ব অনেকটা মোজাইক করা মেঝের পাথরের মতো মনে হয় বলে একে মোজাইক প্রতিবিম্ব বলা হয় ।
সুতরাং আলোর তীব্রতার পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘাসফড়িং-এর দর্শন কৌশলও পরিবর্তন হয়।
ঘাসফড়িং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর |প্রাণীর পরিচিতি | ঘাসফড়িং বোর্ড প্রশ্ন | HSC | ২য় অধ্যায় সাজেশন
কুমিল্লা বোর্ড ২০২১
পতঙ্গের সকল মৌ বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় এবং সহজলভ্য হওয়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জীববিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা নমুনা প্রাণী হিসেবে ঘাসফড়িং সম্পর্কে অধ্যয়ণ করে থাকে। ওমাটিডিয়াম তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানেন্দ্রীয় একক। এদের শ্বসনতন্ত্র বেশ উন্নত হওয়ায় রক্তের অক্সিজেন বহনে অক্ষমতার ঘাটতি পূরণ হয়েছে।
ক. রূপান্তর কী?
খ. টেগমিনা বলতে কী বােঝ?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ এককের লম্বচ্ছেদের চিহ্নিত চিত্র অঙ্কন করাে।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ লাইনটির যথার্থতা বিশ্লেষণ করাে।
ক) পতঙ্গের ভ্রূণ যখন কয়েকটি ধারাবাহিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ দশা প্রাপ্ত হয় তখন এ ধরনের ভ্রুণোত্তর পরিস্ফুটনই হচ্ছে রূপান্তর।
খ) ঘাসফড়িং এর সামনের ডানা দুটি বেশ শক্ত, ছোট, সরু এবং কখনও উড়তে সাহায্য করে না। পিছনের ডানা দুটিকে ঢেকে রাখা এদের কাজ। এই দুটি ডানাকে বলা হয় টেগমিনা। টেগমিনা না থাকলে অপর দুটি ডানা বাহিরের কোনো আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এই টেগমিনা প্রতিরোধী অঙ্গ হিসেবে কাজ করে ।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকের গুরুত্বপূর্ণ এককটি হলো পুঞ্জাক্ষীর একক ওমাটিডিয়াম। নিচে ওমাটিডিয়ামের লম্বচ্ছেদের চিহ্নিত চিত্র অংকন করা হলো-
চিত্র : ঘাসফড়িং-এর দর্শন একক (ওমাটিডিয়াম)
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
ঘ ঘাসফড়িং এর (ট্রাকিয়ালতন্ত্র) শ্বসনতন্ত্রের উন্নত বৈশিষ্ট্যের বিষয়ের প্রতি উদ্দীপকে নির্দেশ করা হয়েছে। ঘাসফড়িং-এর ট্রাকিয়া ও তার শাখা-প্রশাখা নিয়ে গঠিত তন্ত্রকে শ্বসন তন্ত্র (ট্রাকিয়ালতন্ত্র) বলে। উন্নত প্রাণীতে রক্তের লোহিত কণিকা O2 বহন করে কোষে কোষে পৌঁছে দেয়। কিন্তু ঘাসফড়িং-এর ক্ষেত্রে এদের হিমোলিম্ফে (রক্তে) কোনো লোহিত কণিকা না থাকায় রক্ত O2 পরিবহনে অক্ষম। রক্তের এই অক্ষমতার ঘাটতি পূরণ করেছে ঘাসফড়িং এর উন্নত বৈশিষ্ট্যের শ্বসনতন্ত্র। ঘাসফড়িং-এর শ্বসনতন্ত্র সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম নালিকা বা ট্রাকিওলের সাহায্যে দেহের প্রতিটি কোষের সাথে সরাসরি সংযোগ রক্ষা করেছে। আর এই জালের মতো বিন্যাসই O2 শ্বাসরন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করার পর রক্ত ছাড়াই সরাসরি কোষে কোষে পৌছে দেয়। ফলে রক্তের O2 পরিবহনে অক্ষমতার ঘাটতি পূরণ হয়েছে। অতএব পরিশেষে বলা যায় যে, শ্বসনতন্ত্রের উন্নত ও বিশেষ গঠনই এর জন্য দায়ী। তাই উদ্দীপকের শেষ লাইনটি যথার্থ হয়েছে।
ঘাসফড়িং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর |প্রাণীর পরিচিতি | ঘাসফড়িং বোর্ড প্রশ্ন | HSC | ২য় অধ্যায় সাজেশন
চট্টগ্রাম বোর্ড ২০২১
জাহিন তার পড়ার টেবিলে সন্ধ্যাবেলা একটি পতঙ্গ দেখতে পায় যা সন্ধিযুক্ত পায়ের সাহায্যে লাফ দিতে পারে এবং ডানার সাহায্যে উড়তেও পারে।
ক. ওমাটিডিয়াম কী?
খ. হিমোলিম্ফ কী? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাণীটির দর্শন এককের লম্বচ্ছেদের চিহ্নিত চিত্র দাও।
ঘ. উদ্দীপকের প্রাণীটির রক্ত সংবহনতন্ত্রের সাথে তোমার রক্ত সংবহনতন্ত্রের পার্থক্য বিশ্লেষণ কর।
ক) পুঞ্জাক্ষির গঠন ও কার্যের এককই হলো ওমাটিডিয়াম।
খ) বর্ণহীন প্লাজমা এবং এর মধ্যে ভাসমান অসংখ্য বর্ণহীন রক্তকণিকা নিয়ে ঘাসফড়িং এর হিমোলিম্ফ গঠিত। হিমোগ্লোবিন বা অন্য কোনো ধরনের শ্বাসরঞ্জক না থাকায় এর হিমোলিম্ফ বর্ণহীন, শ্বসনে তেমন কোনো ভূমিকা রাখে না। খাদ্যসার, রেচনদ্রব্য, হরমোন ইত্যাদি পরিবহনে, অ্যামিনো এসিড, কার্বোহাইড্রেট প্রভৃতি সঞ্চিত রাখা, জীবাণু ধ্বংস করা, তঞ্চনে সাহায্য করা এবং ডানায় সঞ্চালন ও খোলস মোচনে সহায়তা করা হিমোলিম্ফের কাজ।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাণীটি হলো ঘাসফড়িং। প্রাণীটির দর্শন একক ওমাটিডিয়াম। নিম্নে ওমাটিডিয়ামের লম্বচ্ছেদের চিহ্নিত চিত্র অংকন করা হলো-
চিত্র : ঘাসফড়িং-এর দর্শন একক (ওমাটিডিয়াম)
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাণীটি হলো ঘাসফড়িং যা Arthropoda পর্বের প্রাণী। এর রক্তসংবহন মুক্ত সংবহন অপরদিকে আমাদের রক্তসংবহন প্রক্রিয়া বন্ধ ধরনের। নিচে ঘাসফড়িং-এর রক্তসংবহন তন্ত্রের সাথে মানুষের রক্ত সংবহনতন্ত্রের পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হলো-
মানুষের রক্ত সংবহনতন্ত্রে রক্ত হৃদযন্ত্র ও রক্তবাহিকার অভ্যন্তরে অবস্থান করে। অপরদিকে ঘাসফড়িং-এর রক্ত সংবহন উন্মুক্ত যা হৃদযন্ত্র, রক্তবাহিকা ও বিভিন্ন সাইনাসের মাধ্যমে রক্ত সংবহন হয়। মানুষের রক্ত দেহগহ্বরে প্রবেশ করে না। দেহগহ্বর প্রকৃত সিলোম যুক্ত। অপরদিকে ঘাসফড়িং-এর রক্ত দেহগহ্বরে প্রবেশ করে এজন্য একে হিমোসিল বলে। মানুষের রক্ত কোষকলায় সরাসরি সংস্পর্শে আসে না। কলারসের মাধ্যমে পুষ্টি পদার্থ ও গ্যাসের বিনিময় ঘটে, অপরদিকে ঘাসফড়িং-এর রক্ত সরাসরি কোষকলার সংস্পর্শে এসে পুষ্টিপদার্থ ও গ্যাসের বিনিময় ঘটায়। মানুষের রক্ত সংবহনতন্ত্র হৃদযন্ত্র, শিরা, ধমনি ও কৈশিক জালিকা সমন্বয়ে গঠিত, অপরদিকে ঘাসফড়িং-এর রক্ত সংবহনতন্ত্র হৃদযন্ত্র, সংক্ষিপ্ত রক্তনালি ও সাইনাস নিয়ে গঠিত।
ঘাসফড়িং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর |প্রাণীর পরিচিতি | ঘাসফড়িং বোর্ড প্রশ্ন | HSC | ২য় অধ্যায় সাজেশন
সিলেট বোর্ড ২০২১
পাঠ্যসূচিতে পঙ্গপাল খ্যাত প্রাণীটির চর্বণ উপযোগী মুখোপাঙ্গ ও তার দর্শন কৌশলও অনন্য।
ক. স্পার্মোথিকা কী?
খ. হিমোলিম্ফের উপাদান কী?
গ. উদ্দীপকের প্রাণীটির খাদ্য গ্রহণ উপাঙ্গের চিহ্নিত চিত্র দাও।
ঘ. উদ্দীপকের প্রাণীটির দর্শন কৌশল অনন্য কেন? বিশ্লেষণ কর।
ক) স্ত্রী ঘাসফড়িং-এর যোনির নিচের দিকে একটি কুণ্ডলিকৃত অংশ থাকে যেখানে সঙ্গমে গৃহীত শুক্রাণু সাময়িকভাবে জমা থাকে তাকে স্পার্মোথিকা বলে।
খ) ঘাসফড়িং-এর রক্ত বর্ণহীন। রক্ত হিমোসিল নামক দেহগহ্বরে লসিকার সাথে মিশ্রিত অবস্থায় থাকে বলে ঘাসফড়িংয়ের রক্তকে হিমোলিম্ফ বলে। হিমোলিম্ফের উপাদান রক্তরস, এটি তরল। এতে ৭০% পানি থাকে। এছাড়াও খনিজ লবণ, খাদ্যসার, রেচন বর্জ্য দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে। এতে হিমোসাইট নামক শ্বেতকণিকা থাকে ।
ঘ
গ নং প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকের প্রাণীটির খাদ্য গ্রহণে উপাঙ্গের নাম মুখোপাঙ্গ। মুখোপাঙ্গের চিহ্নিত চিত্র নিম্নরূপ-
চিত্র : ঘাসফড়িং-এর মুখোপাঙ্গের বিভিন্ন অংশ
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকের প্রাণীটি ভিন্ন ভিন্ন আলোতে ভিন্ন ভিন্ন দর্শন কৌশল প্রদর্শন করে। দর্শন কৌশল সুপার পজিশন ও অ্যাপোজিশন নামে পরিচিত। দর্শন কৌশল নিম্নরূপ-
১. সুপার পজিশন প্রতিবিম্ব : মৃদু আলোয় রেটিনাল সিথের রঞ্জক কণিকা সংকুচিত হয়ে কর্নিয়ার দিকে ঘনীভূত হয় এবং ক্রিস্টালাইন কোণের অধিকাংশ অনাবৃত হয়ে পড়ে। উলম্ব আলোকরশ্মি একটি ওমাটিডিয়ামের কর্নিয়ার ভেতর প্রবেশ করে তার র্যাবডোমে পৌছালেও তির্যক আলোকরশ্মি একটি ওমাটিডিয়ামের ক্রিস্টালাইন কোণের অনাবৃত অংশের মধ্য দিয়ে পাশের ওমাটিডিয়ামের র্যাবডোমে পৌঁছায়। অর্থাৎ একটি ওমাটিডিয়াম তার নিজস্ব কর্নিয়া থেকে আগত আলোক রশ্মি ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ওমাটিডিয়ামের কর্নিয়া থেকে আগত রশ্মিও পেয়ে থাকে। পুঞ্জাক্ষির উপর কোনো বস্তুর বিভিন্ন অংশের প্রতিবিম্বগুলো একে অপরের উপর পড়ায় সম্পূর্ণ বস্তুটির অস্পষ্ট প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয় ।
২. অ্যাপজিশন বা মোজাইক প্রতিবিম্ব : উজ্জ্বল আলোয় প্রতিটি ওমাটিডিয়াম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। উজ্জ্বল আলোতে রেটিনাল সিথের কোষের রঞ্জক পদার্থ ক্রিস্টালাইন কোণের নিচের দিকে এমনভাবে ছড়িয়ে যায় যাতে তার চারদিকে একটি কালো পর্দার সৃষ্টি হয়। ফলে একটি ওমাটিডিয়াম কেবলমাত্র নিজস্ব লম্বভাবে প্রতিফলিত রশ্মিই গ্রহণ করতে পারে। তির্যকভাবে আগত পার্শ্ববর্তী ওমাটিডিয়ামের আলোকরশ্মি আইরিসের রঞ্জক পদার্থে শোষিত হয়। এ অবস্থায় একটি ওমাটিডিয়াম দিয়ে গঠিত প্রতিবিম্ব অনেকটা মোজাইক করা মেঝের পাথরের মতো মনে হয় বলে একে মোজাইক প্রতিবিম্ব বলা হয়।
ঘাসফড়িং ভিন্ন ভিন্ন আলোতে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবিম্ব গঠন করার কারণে এর দর্শন অঙ্গটি অনন্য।
ঘাসফড়িং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর |প্রাণীর পরিচিতি | ঘাসফড়িং বোর্ড প্রশ্ন | HSC | ২য় অধ্যায় সাজেশন
ময়মনসিংহ বোর্ড ২০২১
সবুজ ধানক্ষেতে কিছু বাদামি বর্ণের তৃণভোজি পতঙ্গ দেখা যায়। পতঙ্গটির দর্শন-অঙ্গ অনেকগুলো দর্শন একক নিয়ে গঠিত। এ পতঙ্গটি মৃদু ও উজ্জ্বল আলোতে ভিন্ন ধরনের প্রতিবিম্ব গঠন করে।
ক. ট্রাকিয়া কী?
খ. মুক্ত রক্ত সংবহন বলতে কী বুঝ?
গ. উদ্দীপকের প্রাণীটির দর্শন এককের লম্বচ্ছেদের চিহ্নিত চিত্র অঙ্কন কর।
ঘ. উদ্দীপকের শেষোক্ত উক্তিটি বিশ্লেষণ কর ।
ক) শ্বাসরন্দ্রগুলো দেহমধ্যস্থ অ্যাট্রিয়াম গহ্বরপথে যে স্থিতিস্থাপক, সূক্ষ্মনালিতে উন্মুক্ত হয় তাই ট্রাকিয়া।
খ) যে সংবহনতন্ত্রে রক্ত হৃৎপিণ্ড থেকে নালিকা পথে বের হয়ে পরে উন্মুক্ত দেহ গহ্বরে প্রবেশ করে এবং দেহ গহ্বর থেকে পুনরায় নালিকা পথে হূৎপিন্ডে ফিরে আসে তা মুক্ত রক্ত সংবহন। অর্থাৎ রক্ত সর্বদা রক্তবাহিকার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয় না। চিংড়ি, পতঙ্গ, মলাস্কা প্রভৃতি প্রাণীর দেহে এ ধরনের সংবহন দেখা যায়।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকের প্রাণীটি ঘাসফড়িং। ঘাসফড়িং এর দর্শন একককে ওমাটিডিয়াম বলে। ওমাটিডিয়ামের লম্বচ্ছেদের চিহ্নিত চিত্র নিম্নরূপ-
চিত্র : ঘাসফড়িং-এর দর্শন একক (ওমাটিডিয়াম)
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
ঘ )উদ্দীপকের ঘাসফড়িং মৃদু আলোতে সুপারপজিশন ও উজ্জ্বল আলোতে অ্যাপোজিশন প্রতিবিম্ব গঠন করে দর্শন সম্পন্ন করে।
১. সুপার পজিশন প্রতিবিম্ব : মৃদু আলোয় রেটিনাল সিথের রঞ্জক কণিকা সংকুচিত হয়ে কর্নিয়ার দিকে ঘনীভূত হয় এবং ক্রিস্টালাইন কোণের অধিকাংশ অনাবৃত হয়ে পড়ে। উলম্ব আলোকরশ্মি একটি ওমাটিডিয়ামের কর্নিয়ার ভেতর প্রবেশ করে তার র্যাবডোমে পৌছালেও তির্যক আলোকরশ্মি একটি ওমাটিডিয়ামের ক্রিস্টালাইন কোণের অনাবৃত অংশের মধ্য দিয়ে পাশের ওমাটিডিয়ামের র্যাবডোমে পৌছায়। অর্থাৎ একটি ওমাটিডিয়াম তার নিজস্ব কর্নিয়া থেকে আগত আলোক রশ্মি ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ওমাটিডিয়ামের কর্নিয়া থেকে আগত রশ্মিও পেয়ে থাকে। পুঞ্জাক্ষির উপর কোনো বস্তুর বিভিন্ন অংশের প্রতিবিম্বগুলো একে অপরের উপর পড়ায় সম্পূর্ণ বস্তুটির অস্পষ্ট প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয় ।
২. অ্যাপজিশন বা মোজাইক প্রতিবিম্ব : উজ্জ্বল আলোয় প্রতিটি ওমাটিডিয়াম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। উজ্জ্বল আলোতে রেটিনাল সিথের কোষের রঞ্জকপদার্থ ক্রিস্টালাইন কোণের নিচের দিকে এমনভাবে ছড়িয়ে যায় যাতে তার চারদিকে একটি কালো পর্দার সৃষ্টি হয়। ফলে একটি ওমাটিডিয়াম কেবলমাত্র নিজস্ব কর্নিয়া থেকে আগত লম্বভাবে প্রতিফলিত রশ্মিই গ্রহণ করতে পারে। তির্যকভাবে আগত পার্শ্ববর্তী ওমাটিডিয়ামের আলোকরশ্মি আইরিসের রঞ্জক পদার্থে শোষিত হয়। এ অবস্থায় একটি ওমাটিডিয়াম দিয়ে গঠিত প্রতিবিম্ব অনেকটা মোজাইক করা মেঝের পাথরের মতো মনে হয় বলে একে মোজাইক প্রতিবিম্ব বলা হয় । ঘাসফড়িং ভিন্ন ভিন্ন আলোতে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবিম্ব গঠন করার কারণে এর দর্শন অঙ্গটি অনন্য।
এই ঘাসফড়িং সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর |প্রাণীর পরিচিতি | ঘাসফড়িং বোর্ড প্রশ্ন | HSC | ২য় অধ্যায় সাজেশন ছাড়াও আরো জানতে ক্লিকঃ