বই পড়া প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

বই পড়া প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

বই পড়া প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর এর বিস্তারিত নিচে দেওয়া হল যা তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হবে। তাই এই আর্টিকেলটি অনুসরণ করো এবং অনুশীলন অব্যাহত রাখো। তোমাদের জন্য শুভকামনা।

এখানে বই পড়া প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

বই পড়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

রাকিব স্যার ক্লাসে পাঠদান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়তে উৎসাহিত করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল, বিজ্ঞানমনস্ক, দেশপ্রেমিক ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ার এবং আবৃত্তি ও বিতর্কসহ বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের তাগিদ দেন। তাঁর উৎসাহে নবম শ্রেণির ছাত্রী ফাতিমা এ বছর ‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র’ আয়োজিত বই পড়া কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। 

ক. ‘কেতাবি’ অর্থ কী? 
খ. সাহিত্য সাক্ষাৎভাবে উদরপূর্তির কাজে লাগে না কেন? 
গ. উদ্দীপকের ফাতিমাকে কোন ধরনের শিক্ষিত বলা যায়? ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. “উদ্দীপকের রাকিব স্যার যেন ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে উল্লিখিত যথার্থ গুরুর সার্থক প্রতিনিধি”- বিশ্লেষণ কর। 

ক জ্ঞান ‘কেতাবি’ অর্থ কেতাব (বই) অনুসরণ করে চলে যারা। 

খ ) সাহিত্য সাক্ষাৎভাবে উদরপূর্তির কাজে লাগে না, কারণ পরীক্ষায় পাসের জন্য সাহিত্যচর্চার প্রয়োজন নেই। 

শিক্ষা সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস এই যে, তা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দূর করবে। আমাদের চিন্তা নোট ও পাঠ্যবই পড়ে পরীক্ষায় পাস করা এবং চাকরি করা। যেহেতু সাহিত্যচর্চার ফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না তাই আমরা পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য বই অর্থাৎ সাহিত্যের বই পড়তে নারাজ। কেননা তা পড়ে পরীক্ষায় পাস করে উদরপূর্তির কাজে লাগানো সম্ভব নয়। 

সারকথা : আমরা শুধু উদরপূর্তির কাজে লাগে এমন বই পড়তে প্রস্তুত। কিন্তু সাহিত্যচর্চার জন্য পাঠবহির্ভূত বই পড়তে রাজি নই। কারণ তা সাক্ষাৎভাবে উদরপূর্তির কাজে লাগে না। 

গ প্রয়োগ 

উদ্দীপকের ফাতিমাকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আলোকে সুশিক্ষিত বলা যায়। 

ব্যক্তির জাগরণের জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আর যথার্থ শিক্ষা লাভ করতে হলে বই পড়া অপরিহার্য। বই পড়েই মানুষ যথার্থ জ্ঞান লাভ করতে পারে। 

উদ্দীপকের ফাতিমা একজন কৃতী ছাত্রী। সে ‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র’ আয়োজিত বই পড়া কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। “বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখকের মতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লব্ধ শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ নয় বলে ব্যাপকভাবে বই পড়া প্রয়োজন। কারণ যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে মনের প্রসার দরকার, যা বই পড়ার মাধ্যমেই সম্ভব। নিজের পছন্দ মিত অনুযায়ী বই পড়েই কেবল যথার্থ শিক্ষিত বা সুশিক্ষিত হয়ে ওঠা যায়। উদ্দীপকের ফাতিমা যেহেতু নিজের ইচ্ছায় পাঠ্যবইয়ের বাইরে অনেক বই পড়ে বই পড়া কর্মসূচিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তাই আমরা তাকে আলোচ্য প্রবন্ধের আলোকে সুশিক্ষিত বলতে পারি । 

15 সারকথা : মানুষ স্বচ্ছন্দচিত্তে যে শিক্ষা লাভ করে সেটাই সুশিক্ষা। ফাতিমা নিজের ইচ্ছায় বই পড়ে সুশিক্ষিত হয়েছে। 

ঘ. উচ্চতর দক্ষতা 

“উদ্দীপকের রাকিব স্যার যেন ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে উল্লিখিত যথার্থ গুরুর সার্থক প্রতিনিধি”- মন্তব্যটি যথার্থ। 

শিক্ষা হচ্ছে আনন্দের বিষয়। শিক্ষা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করতে হয়। তাহলে অর্জিত জ্ঞান মানুষের কল্যাণে আসে। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া বা মুখস্ত করা জ্ঞান আত্মিক ও মানসিক বিকাশের অন্তরায়। 

. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না। ছাত্রকে তা অর্জন করতে হয়। শিক্ষাগুরুর সার্থকতা শিক্ষাদানে নয়, ছাত্রকে তা অর্জন করতে সক্ষম করায়। শিক্ষক বা গুরু ছাত্রকে শিক্ষার পথ দেখিয়ে দিতে পারেন, তার কৌতূহল উদ্রেক করতে পারেন, ছাত্রের বুদ্ধিবৃত্তিকে জাগ্রত করতে পারেন, ছাত্রের জ্ঞান পিপাসাকে জ্বলন্ত করতে পারেন।

একজন যথার্থ গুরু শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং তার অন্তর্নিহিত প্রচ্ছন্ন শক্তিকে ব্যক্ত করে তোলেন। সেই শক্তির বলে শিষ্য নিজের মন নিজে গড়ে তোলে। উদ্দীপকের রাকিব স্যার এমনই একজন শিক্ষক। তিনি ছাত্রদের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি অন্য বই পড়তে উৎসাহিত করেন। লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়তে এবং বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে তাগিদ দেন। ফাতিমা তার উৎসাহে উদ্বুদ্ধ হয়ে সফল হয়। 

‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক একজন যথার্থ শিক্ষাগুরুর যেসব কর্মকাণ্ড ও বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছেন তার সব বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকের রাকিব স্যারের মধ্যে বিদ্যমান। কেননা তিনি ফাতিমাকে উদ্বুদ্ধ করতে এবং তাকে বই পড়ে সুশিক্ষিত হওয়ার চেতনা জাগ্রত করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ। 

সারকথা : একজন যোগ্য ও সার্থক গুরুর যে বৈশিষ্ট্য ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রকাশ পেয়েছে উদ্দীপকের রাকিব স্যার তেমনই এক শিক্ষক।

বই পড়া প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

তিতলী দশম শ্রেণির ছাত্রী। সে লেখাপড়ায় খুব ভালো। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি সে অন্যান্য বইও পড়ে। সপ্তাহে একদিন হলেও পাবলিক লাইব্রেরিতে তার যাওয়া চা-ই চাই। তার দরিদ্র মা এ নিয়ে খুব শঙ্কায় থাকেন। কারণ তার ধারণা স্কুলের বই বাদে অন্য বই পড়লে তিতলী পরীক্ষায় ভালো করতে পারবে না। ফলাফল ভালো করতে না পারলে ভবিষ্যতে ভালো একটা চাকরিও সে পাবে না। ফলে ঘুচবে না তাদের দরিদ্রতা। 

ক. শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ কোনটি? 
খ. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের উপর স্থান দিয়েছেন কেন? বুঝিয়ে লেখ;
গ. উদ্দীপকের তিতলীর মায়ের ধারণা ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের কোন দিককে ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা কর। 
ঘ, তিতলীর মতো শিক্ষার্থীরাই প্রগতিশীল জগতের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। ‘বই পড়া’ প্রবন্ধ অনুসারে বক্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। 

ক জ্ঞান- শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ হলো- সাহিত্যচর্চা। 

খ অনুধাবন 

লাইব্রেরিতে বই পড়ে মানুষ স্বেচ্ছায় স্বচ্ছন্দচিত্তে যথার্থ শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পায় বলে প্রমথ চৌধুরী লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন। 

গ প্রয়োগ উদ্দীপকের তিতলীর মায়ের ধারণা ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের শিক্ষার ফল লাভের দিক বা নগদ বাজারদরের দিককে ইঙ্গিত করে। শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য মনুষ্যত্বের জাগরণ। সেই জাগরণ না ঘটলে প্রকৃত শিক্ষা অর্জিত হয় না। বই পড়ার মাধ্যমে স্বচ্ছন্দচিত্তে মানুষ সেই শিক্ষা অর্জন করতে পারে। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে ভিতর থেকে মানুষ করে গড়ে তোলা। 

গ) উদ্দীপকের তিতলী পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি অন্য বই পাঠ করায় তার মা ভয় পান। তিনি মনে করেন তিতলী পাঠ্যবই ভালোভাবে পড়লেই ভালো ফল লাভ করবে এবং ভালো চাকরি পাবে। মায়ের এ ধারণা ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রতিফলিত শিক্ষার ফল লাভ বা নগদ বাজারদরের বিষয়টিকে নির্দেশ করে। তিতলীর মায়ের এ ধারণার কারণ বেশিরভাগ মানুষের শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য অনুধাবন করতে না পারা। উদ্দীপকের মায়ের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। তিনি স্বচ্ছন্দচিত্তে বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করার বিষয়টি বুঝতে পারেননি তাই স্কুলের সিলেবাসভুক্ত বই পড়ার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, যা মানুষের প্রকৃত শিক্ষা ও মনুষ্যত্বের জাগরণের অন্তরায়। এভাবে তিতলীর মায়ের ধারণা ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের শিক্ষার ফল লাভের দিক তথা নগদ বাজারদরের দিককে ইঙ্গিত করে। 

সারকথা : শিক্ষার ফল লাভের জন্য বাজারদরের বিষয়টি তিতলীর মায়ের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে। এটি শিক্ষার প্রয়োজনীয় দিকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। 

ঘ উচ্চতর দক্ষতা 

তিতলীর মতো শিক্ষার্থীরাই প্রগতিশীল জগতের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।— ‘বই পড়া’ প্রবন্ধ অনুসারে মন্তব্যটি যথার্থ । মানুষের আত্মিক ও মানসিক বিকাশই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হলে মানুষকে বই পড়তে হয়। বই মানুষের জ্ঞানের পিপাসা মেটায়, মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করে বক্তিত্বের বিকাশ ঘটায়। 

‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় এবং প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে লাইব্রেরির অবদানের কথা বলেছেন। তিনি লাইব্রেরিকে মনের হাসপাতাল হিসেবে অভিহিত করেছেন। কারণ লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ে মনের অসুস্থতা দূর করা যায়। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় মানুষ প্রকৃত শিক্ষা অর্জনে ব্যর্থ হয়। অথচ লাইব্রেরিতে বই পড়ার মাধ্যমে সেই শিক্ষা অর্জন করা যায়।

প্রকৃত শিক্ষা হচ্ছে মনুষ্যত্ববোধসম্পন্ন শিক্ষা। আর এ শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ হচ্ছে সাহিত্যচর্চা। এর জন্য লাইব্রেরির বিকল্প আর কিছুই নেই। মানুষ লাইব্রেরিতে গিয়ে খুব সহজেই নিজের পছন্দ অনুসারে বই নির্বাচন করে পড়তে পারে। তাতে তার মনের যথার্থ বিকাশ সাধিত হয়। সেই সঙ্গে মানুষের প্রকৃত শিক্ষা অর্জিত হয়। এসব কারণে প্রমথ চৌধুরী লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন 

সারকথা : প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে লাইব্রেরির গুরুত্বের দিক বিবেচনা করে লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপর স্থান দিয়েছেন। 

ঘ) উদ্দীপকের তিতলী পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়ে। বিভিন্ন বই পড়ে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে সে লাইব্রেরিতে যায়। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত না হলে প্রগতিশীল জগতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন বিভিন্নমুখী জ্ঞান অর্জন।

সেই বিবেচনায় তিতলীর বই পড়ার দিকটি গুরুত্বপূর্ণ। ‘বই পড়া’ প্রবন্ধেও লেখক বই পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। একজন মানুষ শিক্ষিত হয়ে ওঠে স্বশিক্ষার মাধ্যমে, আর স্বশিক্ষার অন্যতম বিষয় হলো বই পড়া। এই পড়ার মাধ্যমেই অর্জিত হয় প্রকৃত শিক্ষা। এ ক্ষেত্রে লাইব্রেরির গুরুত্ব অনেক বেশি। লেখকের মতে মনের প্রসারতার জন্য এবং যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে বই পড়তে হবে। স্বেচ্ছায় বই পড়ার মাধ্যমেই যথার্থ শিক্ষিত হয়ে ওঠা সম্ভব। 

‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক লাইব্রেরির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। লাইব্রেরিতে এসে বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার মাধ্যমে মানুষের মন সজীব, সতেজ ও সরাগ হয়ে ওঠার কথা বলেছেন। বই পড়ে মানুষ অজানাকে জানার সুযোগ পায়। এ বিষয়টি উদ্দীপকের তিতলীর কর্মকাণ্ডের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে তিতলও বই পড়ে। এই বিচারে তার মতো শিক্ষার্থীরাই প্রগতিশীল জগতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ। 

সারকথা : পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য বই পড়ার ফলে মানুষের জ্ঞানের প্রসার ঘটে এবং মানুষ প্রগতিশীল হয়ে ওঠে। উদ্দীপকের তিতলী তেমনই একজন শিক্ষার্থী। 

বই পড়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

রাজন পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে। স্কুলে অবসর সময়ে বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা না করে সে লাইব্রেরিতে বসে বই পড়ে। এ নিয়ে রাজনের বন্ধুরা প্রায়ই তাকে বিদ্যার জাহাজ বলে কটাক্ষ করে। তার বন্ধুদের মতে ভালো ফলাফল করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে পাঠ্যবইয়ের কোনো বিকল্প নেই। 

ক. সাহিত্যচর্চার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অর্থ কী? 
খ. আমরা জাত হিসেবে শৌখিন নই কেন? বুঝিয়ে লেখ। 
গ. উদ্দীপকে রাজনের বন্ধুদের মনোভাবে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সাদৃশ্যগত দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের রাজন যেন ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশিত ব্যক্তি— মূল্যায়ন কর। ৫নং প্রশ্নের উত্তর 

ক) সাহিত্যচর্চার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অর্থ হলো জাতির জীবনীশক্তি হ্রাস করা। 

খ অনুধাবন 

আমাদের সচ্ছল জীবন ধারণ করাই প্রধান সমস্যা বলে আমরা জাত হিসেবে শৌখিন নই। 

‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক বলেছেন- আমরা জাত হিসেবে শৌখিন নই। কারণ আমাদের এই রোগ-শোক, দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশে সুন্দরভাবে জীবন ধারণ করা সহজ নয়। জীবনকে সুন্দর করতে আমরা এখনই সাহিত্যের রস উপভোগ করতে প্রস্তুত নই। এ কারণে সবাই শিক্ষার ফল লাভ করতে চায়। এ দিক বিবেচনা করেই লেখক বলেছে আমরা জাত হিসেবে শৌখিন নই। 

সারক্থা : সাহিত্যের রস উপভোগ করতে প্রস্তুত নই বলেই আমরা জাত হিসেবে শৌখিন নই। 

গ প্রয়োগ 

উদ্দীপকের রাজনের বন্ধুদের মনোভাবে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রকাশিত আমাদের স্কুল-কলেজের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতির দিকটি সাদৃশ্যপূর্ণ। বই মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধু। বই পড়ার মাধ্যমে জ্ঞানের আলোয় মানুষ আলোকিত হয়। শিক্ষা মানুষকে আত্মিক ও মানসিক বিকাশ সাধন করে। কিন্তু যথার্থ শিক্ষা লাভ করতে না পারলে মানুষ সফল হতে পারে না। 

উদ্দীপকের রাজনের বন্ধুরা মনে করে পরীক্ষায় ভালো ফল করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে পাঠ্যবইয়ের কোনো বিকল্প নেই। তাদের জা। এই মনোভাব ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে আলোচিত দেশের শিক্ষাপদ্ধতির দিকটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রাবন্ধিক বলেছেন— সেখানে ছেলেদের বিদ্যা গেলানো হয়। তারা তা জীর্ণ করতে পারুক আর নাই পারুক। এর ফলে ছেলেরা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণশীর্ণ হয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে। উদ্দীপকের রাজনের বন্ধুদের মনোভাবে এ চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে। 

সারকথা : উদ্দীপকের রাজনের বন্ধুরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে প্রধান হিসেবে দেখেছে যা ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বর্ণিত আমাদের দেশের স্কুলকলেজের শিক্ষাপদ্ধতির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। 

ঘ উচ্চতর দক্ষতা 

উদ্দীপকের রাজন যেন ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশিত ব্যক্তি— মন্তব্যটি যথার্থ। 

স্বশিক্ষিত প্রাণবান মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার জন্য বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। স্কুল-কলেজের শিক্ষাপদ্ধতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ দেয় না। এতে স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠার শক্তি পর্যন্ত নষ্ট হয়। এজন্য সত্যিকারের মানুষ হতে হলে সাহিত্যচর্চা করতে 

উদ্দীপকের রাজন পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন গল্পের বই পড়তে ভালোবাসে। স্কুলে অবসর সময়ে বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধূলা না করে সে লাইব্রেরিতে বসে বই পড়ে। ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখক এমনই ব্যক্তিকে প্রত্যাশা করেছেন। কারণ তিনি মনে করেন সাহিত্যচর্চা শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ। সাহিত্যের মাধ্যমে জাতির মনন গঠিত হয়। লেখকের মতে এর দ্বারা জাত উন্নত হয়। 

‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক বই পড়াকে মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ বলেছেন। আর সাহিত্যচর্চা না করলে শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না। কেননা দর্শন, বিজ্ঞান, অনুরাগ-বিরাগ, আশা-নিরাশা, সত্য-স্বপ্ন- এসবের মিলনে সৃষ্টি হয় সাহিত্য। উদ্দীপকের রাজন বই পড়তে 

– ভালোবাসে, সাহিত্যচর্চা করতে ভালোবাসে। এ জন্য সে লাইব্রেরিতে যায়। লেখকও লাইব্রেরিকে মনের হাসপাতাল বলেছেন। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ। 

সারকথা : উদ্দীপকের রাজন পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন গল্পের বই পড়ে। বই পড়া তার শখ। ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক রাজনের মতো পাঠকদেরই প্রত্যাশা করেছেন। এই দিক থেকে মন্তব্যটি যথার্থ। 

Read More:

Leave a Comment

You cannot copy content of this page

Scroll to Top