আমার পথ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র): শিক্ষার্থীরা তোমাদের বাংলা গদ্য অংশ আমার পথ এর সর্বশেষ বোর্ড প্রশ্ন উত্তরসহ এখানে দিয়েছি। আশাকরি তোমরা এখান থেকে প্রস্তুতি ও পরীক্ষার ধারণা নিতে পারবে।
সাজেশন
আরো পড়ুনঃ
সর্বশেষ বোর্ডে আসা প্রশ্ন সাজেশন
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন অনুশীলন
আলম একজন সংগঠক। এলাকার ছেলেমেয়েদের নিয়ে তিনি ‘কবি সুকান্ত পাঠাগার ও সংগীত বিদ্যালয়’ নামে সংগঠন গড়ে তোলেন। তিনি মিথ্যাকে উড়িয়ে দিয়ে, সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সংগঠনের ‘রজত জয়ন্তী’র আয়োজন করেছেন। তিনি দমে যাওয়ার মানুষ নন। তার সংগঠনের ছেলেমেয়েরা আজ গুণী শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, প্রশাসনের কর্মকর্তা, চিকিৎসাবিদ আরো কতো সফল মানুষ। তিনি আলোকিত মানুষ হিসেবে সকলের মন আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছেন।
ক. ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে ‘আমার পথ’ আমাকে কী দেখাবে?
খ. “আত্মাকে চিনলেই আত্মনির্ভরতা আসে।” – ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে আলমের নেতৃত্বের স্বরূপ ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে? বিশ্লেষণ কর।
ঘ. “মনুষ্যত্ব মানুষকে আলোর পথ দেখাতে পারে।” উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তির যথার্থতা বিচার কর।
ক জ্ঞান
‘আমার পথ’ প্রবন্ধে ‘আমার পথ’ আমাকে আমার সত্য দেখাবে।
খ অনুধাবন
সত্যকে জানা ও আত্মশক্তির বিকাশের মাধ্যমে আত্মনির্ভরতা অর্জনের বিষয়টি বোঝাতে লেখক প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন। অন্যের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকাকে বলা হয় পরনির্ভরতা। যার নিজের শক্তির ওপর বিশ্বাস নেই, যে আত্মশক্তি ও সত্যকে জানে না সেই পরনির্ভর। নিজের সত্যকে না জানলে আত্মনির্ভরতা অর্জন করা যায় না। তাই পরনির্ভরশীলতাকে বর্জন করতে হলে নিজের সত্যকে জানতে হবে, নিজের শক্তির ওপর আস্থা স্থাপন করতে হবে। আর তা হলেই মানুষ আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে। আর এভাবেই আত্মনির্ভরতা আসে। প্রশ্নোক্ত কথাটির মাধ্যমে লেখক এ বিষয়টিই তুলে ধরেছেন।
সারকথা : মানুষ কীভাবে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে সে কথা বলতে গিয়ে লেখক প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন ।
গ প্রয়োগ
উদ্দীপকের আলমের নেতৃত্বের স্বরূপ ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে সম্পূর্ণভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।নিজের মতো করে জীবন গড়তে হলে আত্মবিশ্বাসী ও স্বাবলম্বী হতে হয়। কারও নির্দেশমতো চলতে গেলে নিজের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলতে হয়, যা একজন মানুষের জন্য কোনোভাবেই মঙ্গল বয়ে আনে না। এ জগতে তারাই সফল, যারা নিজের মতো করে পৃথিবীটা গড়ে নেয়।
● উদ্দীপকে একজন সফল সংগঠক আলমের কথা বলা হয়েছে। তিনি বিভিন্ন সামাজিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে নিজের মনের মতো করে একটি সংগীত বিদ্যালয় ও পাঠাগার গড়ে তোলেন। তাই তিনি আজ সবার শ্রদ্ধার পাত্র। ‘আমার পথ’ প্রবন্ধেও লেখক নিজেকে চেনা ও জানার কথা বলেছেন। তিনি নিজেকে ছাড়া অন্য কাউকে কুর্নিশ করতে রাজি নন। তাঁর কাছে বিনয়ের চেয়ে অহংকারের পৌরুষ অনেক ভালো।
তিনি আপন সত্যকে সম্মান করেছেন বলেই বাইরের মিথ্যাকে ভয় পাননি। তাই তিনি আত্মনির্ভর এবং অন্যের দাসত্ব থেকে মুক্ত। উদ্দীপকের আলম সাহেবও একই চেতনার মানুষ। তাই তিনি আপন কাজে জয়ী। এভাবে উদ্দীপকের আলমের নেতৃত্বের স্বরূপ ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে সম্পূর্ণভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
সারকথা : উদ্দীপকের আলম নেতৃত্বের গুণে আজ সফল মানুষ। ‘আমার পথ’ প্রবন্ধেও এ দিকটি আলোচিত হয়েছে ।
ঘ) উচ্চতর দক্ষতা
“মনুষ্যত্ব মানুষকে আলোর পথ দেখাতে পারে।”- উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটি যথার্থ। যা ন্যায়, যা মানুষের জন্য কল্যাণকার তাই সত্য। এ সত্য মানুষকে মনুষ্যত্বলোকে পৌঁছে দেয়। জীবনের সংকটময় মুহূর্তে এ সত্যই মানুষকে রক্ষা করে। নতুন পথের সন্ধান দেয় ।
উদ্দীপকের আলম একজন আত্মনির্ভরশীল ও মনুষ্যত্ববোধসম্পন্ন মানুষ। তিনি অন্যায় বা মিথ্যার কাছে নতি স্বীকার না করে আপন সত্যে অবিচল থেকেছেন। মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করে মনুষ্যত্বলোকের অমিয় সুধা পান করেছেন। ‘আমার পথ’ প্রবন্ধেও লেখক এ বিষয়টি গভীর সংবেদনশীলতার সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন।
‘আমার পথ’ প্রবন্ধে লেখক এমন এক ‘আমি’র আহ্বান করেছেন যার পথ সত্যের পথ। তিনি প্রত্যেক মানুষকে আরেক মানুষের সঙ্গে মিলিয়ে ‘আমরা’ হয়ে উঠতে চেয়েছেন। তিনি জানেন মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত হলেই ধর্মের সত্য উন্মোচিত হবে।
সব বিরোধ মিটে যাবে, সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় হবে। এই মনুষ্যত্ববোধই মানুষকে আলোর পথ দেখাবে। এ বিষয়টিই উদ্দীপকের মূল ভাব। এদিক বিচারে তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
সারকথা : উদ্দীপকের আলম সাহেবের কর্মকাণ্ডে মনুষ্যত্ববোধের সার্থক প্রকাশ ঘটেছে। ‘আমার পথ’ প্রবন্ধেও লেখক এ বোধের উদ্বোধন ঘটাতে চেয়েছেন। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
আমার পথ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)
প্রশ্ন অনুশীলন
আমি জীবনে অনেক আত্মপ্রবঞ্চনা করে করে অন্তরে অশেষ যন্ত্রণা ভোগ করেছি। কত রাত্রি অনুশোচনায় ঘুম হয় নাই। এখন ভুল বুঝতে পেরেছি। এখন সোজা এই বুঝেছি যে, আমি যা ভালো বুঝি, যা সত্য বুঝি, শুধু সেটুকু লোকে যতই নিন্দা করুক, আমি আমার কাছে ছোট হয়ে থাকব না, আত্মপ্রবঞ্চনা করে আর আত্মনির্যাতন ভোগ করব না।
ক. কত সালে কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালি পল্টনে যোগ দেন?
খ. ‘মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম’- বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের ভাবার্থের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের লেখকের মনের যে সাদৃশ্যপূর্ণ ভাবের পরিচয় পাওয়া যায় তা আলোচনা কর ।
ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটির আংশিক দিক প্রতিফলিত হয়েছে।- উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
জ্ঞান
১৯১৭ সালে কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালি পল্টনে যোগ দেন।
খ অনুধাবন
‘মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম’ বলতে লেখক বুঝিয়েছেন যে, মানুষের সঙ্গে মানুষের আত্মিক সম্পর্কই সবচেয়ে বড় সত্য, আত্মিক বন্ধন-সম্প্রীতিই বড় ধর্ম।
ধর্মীয় বিভেদ ভুলে গিয়ে লেখক সমগ্র মানবজাতিকে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন। ধর্মীয় বিভেদ মানুষের সঙ্গে মানুষের মেলবন্ধনের প্রধান অন্তরায়। মানুষের মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত হলেই ধর্মের সত্য উন্মোচিত হবে। মানুষ হিসেবে মানুষকে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা-সম্মান করাই মানবধর্মের মূলমন্ত্র। সমাজে মানবধর্ম প্রতিষ্ঠিত হলে শান্তি ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত হবে।
সাম্প্রদায়িক বিভেদ দূর হবে। মানুষ হিসেবে আমরা সবাই রক্ত-মাংসে গড়া, সবাই একই স্রষ্টার সৃষ্টি। এজন্যই লেখক বলেছেন, ‘মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম।
সারকথা : মানুষের মাঝে মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত হলে সব ভেদাভেদ দূর হয়ে মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম হয়ে ওঠে।
গ প্রয়োগ
উদ্দীপকের ভাবার্থের সঙ্গে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের লেখকের মনের যে সাদৃশ্যপূর্ণ ভাবের পরিচয় পাওয়া যায় তা হলো সত্যকে প্রকাশ করার দৃঢ়তা।
নিজের ভেতরের সত্যকে জানার মধ্য দিয়েই প্রকৃত মানুষ হওয়া যায়। সত্যের প্রত্যাশা থেকেই মানুষ সমাজের কুসংস্কার, মিথ্যা ও অন্যায়ের দৌরাত্ম্য দূর করতে চায়। তাই সবার নিজ নিজ সত্যকে চিনে সত্যের পথে বিচরণ করা উচিত ।
‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক আপন সত্যকে চিনে তা প্রকাশের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন। নিজের শক্তিকে চিনে, সত্যের পথে ধাবিত হয়ে প্রকৃত মানুষ হতে হবে। সত্য যত নির্মমই হোক না কেন, এই সত্যই মানুষকে পথ দেখায়। সত্যের আলোতেই হৃদয় আলোকিত হয়ে ওঠে। সত্যের দম্ভ যাদের মধ্যে রয়েছে তারাই জীবনে অসাধ্য সাধন করতে পারে। উদ্দীপকের বক্তব্যেও নিজের সত্যকে চিনে তা প্রকাশের দিক প্রতিফলিত হয়েছে। সত্য প্রকাশ করতে নিন্দার সম্মুখীন হলেও সেই সত্যই দেখাবে আলোর পথ। সত্যের আলোতে আলোকিত হবে জীবন। উদ্দীপকের পাশাপাশি সত্য প্রকাশের এ দিকটি আলোচ্য প্রবন্ধের লেখকের মনের ভাবেও প্রতিফলিত হয়েছে।
সারকথা : উদ্দীপকের ভাবার্থে সত্য প্রকাশের দিকটি প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়টিতে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে লেখকের মনের সাদৃশ্যপূর্ণ ভাবের পরিচয় পাওয়া যায়।
ঘ উচ্চতর দক্ষতা
■ উদ্দীপকটিতে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটির আংশিক দিক প্রতিফলিত হয়েছে।— উক্তিটি যথার্থ।আপন সত্যকে চিনে সত্যের পথে ধাবিত হয়েই মানুষ জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কারণ সত্যের উপলব্ধি প্রাণ-প্রাচুর্যের উৎসবিন্দু। সত্যের মাধ্যমেই মানুষ মনুষ্যত্বের সন্ধান পায়, গড়ে ওঠে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ উৎকৃষ্ট মানবসমাজ।
উদ্দীপকটিতে আপন সত্যকে চিনে সত্য প্রকাশের দিকটি বর্ণিত হয়েছে। আপন সত্য চিনতে না পারলে অনুশোচনায় বারবার দগ্ধ হতে হয় । ভুলের মধ্য দিয়েই মানুষ সত্যকে চেনে এবং নির্বিকার চিত্তে সে সত্যকে প্রকাশ করে। সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে নিন্দার মুখোমুখি হলেও মানুষ আর নিজের কাছে ছোট হয়ে থাকে না। ‘আমার পথ’ প্রবন্ধেও প্রাবন্ধিক সত্যের পথে ধাবিত হওয়ার কথা বলেছেন। আপন সত্যকে চিনে তা প্রকাশের কথাও বলেছেন। সত্যের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে মানুষ মিথ্যা ভয়কে জয় করে । মিথ্যা, ভয়, ভণ্ডামি থেকে বের হয়ে এলেই মানুষ মনুষ্যত্বের সন্ধান পায়। আর মনুষ্যত্ব অর্জনই জীবনের সার্থকতা।
তাই সত্যের সাধনা করে নিজেকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করতে হবে। ‘আমার পথ’ প্রবন্ধেও উদ্দীপকে বর্ণিত আপন সত্যকে চিনে তা প্রকাশের দিকটি আলোচিত হয়েছে। কিন্তু তা প্রবন্ধের আংশিক দিকের প্রতিফলন মাত্র । প্রবন্ধে আপন সত্যের শক্তিতে সংকীর্ণতা দূর করা এবং মানুষ-ধর্মের চর্চার মাধ্যমে মনুষ্যত্ব অর্জনের দিকটিও প্রতিফলিত হয়েছে, যা উদ্দীপকে প্রকাশ পায়নি। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।
সারকথা : উদ্দীপকে বর্ণিত আপন সত্যকে চিনে তা প্রকাশের বিষয়টি আমার পথ’ প্রবন্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকের প্রতিফলনমাত্র। এটি প্রবন্ধে আলোচিত সামগ্রিকতা প্রকাশ করে না। আর এ কারণেই প্রশ্নোত্ত উদ্ভিটি যথার্থ।
এই আমার পথ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র) ছাড়াও আরো পড়ুন