আমি কিংবদন্তির কথা বলছি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র): শিক্ষার্থীরা তোমাদের বাংলা পদ্য তাহারেই মনে পড়ে এর সর্বশেষ বোর্ড প্রশ্ন উত্তরসহ এখানে দিয়েছি। আশাকরি তোমরা এখান থেকে প্রস্তুতি ও পরীক্ষার ধারণা নিতে পারবে।

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি  অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

অনুধাবনমূলক

প্রশ্ন ১। “তাঁর পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল।”― বুঝিয়ে লেখ। নিজে কর

প্রশ্ন ২। ‘তাঁর পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল।’— কেন? নিজে কর

প্রশ্ন ৩। ‘সে সূর্যকে হৃৎপিণ্ডে ধরে রাখতে পারে না’ লাইনটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কবির মতে— কবিতা মানুষের লুকায়িত শক্তিকে জাগিয়ে তোলে। তাই যে ব্যক্তি কবিতা শুনতে জানে না সে হৃদয়ে সূর্যশক্তিকে ধারণ করতে পারে না। সূর্যকে হৃৎপিণ্ডে ধরে রাখা বলতে কবি মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তিকে সর্বদা জাগ্রত রাখাকে বুঝিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা দেশপ্রেমমূলক যে কোনো চেতনায় উদ্দীপ্ত হতেন তারা সাহস ও শক্তির জন্য সেই সংগ্রামী চেতনাকে ধারণ করতেন। তাই কবি বলেছেন যে কবিতা শুনতে জানে না তার মনে সাহস, শক্তি ও আশা জাগ্রত হয় না। আলোচ্য চরণে এ বিষয়টিই নির্দেশ করা হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ

প্রশ্ন ৪। “সূর্যকে হৃৎপিণ্ডে ধরে রাখা’- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : ‘সূর্যকে হৃৎপিণ্ডে ধরে রাখা’ বলতে অধিকার আদায় ও মুক্তির জন্য বুকের মধ্যে তেজোদীপ্ত চেতনার লালনকে বোঝানো হয়েছে। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কবি তাঁর পূর্বপুরুষের সাহসী ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা বলেছেন।

তিনি এ কবিতা বিভিন্ন বিষয় অনুষঙ্গ সহযোগে বাংলার মানুষের সাহসী চেতনাকে উজ্জীবিত করেছেন। সাধারণভাবে সূর্য সব শক্তির উৎস। কবি ভেবেছেন এই সর্বশক্তির আধারকে হৃদয়ে ধারণ করতে পারলে মুক্তি অনিবার্য। আর মুক্তি যদি অর্জিত হয় তাহলে মানুষ তার ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে। এ ধারণায় কবি প্রত্যেকের হৃদয়ে সূর্যের শক্তির মতো তেজোদীপ্ত চেতনার লালন প্রত্যাশা করেছেন। তাই তিনি অধিকার আদায় ও অধিকার রক্ষার জন্য সূর্যকে হৃৎপিণ্ডে ধরে রাখার কথা বলেছেন।

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৫। ‘উনোনের আগুনে আলোকিত একটি উজ্জ্বল জানালা’-বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

উত্তর : ‘উনোনের আগুনে আলোকিত একটি উজ্জ্বল জানালা বলতে’ কবি আগুনের পরশে জীবনের সমস্ত গ্লানি মুছে ফেলাকে বুঝিয়েছেন। আগুনে সবকিছু শুচি শুদ্ধ হয়ে ওঠে বলে কবির বিশ্বাস। তাই তিনি আগুনের উত্তাপে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে চান। তিনি সব গ্লানি মুছে ফেলে আলোয় ভরা মুক্ত জীবনের প্রত্যাশা করেন। তাঁর এই প্রত্যাশার অনুষঙ্গ হিসেবে উজ্জ্বল জানালা’ কথাটি ব্যবহৃত হয়েছে।

প্রশ্ন ৬। কবি সূর্যকে হৃৎপিণ্ডে ধরে রাখার কথা বলেছেন কেন?
উত্তর : অধিকার আদায় ও রক্ষার জন্য কবি সূর্যকে হৃৎপিণ্ডে ধরে রাখার কথা বলেছেন। সাধারণভাবে সূর্য সব শক্তির উৎস। তাই এই সর্বশক্তির আধারকে হৃদয়ে ধারণ করতে পারলে মুক্তি অনিবার্য। কবির মতে এই সামর্থ্য অর্জনের একমাত্র উপায় কবিতা শোনা। কারণ কবির কাছে কবিতাই সত্য আর সত্যই শক্তি। যে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ অধিকার আদায় ও রক্ষা করতে পারবে। এই কারণেই কবি সূর্যকে হৃৎপিণ্ডে ধরে রাখার কথা বলেছেন।

প্রশ্ন ৭। সশস্ত্র সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান কবিতা’- বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : ‘সশস্ত্র সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান কবিতা’ বলতে কবি সত্য ও সুন্দরের জাগরণ ও জয়গানের কথা বলেছেন। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কবি বাঙালির প্রাচীন ঐতিহ্যকে স্মরণ করে সমকালীন আন্দোলন-সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছেন। কবির মতে কবিতায় সত্য ও সুন্দরের চেতনা প্রতিফলিত হয়। বিপরীতক্রমে সত্য-সুন্দর করে সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সশস্ত্র সংগ্রামের অনুপ্রেরণার উৎসও কবিতা। কবিতা বলতে কবি এখানে ছন্দবদ্ধ পক্তির বা শব্দের বিন্যাসকে বোঝাননি। তিনি কবিতা দ্বারা বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংগ্রাম, সত্য, সুন্দর ও কল্যাণকে বুঝিয়েছেন। তাঁর মতে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এবং স্বাধীনতার দৃঢ় সংকল্পের যে ভাষা তা-ও কবিতা ।

প্রশ্ন ৮। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ বলে কী বুঝাতে চেয়েছেন, কেন?
উত্তর : ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ বলে কবি বাঙালি জাতির পূর্বপুরুষ ও তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা বোঝাতে চেয়েছেন। বাঙালি জাতির মর্যাদা ও ঐতিহ্য অনেক বিস্তৃত। কবির পূর্বপুরুষরা শ্রম, মেধা ও সৃজনশীল কর্ম দ্বারা নিজেদের অস্তিত্ব সাফল্যের সঙ্গে টিকিয়ে রেখেছিলেন। বাঙালি জাতির এই মর্যাদা সর্বজনবিদিত ছিল। তাদের খ্যাতি, কর্মদক্ষতা ও ঐতিহ্য তুলে ধরতেই কবি প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন।

প্রশ্ন ৯। ‘জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : ‘জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা’ বলতে কবিতা যে সবসময় সত্য, সুন্দর ও অধিকার চেতনার কথা বলে সে কথা বোঝানো হয়েছে। কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় বলেছেন, জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা। কবিতায় সবসময় সত্য ও সুন্দরের কথা বলা হয় যা জিহ্বা নির্বিঘ্নে ও নির্ভয়ে উচ্চারণ করে । সত্যের মধ্যে কোনো আড়ষ্টতা থাকে না।

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ১০। পূর্বপুরুষ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর : পূর্বপুরুষ বলতে কবি বাঙালির জাতিসত্তার অতীত ইতিহাসের কথা বলেছেন। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় উচ্চারিত হয়েছে ঐতিহ্যসচেতন শিকড়সন্ধানী বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস। এই ইতিহাস কবির পূর্বপুরুষের সাহসী ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, বাংলার ভূমিজীবী ক্রীতদাসের লড়াই করে টিকে থাকার ইতিহাস। কবি তাঁর পূর্বপুরুষ বলতে হাজার বছরের সংগ্রামী বাঙালি জাতিসত্তাকে বুঝিয়েছেন।

প্রশ্ন ১১। কবি তাঁর পূর্বপুরুষের কথা বলছেন কেন?
উত্তর : জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে এবং বাঙালি জাতির গৌরবময় ইতিহাসের কথা বলতে গিয়ে কবি তাঁর পূর্বপুরুষের কথা বলেছেন। কবির পূর্বপুরুষ ক্রীতদাস ছিলেন। তাঁরা সেই বিপদসংকুল সময়ের মানুষ ছিলেন, যে সময়ে তাঁদের অরণ্য, শ্বাপদের সঙ্গে লড়াই করে বসবাস করতে হতো। আবার পতিত, অনাবাদি জমিকে করে তুলতে হতো উর্বর। বিদেশি শোষক দ্বারা অনেক অত্যাচারিত হয়েও তারা সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে মুক্ত মানুষে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। সেই সাহসিকতার কথা বলতে গিয়েই কবি তাঁর পূর্বপুরুষের কথা স্মরণ করেছেন।

প্রশ্ন ১২। কবির পূর্বপুরুষের পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত কিসের ইঙ্গিত বহন করে? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : কবির পূর্বপুরুষের পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত তাদের ওপর অত্যাচারের ইঙ্গিত বহন করে। কবির পূর্বপুরুষের ওপর শোষকরা যে অত্যাচার করেছে, তার চিহ্ন এখনও উজ্জ্বল। তাঁদের পিঠে রক্তজবার মতো লাল চিহ্ন বিদ্যমান। ভীরু শত্রুরা কাপুরুষের মতো পেছন থেকে আক্রমণ করেছে। বন্দি ক্রীতদাসের ওপর নির্মম অত্যাচার চালিয়ে রক্তাক্ত করেছে। এই বিষয়টি বোঝাতেই কবি তাঁর পূর্বপুরুষদের অত্যাচার সহ্য করে গ্লানিকর জীবনযাপন প্রসঙ্গে ইঙ্গিত করতে বলেছেন— ‘তাঁর পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল’।

প্রশ্ন ১৩। কবি কিংবদন্তির কথা কেন বলেছেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাঙালি জাতির পূর্বপুরুষদের পরিচিতি তুলে ধরতে কবি কিংবদন্তির কথা বলেছেন।বাঙালি জাতির মর্যাদা ও ঐতিহ্য বিস্তৃত। কবির পূর্বপুরুষরা শ্রম, মেধা ও সৃজনশীল কর্ম দ্বারা নিজেদের অস্তিত্ব সাফল্যের সাথে টিকিয়ে রেখেছিলেন। এই বাঙালি জাতির মর্যাদা সর্বজনবিদিত ছিল। তাঁদের খ্যাতি, কর্মদক্ষতা ও ঐতিহ্য তুলে ধরতেই কবি কিংবদন্তি কথাটি বলেছেন।

প্রশ্ন ১৪। ‘অতিক্রান্ত পাহাড়’ দ্বারা কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর : ‘অতিক্রান্ত পাহাড়’ দ্বারা কবি বাঙালি পূর্বপুরুষদের সংগ্রামী সাহসী জীবনচেতনা বোঝাতে চেয়েছেন । এক সময় বাঙালিরা খুব পরিশ্রমী ও সাহসী ছিলেন। তারা বেঁচে থাকার তাগিদে ঘুরে বেড়াতেন পাহাড়ে অরণ্যে। সেখান থেকে তারা সংগ্রহ করতেন বিভিন্ন ফল-মূল। জঙ্গলাকীর্ণ পাহাড়কে তারা সাহসের সাথে সহজেই নিজেদের চারণক্ষেত্রে পরিণত করতেন। কবি বাঙালির সাহসী চেতনাকে বোঝাতে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন ।

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)
প্রশ্ন ১৫। ‘পতিত জমি’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : পতিত জমি বলতে অনাবাদি জমিকে বোঝানো হয়েছে। অক্লান্ত পরিশ্রমই বাঙালি জাতির জীবনে উন্নতি, সমৃদ্ধি এনেছিল। তারা জীবনবোধ ও ঐতিহ্য সংলগ্ন হয়ে বেঁচে ছিল। এক সময় তাঁরা কৃষিনির্ভর জীবনযাপন করতেন, অনাবাদি জমিতে ফলাতেন সোনাতুল্য ফসল। নিরলস পরিশ্রমই বদলে দিয়েছিল তাদের ভাগ্য। ফলে কঠিন মাটির বুকে সযত্নে ফসল ফলানোর মধ্যে তাদের সংগ্রামী চেতনাকে প্রত্যক্ষ করা যায়। কবি এখানে মূলত অনাবাদি জমিতে বাঙালি কর্তৃক অক্লান্ত পরিশ্রম করে ফসল ফলানোর দিকটিকে বুঝিয়েছেন।

প্রশ্ন ১৬। উচ্চারিত সত্যের মতো স্বপ্নের কথা বলা হয়েছে কেন?
উত্তর : মানুষকে মুক্তির স্বাদ দিয়ে, জীবনের সত্যকে উপস্থাপন করতেই কবি উচ্চারিত সত্যের মতো স্বপ্নের কথা বলেছেন। সত্য ও সুন্দরের চেতনায় গঠিত কবিতার দেহ। এটি নির্দ্বিধায় মানুষকে মুক্তির বার্তা পৌঁছে দেয়। স্বপ্নময় জীবনে যে সত্যের দিকটি বিদ্যমান তা কবিতায় উপস্থাপিত হয়। মানুষ তার স্বপ্নের মতো বড় তখনই হবে যখন সে কবিতায় উচ্চারিত শব্দের বলয়ে জীবনকে গড়ে তুলবে। কবিতা এখানে মুক্তির জন্য সংগ্রামী চেতনার প্রতীক। কবি এ সত্যকে জেনেছেন স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস থেকে। এই কারণেই ‘উচ্চারিত সত্যের মতো স্বপ্নের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ১৭। “সে মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শুনতে পারে না।”- কথাটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : কবি প্রশ্নোক্ত লাইনটি ব্যবহার করেছেন শিশুর কোমল,স্বচ্ছ, সুন্দর ও আনন্দে পরিপূর্ণ মনকে উপস্থাপন করতে। কবিতার ভাষা স্নিগ্ধ, কোমল, নিষ্পাপ, স্বচ্ছ ও আনন্দঘন। একটি শিশুর চপল মনও এসব গুণে পরিপূর্ণ। এই কারণেই সে মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শুনে নির্মল আনন্দ পায়। এই অমোঘ সত্যটি যদি শিশুর জীবনাচরণের বাইরে থাকে, তা হলেই সে মাতৃহৃদয়ের কোমল পরশ থেকে বঞ্চিত থাকে এবং গল্প শোনার আনন্দ পায় না।

এই আমি কিংবদন্তির কথা বলছি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র) ছাড়াও আরো জানুন

You cannot copy content of this page

Scroll to Top