কাজের বেলায় কাজী কাজ ফুরালে পাজী
মূলভাব : মানবজীবন গতিময়। আর এ গতিময় জীবনে একে অন্যের সমস্যায় এগিয়ে আসবে এবং প্রতিদানে সাহায্য গ্রহণকারী কৃতজ্ঞতা করবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু আমরা অনেক টাইম এ নিয়মের ব্যতিক্রম দেখতে পাই।
সম্প্রসারিত-ভাব : মানব জাতি সমাজবদ্ধ জীব। একারণে সে একা বাস করার জন্য পারে না। মানব সভ্যতার প্রাক্কালে লোক যখন জঙ্গলে জঙ্গলে বাস করত সেই সময় তারা দলবদ্ধভাবে বাস করত। মানব সভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তারা সমাজবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে বসবাস করে আসতে চলেছে এবং দুর্দিনে একে অন্যজনের কাছে হেল্পের জন্য ছুটে গেছে। তা সত্ত্বেও অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে এ কল্যাণময় ফ্রেন্ডের কথা ব্যক্তি অনেক সময় ভুলে যায়। মূলত দরকার সিদ্ধির জন্য কমিউনিটিতে একশ্রেণীর আছে যারা সঙ্গতিসম্পন্ন লোকের সাথে বন্ধুর মত আচরণ করে এবং তাকে অনেক উঁচু আসনে সমাসীন করে কিন্তু, স্বার্থ উদ্ধার হয়ে গেলেই সে তার আশ্রয় পর্যন্ত মাড়ায় না।
উপকারী লোক যেন তখন তার কাছে অপছন্দের ব্যক্তিতে রুপান্তর হয়। তার আচরণ দেখে মনে হয় যেন সে উপকারকারী ঐ ব্যক্তিকে চেনেই না। এ ধরনের চালচলন মানবীয় সুপ্রবৃত্তির পরিপন্থী। ব্যক্তি মানুষের কল্যাণ করে প্রতিদানের আশায় নয়, বরং তার মানবীয় সুপ্রবৃত্তি থেকে। আর এ মঙ্গল পাবার পর অনেক টাইম আমরা তার যথাযথ মূল্যায়ন করি না। এর ফলে উপকারকারী ব্যক্তির পরম ভালো বুকে পরিচয় উদাহরণসরূপ ফুটে উঠে তেমনি সেইম সাথে উপকার করার মানসিকতা নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের মানবসমাজে এ ধরনের নকশা অহরহই দেখতে পাওয়া যায়।
এ সমাজেই এক শ্রেণীর আছে যারা তাদের নিজ স্বার্থ উদ্ধারের জন্য অন্যকারোর নিকট ছুটে যায় এবং তাকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ করে তোলে কিন্তু প্রয়োজন উদ্ধার হলেই সে কৃতঘ্ন ব্যক্তিতে পরিণত হয়। মূলত মঙ্গলময় ফ্রেন্ডকে তার যথাযথ গুরুত্ব দেয়াটাই শ্রেয়। অনুগ্রহ পাবার পূর্বে কল্যাণময় ফ্রেন্ডের স্থান উদাহরণসরূপ ছিল সাহায্য পাবার পরও তার ঠাঁই তেমনই থাকা উচিত। সাহায্য পাবার পর তা ভুলে গেলে উপকারীর কোন লস হয় না বরং তার সাহায্যে উপকার গ্রহণকারী ব্যক্তির নষ্ট মানসিকতার ইন্ট্রোডিউস ফুটে উঠে।
কথায় বলে, এক মাঘে ঠাণ্ডা যায় না। অর্থাৎ, ঝুকিপুর্ণ বার বার আসতে পারে। আর এ জন্য একই ব্যক্তির নিকট বারবার ছুটে যাওয়ার দরকার হতে পারে। এইজন্য আমাদের কর্তব্য উপকারী ফ্রেন্ডের যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া। তা না হলে পরবর্তীতে তার কাছ থেকে আর কল্যাণ পাবার প্রার্থনা থাকে না। আর যার যেমন তাকে তেমন গুরুত্ব দানের সাহায্যে আমরা তাদের সুপ্রবৃত্তিগুলোকে ফুটিয়ে তুলতে পারি। মানুষের মাঝে আছে একটি অনেক ভালো মন যা দিয়ে সমগ্র বিশ্বকে বিজয় করা যায়। আর এ ধরনের মানসিকতা তৈরি করে তোলা প্রত্যেক মানুষের সাধনা হওয়া উচিত। কল্যাণময় ব্যক্তির প্রতিদান দেওয়ার জন্য হবে হিতকর দিয়ে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, অবজ্ঞা বা নিন্দা দিয়ে নয়।
আরো পড়ুনঃ