প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুতি ও ধারনা লাভের জন্য দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বোর্ড ও সিলেট বোর্ড ২০২১
📌 প্রবাল দ্বীপ আমাদের পরিচিত, এই দ্বীপটি তৈরি করে নির্দিষ্ট পর্বের সদস্য। আবার সিলােমের ভিত্তিতেও প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে।
ক. স্পঞ্জোসিল কী?
খ. কর্ডাটা পর্বের সদস্যকে কেন মেরুদণ্ডী বলা হয়?
গ. প্রবাল তৈরিকারী প্রাণী পর্বের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি বিশ্লেষণ করাে।
ক) দেহের অভ্যন্তরে কোয়ানোসাইট কোষ দ্বারা আবৃত স্পঞ্জোসিল (Spongocoel) নামক প্রশস্ত গহ্বর বর্তমান যা অসক্যুলাম (Osculum) নামক বড় আকারের ছিদ্রের মাধ্যমে বাহিরে উন্মুক্ত।
ক) গণ, প্রজাতি ও উপপ্রজাতি এই তিনটি পদের সমন্বয়ে গঠিত নামই হলাে ত্রিপদ নামকরণ।
(খ) কর্ডাটা পর্বের সদস্যকে মেরুদণ্ডী বলা হয় কারণ কর্ডাটা পর্বের অন্তর্ভুক্ত Vertebrata উপপর্বের কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার ফলে কর্ডাটা পর্বের সদস্যকে মেরুদণ্ডী বলা হয়। বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
১: নটোকর্ড কোমলাস্থি বা অস্থি নির্মিত মেরুদণ্ড দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।
২- পৃষ্ঠীয় স্নায়ুরজ্জর সম্মুখপ্রান্ত রূপান্তরিত হয়ে মস্তিষ্ক গঠন করে এবং বাকি অংশ সুষুম্নাকাণ্ডে পরিণত হয়। কঙ্কাল সম্মুখপ্রান্তে পরিবর্তিত হয়ে করােটি গঠনের মাধ্যমে মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখে।
গ) উদ্দীপকের প্রবাল তৈরিকারী প্রাণীর পর্ব হলাে Porifera. নিচে প্রাণী পর্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলােচনা করা হলাে-
১. দেহপ্রাচীর Ostia (অস্টিয়া) নামক অসংখ্য ছিদ্রযুক্ত।
২. সরলতম বহুকোষী প্রাণী।
৩. দেহে সুগঠিত কলা, অঙ্গ বা তন্ত্র অনুপস্থিত।
৪. দেহে বিশেষ ধরনের নালিতন্ত্র উপস্থিত যার সাহায্যে অভ্যন্তরীণ পরিবহন ঘটে।
৫. অন্তঃকঙ্কাল CaCO2 বা সিলিকা নির্মিত স্পিকিউল বা এক ধরনের ফাইব্রাস প্রােটিনে তৈরি স্পঞ্জিন অথবা উভয়ের সমন্বয়ে গঠিত পূর্ণাঙ্গ অবস্খায় নিশ্চল অর্থাৎ কোনাে বস্তুর সাথে স্থায়ীভাবে যুক্ত থাকে।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকের শেষ বাক্য হিসেবে সিলােম নির্দেশ করা হয়েছে। সিলোম প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাসে বিশেষ ভূমিকা রাখে। কেননা সিলােমের উপস্থিতি, অনুপস্থিতি ও প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে প্রাণীদের তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। নিচে প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাসে সিলােমের ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হলাে-
১. সিলােমবিহীন প্রাণী : এদের সিলােম থাকে না। দেহগহ্বর মেসেনকাইম ও পেশি দ্বারা পূর্ণ থাকে। উদাহরণ- Porifera, Cnidaria, Platyhelminthes পর্বের প্রাণী ।
২. অপ্রকৃত সিলােমযুক্ত প্রাণী : এদের দেহগহ্বর মেসােডার্মাল পেরিটোনিয়াম দ্বারা সুস্পষ্টভাবে আবৃত থাকে না। দেহ গহ্বরের চারদিকে পেশিস্তর বিদ্যমান। থাকে। উদাহরণ- Nematoda,Acanthocephala, Rotifera, Entroprocta পর্বের প্রাণী।
৩. প্রকৃত সিলােমযুক্ত প্রাণী ; এদের দেহগহ্বর মেসােডার্মাল পেরিটোনিয়াম আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে। এক্ষেত্রে দেহপ্রাচীর ও পৌষ্টিকনালি সংলগ্ন আবরণীকে যথাক্রমে প্যারাইটাল ও ভিসেরাল আবরণী বলে। উদাহরণ- Mollusca, Annelida, Echinodermata ও Chordata পর্বের প্রাণী।
জীববিজ্ঞান ঃ প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
বরিশাল বোর্ড ২০২১
📌 প্রাণিজগতে প্রানীদের শনাক্তকরণে সিলোম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। তাছাড়া প্রতিসাম্যতাও প্রাণী শনাক্তকরণে জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন প্রাণীতে ভিন্ন ভিন্ন ধরণের প্রতিসাম্যতা পরিলক্ষিত হয়।
ক) ক্লিভেজ কি?
খ ) হিমোসিল বলতে কি বুঝ?
গ) উদ্দীপকের প্রথোমাংশের বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে প্রাণী জগতের শ্রেণী বিন্যাস কর।
ঘ) উদ্দীপকের শেষোক্ত উক্তিটি বিশ্লেষন কর।
ক যৌন জননকারী প্রাণীর জাইগােটের বহু বিভাজনই হলাে ক্লিভেজ।
খ.ভূণীয় বিকাশের সময় প্রকৃত সিলােমের প্রাচীর ফেটে গিয়ে ব্লাস্টোসিলের সাথে একাকার হয়ে যায় এবং পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে ঐ সংযুক্ত গহ্বর পেরিটোনিয়াম নামক পর্দায় আবৃত থাকে না। এরকম সিলােমকে হিমােসিল বলে। এটি রক্তপূর্ণ থাকে তাই রক্তপূর্ণ দেহগহ্বরকে হিমােসিল বলে। ঘাসফড়িং এর হিমােসিল দুটি অণুপ্রস্থ পর্দা দিয়ে তিনটি প্রকোষ্ঠ বা সাইনাসে বিভক্ত। হিমােসিল দেহের বিভিন্ন অঙ্গ, রক্ত ও লসিকা ধারণ করে। এর মাধ্যমে খাদ্যরস ও বর্জ্য বস্তু পরিবাহিত হয়।
(গ) উদ্দীপকে প্রাণীদের শনাক্তকরণে প্রথমােক্ত বৈশিষ্ট্য হলাে সিলােম। নিম্নে সিলােমের ওপর ভিত্তি করে প্রাণীদের শ্রেণিবিন্যাস প্রদান করা হলাে-
১. অ্যাসিলােমেট : এদের দেহে সিলােম থাকে না। দেহগহ্বর মেসেনকাইম ও পেশি দ্বারা পূর্ণ থাকে। যেমন- ফিতাকৃমি ।
২. স্যুডােসিলােমট : এসব প্রাণীর দেহগহ্বর মেসােডার্মাল পেরিটোনিয়াম দ্বারা আবৃত থাকে না। দেহগহ্বরের চারিদিকে পেশিস্তর বিদ্যমান। যেমন— গােলকৃমি ।
৩. ইউসিলােমেট : এরা প্রকৃত সিলােমযুক্ত প্রাণী কারণ এদের দেহগহ্বর মেসােডার্মাল এপিথেলিয়াল কোষে। গঠিত পেরিটোনিয়াম স্তরে সম্পূর্ণ বেষ্টিত থাকে। যেমন- রুইমাছ।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকে বিভিন্ন প্রাণীতে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিসাম্যতা দেখা যায় । বিভিন্ন প্রাণীর ওপর ভিত্তি করে প্রতিসাম্যতার প্রকারভেদ নিম্নরূপ –
প্রতিসাম্যতা : অক্ষের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রাণিদেহের বিভিন্ন অংশে সুষম বণ্টনকে প্রতিসাম্য বলে ।
দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসাম্য : যখন কোনাে প্রাণিদেহকে কেন্দ্রীয় অক্ষ বরাবর লম্বালম্বিভাবে কেবল একবার দুটি সমান অংশে ভাগ করা যায় তখন তাকে দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসাম্য বলে। যেমন : Arthropoda, Chordata.
অরীয় প্রতিসাম্য : যখন কোনাে প্রাণিদেহকে কেন্দ্রীয় অক্ষ বরাবর যেকোনাে তলে সমান অংশে বিভক্ত করা যায় তখন তাকে অরীয় প্রতিসাম্য বলে। যেমন : Cnidaria ও Ctenophora.
দ্বি-অরীয় প্রতিসাম্য : যখন কোনাে প্রাণিদেহকে উহার মৌখিক ও এর।বিপরীত অক্ষ বরাবর দুটি তলে সমানভাবে বিভক্ত করা যায় তখন তাকে দ্বি-অরীয় প্রতিসাম্য বলে। যেমন : Ctenophora ও Anthozoa.
গােলীয় প্রতিসাম্য : যখন কোনাে গােলাকার জীবদেহকে উহার কেন্দ্র বরাবর যে কোনাে তলে সমান ও সদৃশ অংশে ভাগ করা যায় তাকে গােলীয় প্রতিসাম্য বলে। যেমন : Volvox।
অপ্রতিসাম্য ; যখন কোনাে প্রাণিদেহকে উহার কেন্দ্রীয় অক্ষ বা অন্য কোনাে তলে সমানভাবে বিভক্ত করা যায় না তখন তাকে অপ্রতিসাম্য বলে । যেমন : Pila globasa.
বায়োলজিঃ প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
ঢাকা বোর্ড ২০২১
📌 হানিফ স্যার জীববিজ্ঞান গবেষণাগারে সংরক্ষিত কতগুলি প্রাণী যথা- ফিতাকৃমি, গােলকৃমি, চিংড়ি ও ইলিশ মাছ ছাত্রদের দেখিয়ে এগুলাের শ্রেণিবিন্যাস ব্যাখ্যা করলেন।
ক. শ্রেণিবিন্যাস কী?
খ. প্রজাতি বৈচিত্র্য বলতে কী বােঝ?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত তৃতীয় প্রাণীটির পর্বের শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য লেখাে।
ঘ. উদ্দীপকের শেষােক্ত প্রাণীটি অন্যান্য প্রাণী অপেক্ষা উন্নত-ব্যাখ্যা করাে।
ক) আকৃতিগত ও প্রকৃতিগত পারস্পরিক সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট রীতি অনুযায়ী প্রাণীদের Kingdom, Phylum, Class, Order, Family, Genus এবং Species দলভুক্ত করার পদ্ধতিই হলাে শ্রেণিবিন্যাস।
খ বিভিন্ন প্রজাতির সংখ্যা যা একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও অঞ্চলে একসঙ্গে বসবাস করে তাকে প্রজাতি বৈচিত্র্য বলে। জীববৈচিত্র্যের মৌলিক ধাপ হলাে প্রজাতি বৈচিত্র্য। ভাইরাসসহ পৃথিবীর সকল প্রজাতির জীব এই প্রজাতি বৈচিত্র্যের অন্তর্ভুক্ত। প্রজাতি বৈচিত্র্য বেশি হলে সে অঞলকে জীববৈচিত্র্যের হট স্পট বলে।
গ) উদ্দীপকের তৃতীয় প্রাণীটি হলো চিংড়ি । এটি Arthropoda পর্বের অন্তর্ভুক্ত। এর শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্যগুলাে নিম্নরূপ-
১. দেহ দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম, সন্ধিযুক্ত উপাংগ বিশিষ্ট।
২. মস্তকে এক বা দুই জোড়া অ্যান্টেনা বিদ্যমান।
৩. বহিঃকঙ্কাল কাইটিনময় ও নিয়মিত মােচিত হয় ।
৪, পৌষ্টিকতন্ত্র সম্পূর্ণ ও রক্ত সংবহনতন্ত্র উন্মুক্ত।
৫. রেচন অঙ্গ মালপিজিয়ান নালিকা ।
৬. অন্তঃনিষেক সম্পন্ন হয় এবং রূপান্তর ঘটে ।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
(ঘ) উদ্দীপকের শেষােক্ত প্রাণীটি হলাে ইলিশ মাছ যা Chordata পর্বের প্রাণী। আর অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে ফিতাকৃমি, গােলকৃমি ও চিংড়ি হলাে Non-Chordata পর্বের। তাই Chordata পর্বের ইলিশ মাছ Non- Chordata পর্বের প্রাণীগুলাে অপেক্ষা উন্নত কারণ-
১. Chordates দের নটোকর্ড থাকে, কিন্তু Non-Chordates-এদের নটোকর্ড থাকে না।
২. কোনাে কোনাে Chordates-দের নটোকর্ড মেরুদণ্ডে এবং স্নায়ুরজ্জু সুষুম্নাকাণ্ডে পরিণত হয়। Non-Chordate-এ এরূপ হয় না ।
৩. Chordate এর গলবিলীয় ফুলকা ও এন্ডােস্টাইল থাকে কিন্তু Non-Chordates দের থাকে না।
৪. Chordates-দের রক্ত সংবহনতন্ত্র উন্নত ধরনের কিন্তু Non- Chordates-দের রক্ত সংবহনতন্ত্র থাকলেও অনুন্নত ধরনের।
৫. Chordates-দের হৃৎপিণ্ড উন্নত ধরনের এবং অঙ্কীয়দেশে অবস্থান করে। Non-Chordates-দের হৃৎপিণ্ড থাকলেও তা পৃষ্ঠদেশে অবস্থান করে এবং অনুন্নত প্রকৃতির।
৬. শ্রেণিবিন্যাসের ধারাবাহিকতায় দেখা যায় যে, যে সকল পর্ব নিচের দিকে অবস্থান করে তারা উন্নত ধরনের, আর যে সকল পর্ব উপরের দিকে সে সকল পর্ব অনুন্নত ধরনের।
অতএব, উপরােক্ত আলােচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ইলিশ মাছ Chordata পর্বের তাই Non-Chordata পর্বের প্রাণী ফিতাকৃমি, গােলকৃমি ও চিংড়ি অপেক্ষা উন্নত।
অনুসরণ করোঃ প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
চট্টগ্রাম বাের্ড ২০২১
📌
ক. নেফ্রিডিয়া কী?
খ. অপ্রকৃত সিলােমযুক্ত প্রাণী বলতে কী বােঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাণী পর্ব দুটির বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করাে।
ঘ. উদ্দীপকের প্রাণী দুটি মেরুদণ্ডী নয় কেন? বিশ্লেষণ করাে।
ক) Annelida পর্বের প্রাণীদের রেচন অঙ্গাই হলাে নেফ্রিডিয়া।
খ) যেসব প্রাণী সিলােমবিহীন তবে ভ্রূণীয় পরিস্ফুটনের সময় অন্তঃস্থ ফাকা স্থানটিকে ঘিরে কখনও কখনও মেসােডার্মাল কোষস্তর অবস্থান করে তাদের সিউডােসিলােমেট প্রাণী বলে। কিন্তু কোষগুলাে কখনও পূর্ণ কোষস্তর বা পেরিটোনিয়াম সৃষ্টি করে ব্লাস্টোসিলকে সম্পূর্ণ বেষ্টন করে না।
গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত “ক” প্রাণীটি Arthropoda এবং “খ” প্রাণীটি Mollusca পর্বের। নিচে Arthropoda ও Mollusca পর্বের বৈশিষ্ট্য প্রদান করা হলাে-
Arthropoda: আর্থোপােডা পর্বের বৈশিষ্ট্যগুলাে উল্লেখ করা হলাে-
১. এদের দেহ সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গবিশিষ্ট। দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসম,খণ্ডকায়িত এবং ট্যাগমায় বিভক্ত।
২. মস্তিষ্কে একজোড়া বা দু’জোড়া অ্যান্টেনা ও সাধারণত একজোড়া পুঞ্জাক্ষি থাকে।
৩. বহিঃকঙ্কাল কাইটিন নির্মিত।
৪. সিলােম সংক্ষিপ্ত এবং অধিকাংশ দেহগহ্বর রক্তে পূর্ণ হিমােসিল।
৫. রক্ত সংবহনতন্ত্র উন্মুক্ত।
৬. রেচন অঙ্গ মালপিজিয়ান নালিকা।
Mollusca: মলাস্কা পর্বের বৈশিষ্ট্যগুলাে উল্লেখ করা হলাে-
১. এ পর্বের প্রাণীদের দেহ অপ্রতিসম বা দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম।
২. দেহ নরম ও অখণ্ডয়িত।
৩. দেহ সাধারণত এক বা একাধিক খােলক দ্বারা আবৃত।
৪. দেহের অঙ্কীয় দিকে পেশিযুক্ত পদ বিদ্যমান যা চলন, গর্ত করা বা সাঁতারের জন্য বিভিন্নভাবে অভিযােজিত ।
৫. রক্ত সংবহনতন্ত্র অর্ধমুক্ত ধরনের অর্থাৎ রক্তনালি ও হিমােসিল উভয়ই থাকে।
৬. ফুলকা বা ম্যান্টল পর্দা দ্বারা শ্বসন সম্পন্ন হয়, স্থলচরদের ক্ষেত্রে পালমােনারি থলির বিকাশ ঘটে ।
৭. রক্তে হিমােসায়ানিন ও অ্যামিবােসাইট কণিকা থাকে।
৮. মলাস্কাজাতীয় প্রাণী ভিন্ন লিঙ্গবিশিষ্ট এবং ডিম পাড়ে।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
(ঘ) উদ্দীপকের প্রাণী দুটি মেরুদণ্ডী নয়। কারণ এরা Non-chordata এর অন্তর্ভুক্ত। Non-chordata প্রাণীদের অমেরুদণ্ডী বলা হয়।তা অমেরুদণ্ডী প্রাণীর দেহে স্নায়ুরজ্জু নিরেট প্রকৃতির দেহের অঙ্কীয় দেশে অবস্থিত। দেহ অপ্রতিসম বা অরীয় প্রতিসম। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসাম্যতা দেখা যায়। হিমােগ্লোবিন রক্তরসে দ্রবীভূতল। অবস্থায় থাকে। অমেরুদণ্ডী প্রাণীর মস্তিষ্ক করােটি দিয়ে আবৃত থাকে না, অন্তঃঅঙ্কাল থাকে না, থাকলেও অস্থি ও তরুণাস্থি দিয়ে তৈরি নয়। পক্ষান্তরে মেরুদণ্ডী প্রাণীর দেহে স্নায়ুরজ্জ্ব থাকে ফাপা এবং দেহের পৃষ্ঠদেশে,অবস্থিত। দেহ সাধারণত দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসাম্যতা প্রদর্শন করে। হৃৎপিণ্ড দেহের অঙ্কীয় দেশে অবস্থিত। হিমােগ্লোবিন সবসময়লােহিত কণিকার অভ্যন্তরে থাকে। মস্তিষ্ক করােটির অভ্যন্তরে সুরক্ষিত থাকে। অন্তঃঅঙ্কাল অস্থি ও তরুণাস্থি দিয়ে গঠিত।
জীববিজ্ঞান ২য় পত্রঃ প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
বরিশাল বোর্ড ২০২১
📌
ক | খ | গ |
কেঁচো | তারামাছ | গিনিপিগ |
ক. ICZN এর পূর্ণরূপ লেখাে।
খ. প্রজাতি বৈচিত্র্য বলতে কী বােঝ?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘খ’ প্রাণীটির পর্বগত বৈশিষ্ট্য লেখাে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত “গ” প্রাণীটি “ক” প্রাণী থেকে উন্নতর-বিশ্লেষণ করাে।
ক) International Commission on Zoological Nomenclature./ International Code of Zoological Nomenclature.
খ ভিন্ন প্রজাতির প্রাণীদের মধ্যে বিদ্যমান বৈচিত্র্যকে প্রজাতিগত বৈচিত্র্য বলে। বাঘ ও সিংহ একই গণের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখা যায়। যেমন, : বাঘ Panthera tigris ও সিংহ Panthera leo।
(গ) উদ্দীপকে “খ” হলাে তারামাছ যা Echinodermata পর্বের একটি প্রাণী ।
Echinodermata পর্বের বৈশিষ্ট্য :
১. দেহ পঞঅরীয় প্রতিসম, তারকাকার, চাকতির মতাে।
২. দেহ কন্টকময়, স্পাইন ও পেডিসিলারি নামক বহিঃকঙ্কালযুক্ত।
৩. দেহ মৌখিক ও বিমৌখিকতলে বিন্যস্ত। মৌখিকতলে পাঁচটি অ্যাম্বুল্যাক্রাল খাদ উপস্থিত ।
৪. দেহের ভেতরে ‘সিলােম থেকে সৃষ্ট অনন্য গড়নের পানি সংবহনতন্ত্র রয়েছে। এর সংশ্লিষ্ট নালিকাপদ এদের চলন অঙ্গ ।
৫. রক্ত সংবহনতন্ত্র অনুপস্থিত তবে হিমাল ও পেরিহিমালতন্ত্র সংবহনতন্ত্রের কাজ করে।
৬. রেচনতন্ত্র নেই।
৭. এরা সামুদ্রিক ।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকের “গ” হলাে গিনিপিগ যা Mammalia শ্রেণির Chordata পর্বের একটি প্রাণী এবং “ক” হলাে কেঁচো যা Annelida পর্বের Nonchordata-র অন্তর্গত একটি প্রাণী। এদের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় “গ” অর্থাৎ গিনিপিগ প্রাণীটি “ক” অর্থাৎ কেঁচো প্রাণী হতে উন্নত। নিম্নে বৈশিষ্ট্যগুলাে দেওয়া হলাে-
“গ” অর্থাৎ গিনিপিগ এর বৈশিষ্ট্য-
১. দেহত্বক বিভিন্ন গ্রন্থিযুক্ত (ঘর্মগ্রন্থি, সেবাসিয়াস ইত্যাদি) এবং লােম-এ আবৃত।
২. পরিণত স্ত্রী প্রাণীর কার্যকরী স্তনগ্রন্থি থেকে ক্ষরিত মাতৃদুগ্ধে নবজাতক লালিত হয়।
৩, বহিঃকর্ণে পিনা ও মধ্যকর্ণে তিনটি ক্ষুদ্রাস্থি থাকে। চোয়াল বিভিন্ন ধরনের দাতযুক্ত।
৪. মাংসল ডায়াফ্রাম বা মধ্যচ্ছদা দিয়ে বক্ষ ও উদর গহ্বর পৃথক থাকে।
৫. এদের হৃৎপিণ্ড মসৃণ চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট এবং এরা সমােষ্ণ শােনিত।
৬. পরিণত লােহিত রক্তকণিকা নিউক্লিয়াসবিহীন।
“ক” অর্থাৎ কেঁচোর বৈশিষ্ট্য :
১. দেহ লম্বা, নলাকার, দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম, এপিথেলিয়াম নিঃসৃত পাতলা কিউটিকল এ আবৃত।
২. প্রকৃত সিলােমযুক্ত।
৩, প্রকৃত খণ্ডকায়ন উপস্থিত, আংটির মতাে অনেকগুলাে একই রকম খণ্ডক নিয়ে দেহ গঠিত। এদের চলন অঙ্গা কাইটিনময় সিটা বা প্যারাপােডিয়া।
৪. দেহের প্রায় প্রতিটি খণ্ডকে অবস্থিত নেফ্রিডিয়া নামক প্যাচানাে নালিকা প্রধান রেচন অঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
৫. রক্ত সংবহনতন্ত্র বদ্ধ প্রকৃতির, রক্তের বর্ণ লাল।
৬. পৌষ্টিকনালি নলাকার ও সম্পূর্ণ, মুখ ও পায়ুছিদ্র সমন্বিত।
উপরিউল্লিখিত বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে দেখা যায় গ প্রাণীটি ক প্রাণী হতে উন্নত।
বায়োলজি ২য় পত্রঃ প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
রাজশাহী বোর্ড ২০১৯
📌 করিম পুকুরে জাল ফেললে তার জালে মাছ ছাড়াও শামুক ও ব্যাঙ ধরা পড়লাে ।
ক) প্রজাতি কী?
খ) দ্বিপদ নামকরণ বলতে কি বুঝ?
গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাণীগুলাের মধ্যে অপ্রতিসম প্রাণীটির পর্বভিত্তিক বৈশিষ্ট্যগুলাে উল্লেখ কর।
ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাণীগুলাের মধ্যে কোন কোনটি একই পর্বের হলেও শ্রেণিগতভাবে ভিন্ন ? বিশ্লেষণ কর ।
ক শ্রেণিবিন্যাসের সর্বনিম্ন ধাপ ও মৌলিক একককে প্রজাতি বলে ।
খ নামকরণের আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে কোনাে জীবের নামকরণে প্রথমে গণের নাম এবং পরে প্রজাতির নাম ব্যবহার করে দুই শব্দের সমন্বয়ে যে নামকরণ করা হয়ে থাকে তাকে দ্বিপদ নামকরণ বলে।
খ) সুইডিস বিজ্ঞানী ক্যারােলাস লিনিয়াস ১৭৫৮ সালে দ্বিপদ নামকরণের নীতিমালা প্রবর্তন করেন। যেমন- মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo sapiens। এক্ষেত্রে Homo হলাে মানুষের গণ-এর নাম এবং sapiens হলাে মানুষের প্রজাতি নামের নির্দেশক।
গ) উদ্দীপকের করিমের প্রাপ্ত প্রাণীগুলাের মধ্যে শামুক হলাে অপ্রতিসম প্রাণী যা মলাস্কা পর্বের অন্তর্ভুক্ত। নিচে মলাস্কা পর্বের বৈশিষ্ট্যগুলাে উল্লেখ করা হলাে-
১. এ পর্বের প্রাণীদের দেহ অপ্রতিসম বা দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম ।
২. দেহ নরম ও অখণ্ডায়িত।
৩. দেহ সাধারণত এক বা একাধিক খােলক দ্বারা আবৃত।
৪. দেহের অঙ্কীয়, দিকে পেশিযুক্ত পদ বিদ্যমান যা চলন, গর্ত করা বা সাঁতারের জন্য বিভিন্নভাবে অভিযােজিত।
৫. রক্ত সংবহনতন্ত্র অর্ধমুক্ত ধরনের অর্থাৎ রক্তনালি ও হিমােসিল উভয়ই থাকে।
৬. ফুলকা বা ম্যান্টল পর্দা দ্বারা শ্বসন সম্পন্ন হয়, স্থলচরদের ক্ষেত্রে পালমােনারি থলির বিকাশ ঘটে।
৭. রক্তে হিমােসায়ানিন ও অ্যামিবােসাইট কণিকা থাকে।
৮. মলাস্কাজাতীয় প্রাণী ভিন্ন লিঙ্গবিশিষ্ট এবং ডিম পাড়ে।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ উদ্দীপকের উল্লেখিত মাছ, শামুক ও ব্যাঙ এর মধ্যে শামুক মলাস্কা পর্বের প্রাণী এবং মাছ ও ব্যাঙ কর্ডাটা পর্বের Vertebrata উপপর্বের প্রাণী। মাছ ও ব্যাঙ একই পর্বের হলেও এরা শ্রেণিগতভাবে ভিন্ন। এর কারণ হলাে প্রাণী দুটির মধ্যকার বৈশিষ্ট্যের বৈসাদৃশ্য। আমরা জানি,জীবজগতের শ্রেণিবিন্যাস সাধারণত ক্রমান্বয়ে অনুন্নত থেকে উন্নত জীবের দিকে ধাবিত হয়। এক্ষেত্রে প্রাণীদের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস করা হয়ে থাকে। এ সময় শ্রেণিবিন্যাসের রীতি অনুযায়ী বৈশিষ্ট্যের বিচারে অনুন্নত জীবগুলাে শ্রেণিবিন্যাসের প্রথম দিকে এবং উন্নত জীবগুলাে শ্রেণিবিন্যাসের শেষের দিকে থাকে।
উদ্দীপকে মাছ ও ব্যাঙ কর্ডাটা পর্বের হলেও মাছ অ্যাকটিনােপটেরিজি শ্রেণির এবং ব্যাঙ অ্যামফিবিয়া শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ।মাছের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এদের অন্তঃকঙ্কাল অস্থি নির্মিত; দেহ সাধারণত গ্যানয়েড, সাইক্লয়েড অথবা টিনয়েড ধরনের আঁইশ দ্বারা আবৃত; কিছু কিছু মাছ, আঁইশবিহীন, যেমন- শিং, মাগুর, টেংরা প্রভৃতি; মুখছিদ্র মস্তকের সম্মুখভাগে অবস্থিত; লেজের পাখনা দ্বিধা বিভক্ত ও সমান; শ্বসন অঙ্গে চার জোড়া ফুলকা কানকো দ্বারা আবৃত; পুচ্ছ পাখনা হােমােসাকাল ধরনের; দেহের অভ্যন্তরে পটকা থাকে। অন্যদিকে ব্যাঙের ত্বক নগ্ন, সিক্ত ও গ্রন্থিময়; হৃৎপিণ্ড তিন প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট; অগ্রপদে ৪টি ও পশ্চাৎপদে ৫টি করে নখরবিহীন আঙ্গুল থাকে; লার্ভা ফুলকা এবং পরিণত দশা ফুসফুস, ত্বক ও মুখবিবরের গলবিলীয় মিউকাস পর্দার সাহায্যে শ্বাসকার্য চালায়।উপরােক্ত বৈশিষ্ট্যের বৈসাদৃশ্যের কারণেই মাছ ও ব্যাঙ একই পর্বের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও আলাদা শ্রেণিতে স্থান পেয়েছে।
কমন পেতে ফলোঃ প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
ঢাকা বোর্ড ২০২১
📌 নিচের চিত্রগুলাে লক্ষ করাে এবং প্রশ্নগুলাের উত্তর দাও:
ক. প্রতিসাম্যতা কী?
খ. ত্রিপদ নামকরণ বলতে কী বােঝ?
গ. উদ্দীপকের ‘A’ চিত্রে উল্লিখিত প্রাণীর দর্শন এককের সচিত্র গঠন বর্ণনা করাে।
ঘ. উদ্দীপকের B ও C চিত্রে প্রাণী দুটি একই উপপর্বভুক্ত হলেও একই শ্রেণিভুক্ত নয়- বিশ্লেষণ করাে।
ক প্রাণিদেহের মধ্যরেখীয় তলের দুই পাশে সদৃশ বা সমান আকারবিশিষ্ট অংশের অবস্থানই হলাে প্রতিসাম্যতা।
খ জীবের নামকরণের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী গণ, প্রজাতি ও উপপ্রজাতি এই ৩টি পদের সমন্বয়ে বৈজ্ঞানিক নাম প্রদান করাকে ত্রিপদ নামকরণ বলে। পাখি বিজ্ঞানী Schlegel (1844) সালে প্রথম ত্রিপদ নামকরণ প্রণয়ন করেন। যেমন– Passer domestics niloticus.
গ) উদ্দীপকে A চিত্রের প্রাণীটি হলাে Arthropoda পর্বের ঘাসফড়িং এর দর্শন একক হলাে ওমাটিডিয়াম। নিচে ওমাটিডিয়ামের গঠন চিত্রসহ বর্ণনা করা হলাে-
১. কর্নিয়া : ওমাটিডিয়ামের সবচেয়ে বাইরের দিকের স্বচ্ছ, উত্তল ও ছয়কোণাকার কিউটিকলের আবরণী । এটি ল্যান্সের মতাে কাজ করে।
২. কর্নিয়াজেন কোষ : কর্নিয়ার নিচের একজোড়া চাপা কোষ ।
৩. ক্রিস্টালাইন কোষ : স্বচ্ছ মােচাকৃতির অঙ্গ। এটি আলােক প্রতিসরণশীল অঙ্গ ।
৪. ক্রিস্টালাইন, কোণ কোষ : ক্রিস্টালাইন কোণকে ঘিরে অবস্থানকারী ৪টি কোষ।
৫. ‘আইরিশ রঞ্জক আবরণী ; এগুলাে কালাে বর্ণের দীর্ঘ কোষ ( তীব্র আলােতে ওমাটিডিয়ামকে আবৃত করে রাখে)।
৬. রেটিনুলার কোষ : কোণ কোষগুলাের নিচে ৭/৮টি বৃত্তাকার সজ্জিত কোষগুলােকে রেটিনুলার কোষ বলে। এগুলাে আলােকে সংবেদী কোষ।
৭. র্যাবড়ােম : ক্রিস্টালাইন কোণের নিচে অবস্থিত, স্বচ্ছ, প্রলম্বিত, রেখান্বিত অংশ। একে ঘিরে অবস্থিত রেটিনুলার কোষগুলাের ক্ষরণ থেকেই র্যাবড়ােম গঠিত ও পুষ্ট হয়।
৮, রেটিনাল রঞ্জক আবরণী : রেটিনুলার কোষকে ঘিরে রঞ্জকময় কোষের কালাে আবরণী ।
৯ ভিত্তিপর্দা : ওমাটিডিয়াম অবস্থানকারী পাতলা আবরণ। এটি ওমাটিডিয়ামকে ধারণ করে।
১০. স্নায়ুতন্তু : রেটিনুলার কোষ থেকে সৃষ্ট স্নায়ুতন্তু যা অপটিক স্নায়ুর সাথে যুক্ত।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ ) উদ্দীপকে উল্লিখিত B প্রাণীটি হলাে (Scoliodon) হাঙ্গর এবং C প্রাণীটি ইলিশ (Tenualosa)। এই দুটি প্রাণী vertebrata উপপর্বের হলেও তারা একই শ্রেণিভুক্ত নয়। Chondrichthyes শ্রেণির এবং C (ইলিশ) প্রাণীটি Actinopterygii শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
উদ্দীপকের B ও C প্রাণী দুটি একই শ্রেণিভুক্ত না হওয়ার কারণ-
B প্রাণীটি হাঙর যা Chondrichthyes শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। আর এই শ্রেণির বৈশিষ্ট্যগুলাে হচ্ছে দেহে প্ল্যাকয়েড আঁইশ থাকে, অন্তঃকংকাল তরুণাস্থিময়, ৫-৭ জোড়া ফুলকা রশ্ম থাকে, লেজ হেটারােসার্কাল, চোয়ালে দাঁত থাকে। C প্রাণীটি ইলিশ যা Actinopterygii শ্রেণিভুক্ত।আর এই শ্রেণির বৈশিষ্ট্যগুলাে হচ্ছে দেহ সাইক্লয়েড ও টিনয়েড আইশে আবৃত। অন্তঃকঙ্কাল অস্থিময়, মাথার দুই পাশে একটি করে ফুলকা র থাকে, লেজ হােমােসাকাল ধরনের, চোয়ালে কোনাে দাঁত থাকে না।উপরােক্ত আলােচনার প্রেক্ষিতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, B ও C প্রাণী দুটি একই উপপর্বের হলেও একই শ্রেণিভুক্ত নয়।
সাজেশনঃ প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
যশোর বোর্ড ২০২১
📌
ক. ছিদ্রালু প্রাণী কী?
খ. প্রজাতিগত বৈচিত্র্য বলতে কী বােঝ?
গ. উদ্দীপকের ‘B’ চিহ্নিত প্রাণীটির উপ-পর্বের বৈশিষ্ট্য লেখাে ।
ঘ. উদ্দীপকে A ও C চিহ্নিত প্রাণী দুটি “একই পর্ব হলেও উপ-পর্ব ভিন্ন” —বিশ্লেষণ করাে।
ক Porifera পর্বের প্রাণীদের দেহের প্রাচীরে অসংখ্য ক্ষুদ্র ছিদ্র বিদ্যমান থাকায় এরাই ছিদ্রালু প্রাণী ।
খ ভিন্ন প্রজাতির প্রাণীদের মধ্যে বিদ্যমান বৈচিত্র্যকে প্রজাতিগত বৈচিত্র্য বলে। কখনােই দু’টি প্রজাতির প্রাণী একরকম হয় না। একই গণভুক্ত প্রজাতির মধ্যে ক্রোমােসােম সংখ্যা ও আঙ্গিক গঠনে যথেষ্ঠ পার্থক্য দেখা যায়। যেমন : বাঘ (Panthera tigris) ও সিংহ (Panthera Leo). একই গণের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখা যায় ।
গ) উদ্দীপকের ‘B’ চিহ্নিত প্রাণীটির উপপর্ব হলাে Cephalochordata. নিম্নে Cephalochordata উপপর্বের বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হলাে-
১. দেহ অর্ধস্বচ্ছ, সরু, পার্শ্বীয়ভাবে চাপা, লম্বা ও উভয়প্রান্ত সূঁচালাে ।
২. দেহ ৩-৭ সেন্টিমিটার লম্বা এবং দেহের দৈর্ঘ্য বরাবর প্রায় ৬০ জোড়া ‘>’ আকৃতির মায়ােটোম পেশি বিদ্যমান।
৩. এদের দেহের পৃষ্ঠ দিকে সম্মুখ থেকে পশ্চাৎ পর্যন্ত বিস্তৃত নটোকর্ড ও নার্ভকর্ড বিদ্যমান থাকে।
৪. অসংখ্য ওরাল সিরি সমৃদ্ধ একটি ওরাল হুড দ্বারা মুখছিদ্র পরিবৃত্ত থাকে।
৫. গলবিলের প্রাচীরে বিদ্যমান অসংখ্য ফুলকা ছিদ্র অ্যাট্রিয়াম গহ্বরে উন্মুক্ত হয় যা একটি অ্যাট্টিওপাের দ্বারা দেহের বাইরে মুক্ত হয়।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ উদ্দীপকের A ও C প্রাণী দুটির পর্ব Chordata হলেও এদের উপপর্ব ভিন্ন। উদ্দীপকের ‘A’ হলাে অমেরুদণ্ডী কর্ডেট এবং ‘C’ হলাে মেরুদণ্ডী কর্ডেট’। ‘A’ চিহ্নিত চিত্রের জীবটি হচ্ছে Ascidia যা Chordata পর্বের Urochordata উপপর্বের Ascidiacea শ্রেণির অন্তর্গত প্রাণী । Urochordata উপপর্বের প্রাণীদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এদের লার্ভা দশায় লেজ অঞলে নটোকর্ড থাকলেও পরিণত প্রাণীতে নটোকর্ড বিলুপ্ত হয়ে যায়।
এদের লার্ভা দশাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এদের লার্ভা দশায় লার্ভার লেজ অঞ্চলে নটোকর্ড বিদ্যমান থাকে। লার্ভা দশা হতে পরিণত প্রাণীতে রূপান্তরের সময় ধীরে ধীরে নটোকর্ডের বিলােপ ঘটে। তাই Ascidia-র পরিণত প্রাণীতে কোনাে নটোকর্ড থাকে না। এজন্য এদের বলা হয় অমেরুদণ্ডী Chordate। অন্যদিকে ‘C’ চিত্রের প্রাণীটি মাছ। মাছ Chordata পর্বের Vertebrata উপপর্বের Actinopterygii শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত প্রাণী। এই Vertebrata উপপর্বের সদস্যরা ভূণীয় জীবনে নটোকর্ড ধারণ করে। পরিণত বয়সে এ নটোকর্ড অস্থিময় বা তরুণাস্থিময় কশেরুকা বিশিষ্ট মেরুদণ্ড দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।
উপরােক্ত আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, প্রাণী দুটি একই পর্ব হলেও এদের উপপর্ব ভিন্ন।
বোর্ড প্রশ্ন সাজেশনঃ প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
ময়মনসিংহ বোর্ড ২০২১
📌 সাদিক তার কলেজের মিউজিয়ামে চিংড়ি মাছ, হাঙ্গর মাছ এবং রুই মাছ দেখলাে ।
ক. প্রজাতি কী?
খ, জীববৈচিত্র্য বলতে কী বােঝ?
গ. উদ্দীপকের প্রথম প্রাণীটির পর্বগত বৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।
ঘ. উদ্দীপকের শেষােক্ত প্রাণী দুটি একই পর্বভুক্ত হলেও আলাদা শ্রেণির বিশ্লেষণ করাে।
ক শ্রেণিবিন্যাসের সর্বনিম্ন ধাপ ও মৌলিক একক হলাে প্রজাতি।
খ পৃথিবীতে বিরাজমান জীবসমূহের জিনগত, প্রজাতিগত ও পরিবেশগত কারণে যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয় সামগ্রিকভাবে তাকে জীববৈচিত্র্য বলে। জীব বলতে অণুজীব, ছত্রাক, উদ্ভিদ ও প্রাণীকে বুঝায়। এরা একটি থেকে অপরটি ভিন্ন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত এবং পৃথকযােগ্য। কাজেই জীববৈচিত্র্যকে সাধারণত তিনটি পর্যায়ে আলােচনা করা যায়। যথা : জিনগত বৈচিত্র্য, প্রজাতিগত বৈচিত্র্য এবং ইকোসিস্টেমগত বৈচিত্র্য। এ তিন প্রকার বৈচিত্র্য মিলিতভাবে সৃষ্টি করে জীববৈচিত্র্য।
(গ) উদ্দীপকের প্রথম প্রাণীটি হলাে চিংড়ি মাছ। এটি Arthropoda পর্বের প্রাণী । নিচে Arthropoda পর্বের বৈশিষ্ট্য আলােচনা করা হলাে-
১. এ পর্বের প্রাণীদের দেহ দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম, ত্রিস্তরী, খণ্ডয়িত এবং টেগমাটায় (Tegmata) বিভক্ত।
২. দেহে সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ বর্তমান, মস্তকে একজোড়া বা দুই জোড়া অ্যান্টেনা ও একজোড়া পুঞ্জাক্ষী থাকে।
৩. মুখ সর্বদা বিভিন্ন প্রকার মুখােপাঙ্গ দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে।
৪. কিউটিকল নিয়ে বহিঃকঙ্কাল গঠিত, যা নির্দিষ্ট সময় পরপর পরিত্যক্ত হয়।
৫. সিলােম সংক্ষিপ্ত এবং হিমােসিলে রূপান্তরিত। সংবহনতন্ত্র উন্মুক্ত ধরনের।
৬. মালপিজিয়ান নালিকা প্রধান রেচন অঙ্গ। এ ছাড়াও রয়েছে কক্সাল গ্রন্থি ও অ্যান্টেনাল গ্রন্থি বা সবুজ গ্রন্থি।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকের শেষােক্ত প্রাণী দুটি হলাে হাঙ্গর মাছ এবং রুইমাছ। এরা একই পর্বের হলেও এরা আলাদা শ্রেণির । নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলাে-
হাঙ্গর মাছের বৈশিষ্ট্য :
১. দেহ অসংখ্য ক্ষুদ্র প্ল্যাকয়েড আঁইশে আবৃত।
২. অন্তঃকঙ্কাল সম্পূর্ণভাবে তরুণাস্থিময় ।
৩. মাথার দু’পাশে ৫-৭ জোড়া ফুলকারন্ধ্র পৃথকভাবে বাইরে উন্মুক্ত।
৪. পুচ্ছ পাখনা হেটারােসার্কাল ধরনের অর্থাৎ পুচ্ছ পাখনার অংশ দুটি অসমান।
এ সকল বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রাণীটি Chondrichthyes শ্রেণির অন্তর্গত।
রুইমাছের বৈশিষ্ট্য :
১. এদের অন্তঃকঙ্কাল অস্থিময় ।
২. ত্বক গ্রন্থিময় এবং সাধারণত সাইক্লয়েড বা টিনয়েড ধরনের আঁইশে আবৃত।
৩. মাথার দু’পাশে একটি করে ফুলকারন্দ্র অবস্থিত যা কানকো দিয়ে আবৃত।
৪. পৌচ্ছিক পাখনা হােমােসার্কাল ।
৫. এদের বায়ুথলি বা পটকা বিদ্যমান।
এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রাণীটি Actinopterygii শ্রেণির অন্তর্গত প্রাণী।
উপরের বৈশিষ্ট্যসমূহ পর্যালােচনা করলে দেখা যায় প্রাণীদ্বয় Vertebrata উপপর্বের যথাক্রমে Chondrichthyes ,Actinopterygii শ্রেণির প্রাণী। অর্থাৎ প্রাণী দুটির মধ্যে শ্রেণিতাত্ত্বিক ভিন্নতা রয়েছে। তবে উভয় প্রাণীই Chordata পর্বের।