শ্বসন ও শ্বাসক্রিয়া অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর(৫ম অধ্যায়) শ্বসন ও শ্বাসক্রিয়া অনুধাবনমূলক সাজেশন এইচএসসি জীববিজ্ঞান ২য় পত্রের জ্ঞানমূলক প্রশ্নের সাজেশন ও অনুশীলন হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
মানুষের শ্বসনতন্ত্র
প্রশ্ন ১। সারফেকট্যান্ট কেন ক্ষরণ হয়? [কু. বো, ‘১৯]
উত্তর : অ্যালভিওলাস ‘প্রাচীরের বিশেষ কিছু কোষ থাকে যারা প্রাচীরের অন্তঃতলে ডিটারজেন্ট এর মতো রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরণ করে। এ পদার্থকে সারফেকট্যান্ট বলে। এ পদার্থ অ্যালভিওলাস “প্রাচীরের তরল পদার্থের পৃষ্ঠটান কমিয়ে দেয়। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় ফুসফুস কম পরিশ্রমে সংকুচিত ও প্রসারিত হতে পারে। এ পদার্থ বাতাস ও অ্যালভিওলাস প্রাচীর সংলগ্ন তরল পদার্থ O2 ও CO2 এর দ্রুত বিনিময়ে সাহায্য করে। এ পদার্থ অ্যালভিওলাসে আগত জীবাণুও (ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে।
প্রশ্ন ২। সারফেকট্যান্ট বলতে কী বুঝ? (চ. বো, ১৫)
উত্তর : অ্যালভিওলাস-প্রাচীরের বিশেষ কিছু কোষ, থাকে যারা প্রাচীরের অন্তঃতলে ডিটারজেন্ট-এর মতো রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরণ করে। এ পদার্থকে সারফেকট্যান্ট বলে। এ পদার্থ অ্যালভিওলাস প্রাচীরের তরল পদার্থের পৃষ্ঠটান কমিয়ে দেয়। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় ফুসফুস কম পরিশ্রমে সংকুচিত ও প্রসারিত হতে পারে।
মানুষের শ্বসনতন্ত্র
প্রশ্ন ৩। শ্বসনতন্ত্রের অংশগুলির নাম ধারাক্রমে লেখ।
উত্তর : শ্বসনে অংশগ্রহণকারী অংশগুলো মিলিত হয়ে যে তন্ত্র গঠিতহয়, তাকে শ্বসনতন্ত্র বলে। মানব শ্বসনতন্ত্রের অংশগুলোর নাম ধারাক্রমে নিম্নরূপ — ১. সম্মুখ নাসারন্ধ্র ২. ভেস্টিবিউল, ৩. নাসাহগহ্বর, ৪. পশ্চাৎ নাসারন্ধ্র, ৫. নাসাগলবিল, ৬. স্বরযন্ত্র, ৭. শ্বাসনালি বা ট্রাকিয়া,৮. ব্রঙ্কাস, ৯. ফুসফুস, ১০. ব্রঙ্কিয়াল বা শ্বসন বৃক্ষ।
প্রশ্ন ৪। কোষীয় শ্বসন বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় জীব বায়ু থেকে আক্সিজেন (O2) গ্রহণ করে সেই এর সাহায্যে কোষস্থিত সরল খাদ্যকে জারিত করে খাদ্যস্থিত স্থিতিশক্তিকে গতিশক্তিতে রূপান্তর করে এবং এতে উৎপন্ন CO2 দেহ হতে বের করে দেয় তাকেই কোষীয় শ্বসন বলে। কোষীয় শ্বসন একটি জটিল প্রক্রিয়া। কোষীয় শ্বসন আবার দুই প্রকার। যথা— বহিঃশ্বসন এবং অন্তঃশ্বসন ।
মানুষের শ্বসনতন্ত্র
প্রশ্ন ৫। ফুসফুসকে একাধারে শ্বসন ও রেচন অঙ্গ বলা হয় কেন?
উত্তর : ফুসফুস একাধারে শ্বসন ও রেচন অঙ্গ। কারণ মানুষের বক্ষগহ্বরের দুপাশে দুটি ফুসফুস অবস্থিত। ফুসফুসের মাধ্যমে দেহ হতে সৃষ্টি CO2 নির্গত হয় এ কারণে ফুসফুস শ্বসন অঙ্গ অপর দিকেCO2 এক ধরনের বর্জ্য পদার্থ যা দেহের জন্য ক্ষতিকর। মানবদেহে বিপাকীয় ক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট CO2 ফুসফুসের মাধ্যমে দেহ হতে বেরিয়ে যায় এ দিক হতে ফুসফুসকে রেচন অঙ্গ ধরা যায়।
প্রশ্ন ৬। ব্রঙ্কিওল বৃক্ষের মতো দেখায় কেন?
উত্তর : ফুসফুসের লোবিউলের ভেতরে প্রান্তীয় ব্রঙ্কিওল বিভক্ত হয়ে শ্বসন ব্রঙ্কিওল গঠন করে। এছাড়াও ব্রঙ্কিওলগুলো অ্যালভিওলার নালি, অ্যাট্রিয়াম ইত্যাদি শাখা-প্রশাখার সৃষ্টি করে যা বৃক্ষের মতো দেখায়।
শ্বাসকার্য : প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস কার্যক্রম
প্রশ্ন ৭। এপিগ্লটিস এর কাজগুলো লেখ।
উত্তর : স্বরযন্ত্রের উপরিভাগে অবস্থিত জিহ্বাকৃতির ঢাকনাকে উপজিহ্বা বলে। উপজিহ্বাকে এপিগ্লটিসও বলা হয়। এটা তরুণাস্থি দ্বারা গঠিত। খাদ্যগ্রহণ করার সময় এপিগ্লটিস স্বরযন্ত্রকে ঢেকে রাখে যাতে খাদ্যকণা স্বরযন্ত্রে প্রবেশ করতে না পারে এবং খাদ্যকণা সরাসরি খাদ্যনালিতে প্রবেশ করে। যদি কোনো কারণবশত কোনো খাদ্যকণা শ্বাসনালির মধ্যে প্রবেশ করে, তবে দম বন্ধ হয়ে কাশি আরম্ভ হয় এবং খাদ্যদ্রব্য শ্বাসনালি হতে বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়। (এজন্য খাদ্যদ্রব্য মুখে রেখে কথা বলা অনুচিত।
প্রশ্ন ৮। শ্বসনে ডায়াফ্রাম ও বক্ষপিঞ্জর কিভাবে ভূমিকা রাখে?
উত্তর : ডায়াফ্রাম বক্ষ ও উদর গহ্বরের মাঝখানে এবং যকৃতের উপরে অনুপ্রস্থভাবে বিন্যস্ত একটি পেশির গঠন বিশেষ। এটি বহিঃশ্বসনের ক্ষেত্রে সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে শ্বসনে অংশগ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শ্বসনে বক্ষপিঞ্জর এর ভূমিকা : ডায়াফ্রামের কেন্দ্রীয় টেন্ডন নিম্নমুখে সঞ্চালিত হয়। বক্ষ গহ্বরের অনুদৈর্ঘ্য ব্যাস বাড়ে। নিম্নভাগের পর্শকা উপরে উঠে আসায় বক্ষ গহ্বরের পার্শ্বীয় এবং অগ্র পশ্চাৎ ব্যাস বাড়ে। এভাবেই বক্ষপিঞ্জর শ্বসনে ভূমিকা রাখে।
শ্বসন ও শ্বাসক্রিয়া অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর(৫ম অধ্যায়) শ্বসন ও শ্বাসক্রিয়া অনুধাবনমূলক সাজেশন
শ্বাসকার্য : প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস কার্যক্রম
প্রশ্ন ৯। স্বরযন্ত্রে শব্দ উৎপন্ন হয় কীভাবে?
উত্তর : নাসা গলবিলের পশ্চাতে ও ট্রাকিয়ার অগ্রপ্রান্তে পেশি ও নয়টি কোমল অস্থির সমন্বয়ে যে ত্রিকোণাকৃতির গহ্বর সৃষ্টি করে তাকে স্বরযন্ত্র বলে। স্বরযন্ত্রের অভ্যন্তরে ৬টি ভোকালকর্ড বিদ্যমান। এগুলো পৈশির সাথে যুক্ত থাকে। পেশি সংকুচিত হলে ভোকাল কর্ড টান টান হয়ে পরস্পরের সন্নিকটে আসে ফলে ফুসফুস থেকে বেরিয়ে আসা বাতাসের ধাক্কায় কম্পন সৃষ্টির মাধ্যমে শব্দ সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ১০। অ্যালভিওলাসের শ্বসনের সময় সংকোচন-প্রসারণ সহজ হয় কেন?
উত্তর : অ্যালভিওলাসের প্রাচীর আর্দ্র স্কোয়ামাস এপিথেলিয়াম নির্মিত। এতে কোলাজেন ও ইলাস্টিক তন্তু থাকে। ফলে শ্বসনের সময় এর সংকোচন-প্রসারণ সহজ হয়।
প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস নিয়ন্ত্রণ
প্রশ্ন ১১। প্রশ্বাস ও নিঃশ্বাস কেন্দ্র সাময়িক বন্ধ থাকে কেন?
উত্তর : প্রশ্বাসের কারণে ফুসফুস ফুলে উঠে, ব্রঙ্কিওলে অবস্থিত রিসেপ্টরগুলো সটান হয়, ফলে তা উদ্দীপ্ত হয়ে ভ্যাগাস স্নায়ুর মাধ্যমে আরও বেশি স্নায়ু উদ্দীপনা নিঃশ্বাস কেন্দ্রে প্রেরণ করে। এ সময় প্রশ্বাস ও নিঃশ্বাস কেন্দ্র সাময়িক বন্ধ থাকে।
শ্বাসরঞ্জক
প্রশ্ন, ১২। শ্বাসরঞ্জক বলতে কী বুঝ?
উত্তর : রক্তের যে অংশ দ্বারা শ্বসন গ্যাস, বিশেষ করে অক্সিজেন পরিবাহিত হয় তাকে শ্বাস রঞ্জক বলে। প্রাণিজগতের প্রধান চার ধরনের শ্বসন রঞ্জক হলো হিমোগ্লোবিন, হিমোসায়ানিন, হিমিইরিথ্রিন ও ক্লোরোকুরিন। মানুষের লোহিত রক্তকণিকায় বিদ্যমান লাল বর্ণের প্রোটিনধর্মী ভারী পদার্থ হিমোগ্লোবিন হলো শ্বাস রঞ্জক যা শ্বসনে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড পরিবহনে ভূমিকা রাখে।
প্রশ্ন ১৩। শ্বাসরঞ্জকের গঠন ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মানবদেহের একমাত্র শ্বাসরঞ্জক হলো হিমোগ্লোরিন। হিম (Fe’) এবং গ্লোবিন নামক চারটি প্রোটিন এর সমন্বয়ে এটি গঠিত। রক্তে হিম ও গ্লোবিন 1:25 অনুপাতে উপস্থিত থাকে। হিমের 33% হলো লৌহ।
শ্বাসরঞ্জক
প্রশ্ন ১৪। এক অণু হিমোগ্লোবিনে 4 অণু O2 থাকে কেন?
উত্তর : চারটি পলিপেপটাইড চেইন নিয়ে একটি হিমোগ্লোবিন অণু গঠিত। প্রতিটি পলিপেপটাইড চেইনে একটি ‘গ্লোবিন’ পলিপেপটাইড চেইন থাকে যা একটি ‘হিম’ গ্রুপের সাথে যুক্ত। প্রতিটি হিম গ্রুপের কেন্দ্রে অবস্থান করে একটি করে লৌহ অণু এবং এ প্রত্যেকটি লৌহ অণুর সাথে একটি করে অক্সিজেন অণু যুক্ত হয়ে থাকে। তাই দেখা যায় একটি হিমোগ্লোবিন অণু একসাথে চারটি অক্সিজেন অণু যুক্ত করতে পারে। তাই বলা যায়, এক অণু হিমোগ্লোবিনে 4 অণু O2 থাকে।
প্রশ্ন ১৫ । হিমোগ্লোবিনকে শ্বাস রঞ্জক বলা হয় কেন?
উত্তর : রক্তের লোহিত কণিকায় বিদ্যমান লাল বর্ণের প্রোটিনধর্মী ভারী পদার্থ হলো হিমোগ্লোবিন। হিমোগ্লোবিন শ্বসন গ্যাস অক্সিজেন পরিবহনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন (O2)পরিবহন করে বলে একে শ্বাস রঞ্জক বলা হয় । [ব, বো, ‘১৯]
শ্বাসনালি সমস্যা, লক্ষণ ও প্রতিকার
প্রশ্ন ১৬। সাইনুসাইটিস বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণে সাইনাসের মিউকাস ঝিল্লিতে সৃষ্ট প্রদাহকে সাইনুসাইটিস বলে। মাথার খুলিতে মুখমণ্ডলীয় অংশে নাসাগহ্বরের দুপাশে অবস্থিত বায়ুপূর্ণ চারজোড়া বিশেষ গহ্বরকে সাইনাস বলে। এসব সাইনাস যদি বাতাসের বদলে তরলে পূর্ণ থাকে এবং সে তরল যদি জীবাণুতে (ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক) সংক্রমিত হয় তখন সাইনাসের মিউকাস ঝিল্লিতে প্রদাহের বা সাইনুসাইটিস সৃষ্টি হয়।
ওটিটিস মিডিয়া
প্রশ্ন ১৭। ওটিটিস মিডিয়া বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : মধ্যকর্ণের সংক্রমণকে ওটিটিস মিডিয়া বলে। কানের পর্দা ও অন্তঃকর্ণের মাঝে বিদ্যমান ইউস্টিশিয়ান নালিতে ওটিটিস মিডিয়া হয়।
এই শ্বসন ও শ্বাসক্রিয়া অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর(৫ম অধ্যায়) শ্বসন ও শ্বাসক্রিয়া অনুধাবনমূলক সাজেশন ছাড়াও আরো জানতে ক্লিকঃ