সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র): শিক্ষার্থীরা তোমাদের বাংলা সহপাঠ সিরাজউদ্দৌলা নাটক এর সর্বশেষ বোর্ড প্রশ্ন উত্তরসহ এখানে দিয়েছি। আশাকরি তোমরা এখান থেকে প্রস্তুতি ও পরীক্ষার ধারণা নিতে পারবে।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

সাজেশন(উত্তর ছাড়া)

প্রশ্ন ১। “কত বড় শক্তি, তবু কত তুচ্ছ।” উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

আরো পড়ুনঃ

প্রশ্ন ২। “আমরা এমন কিছু করলাম যা ইতিহাস হবে।”উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।
প্রশ্ন ৩। “আমার শেষ যুদ্ধ পলাশিতেই।”– কেন?
অথবা, ‘আমার শেষ যুদ্ধ পলাশিতেই’ – উক্তিটি কে, কখন এবং কাকে করেছিলেন? ব্যাখ্যা কর।
প্রশ্ন ৪। “ভীরু প্রতারকের দল চিরকালই পালায়।”— এর তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
। “আমার সারা অস্তিত্ব জুড়ে কেবল যেন দেয়ালের ভিড়।”উক্তিটি সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা কর।

প্রশ্ন ৬। ট্র্যাজেডি হিসেবে সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
প্রশ্ন ৭। “ব্রিটিশ সিংহ ভয়ে লেজ গুটিয়ে নিলেন, এ বড় লজ্জার কথা” – ব্যাখ্যা কর।
৮। “ফিরে এসেছি রাজধানীতে স্বাধীনতা বজায় রাখবার শেষ চেষ্টা করব বলে।” – উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
প্রশ্ন ৯। “আসামির সে অধিকার থাকে নাকি?” কখন বলেছিল? বর্ণনা কর। কে, কাকে,?
প্রশ্ন ১০। “রজার ড্রেক প্রাণভয়ে কুকুরের মতো ল্যাজ গুটিয়ে পালিয়েছে” – ব্যাখ্যা কর।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ১১। ‘তোমার ক্ষমতা ধ্বংস হবে, সিরাজ।’ কে, কাকে লক্ষ্য করে কেন এ উক্তিটি করেছিল?
প্রশ্ন ১২। “ঘরের লোক অবিশ্বাসী হলে বাইরের লোকের পক্ষে সবই সম্ভব”- এর তাৎপর্য লেখ।
১৩। ‘দওলত আমার কাছে ভগবানের দাদা মশায়ের চেয়ে বড় — উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
প্রশ্ন ১৪। “আমার নালিশ আজ আমার বিরুদ্ধে।”— এই উক্তির তাৎপর্য কী?
প্রশ্ন ১৫। “শওকতজঙ্গ নবাব হলে সকলের উদ্দেশ্য হাসিল হবে।”-কেন?

১৬। “ইনি কি নবাব, না ফকির?’- মিরজাফর সম্পর্কে ক্লাইভের এ উক্তির কারণ কী?
প্রশ্ন ১৭। রবার্ট ক্লাইভ নারীর ছদ্মবেশে মিরনের বাড়ি এসেছিল কেন?
প্রশ্ন ১৮। “শুভ কাজে অযথা বিলম্ব করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়”-ব্যাখ্যা কর।
১৯। সিরাজউদ্দৌলার পতন হলে কে কত টাকা পাবে বলে দলিল সই হয়?
প্রশ্ন ২০। ‘এই অস্ত্র নিয়ে আমরা কাপুরুষ দেশদ্রোহীদের অবশ্যই দমন করতে পারব।’— এখানে কোন অস্ত্রের কথা হয়েছে এবং কেন?

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ২১। “ফরাসিরা ডাকাত আর ইংরেজরা অতিশয় সজ্জন ব্যক্তি, কেমন?”— উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
প্রশ্ন ২২। “ভিকটরি অর ডেথ, ভিকটরি অর ডেথ”- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
২৩।“… সবাই মিলে সত্যিই আমরা বাংলাকে বিক্রি করে দিচ্ছি না তো?” – বক্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
প্রশ্ন ২৪। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিনিধি কেন সিপাহসালারের সাথে দেখা করতে এসেছিলেন?
২৫। “ঘরের লোক অবিশ্বাসী হলে বাইরের লোকের পক্ষে সবই সম্ভব” বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

প্রশ্ন ২৬। ঘসেটি বেগম নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে অভিসম্পাত করলেন কেন?
প্রশ্ন ২৭। “ওর কাছে সবকিছুই যেন বড় রকমের জুয়ো খেলা।”- কার কাছে, কেন?
৮। ঘসেটি বেগম কেন সিরাজের ধ্বংস কামনা করেন?
প্রশ্ন ২৯। “মতিঝিল ছেড়ে আমি এক পা নড়ব না”- উক্তিটিতে ঘসেটি বেগমের কোন ধরনের মানসিকতা ফুটে উঠেছে?

প্রশ্ন ৩০। ‘তার নবাব হওয়াটাই আমার মস্ত ক্ষতি’- উক্তিটির তাৎপর্য লেখ।
৩১। “শুধু ওই একটি পথেই আবার আমরা উভয়ে উভয়ের কাছাকাছি আসতে পারি।”— কীভাবে?
প্রশ্ন ৩২। নবাব সিরাজউদ্দৌলা কেন মিরজাফর চক্রকে বন্দি করেননি?

উত্তরসহ সাজেশন

প্রশ্ন ৩৩। যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা- কে, কাকে বলেছে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যত বড় মুখ নয়, তত বড় কথা— এ কথা ক্যাপ্টেন ক্লেটন বলেছিলেন প্রহরী ওয়ালি খানকে। ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের প্রথম অঙ্কের প্রথম দৃশ্যে নবাব সৈন্যরা ইংরেজদের ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ আক্রমণ করে। ১৭৫৬ সালের ১৯ জুনের সেই আক্রমণে ইংরেজ সৈন্যরা উৎসাহ হারিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তখন ক্যাপ্টেন ক্লেটন তাদের উৎসাহ জোগাতে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেন। নবাব সৈন্য দুর্গের কাছাকাছি এসে পড়েছে ওয়ালি খান এ খবর নিয়ে এলে ক্লেটন তাকে বেইমান এবং বাঙালিকে কাপুরুষ বলে তাচ্ছিল্য করে। তখন ওয়ালি খান এর প্রতিবাদ করলে ক্লেটন তাকে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেন।

প্রশ্ন ৩৪। ‘পলাশিতে যুদ্ধ হয়নি, হয়েছে যুদ্ধের অভিনয়’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ‘পলাশিতে যুদ্ধ হয়নি, হয়েছে যুদ্ধের অভিনয় উক্তিটি নবাব সৈন্যদের বিশ্বাসঘাতকতার দিকটি ইঙ্গিত করে। ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশির প্রান্তরে ইংরেজ বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার যুদ্ধ হয়। সিরাজের সৈন্যবাহিনী শক্তিশালী থাকলেও তাদের একটা বিশাল অংশ ইংরেজদের সঙ্গে গোপনে হাত মেলায়, যার পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধের ময়দানে গিয়ে মোহনলাল, মিরমর্দান ও সাঁফ্রে ছাড়া সবাই দর্শকের ভূমিকা পালন করে। তারপরও তারা যুদ্ধে জয়ী হতেন যদি না মিরজাফরের কুচক্রান্তে যুদ্ধ বন্ধ না করা হতো। আর সেজন্যই বলা হয়েছে— ‘পলাশিতে যুদ্ধ হয়নি, হয়েছে যুদ্ধের অভিনয় ৷
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৩৫। পলাশির যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের কারণ কী?
উত্তর : পলাশির যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের কারণ হলো— নবাব সিরাজউদ্দৌলার কতিপয় আত্মীয় এবং অমাত্যবর্গের ষড়যন্ত্র। পলাশির যুদ্ধে যুদ্ধ হয়নি, হয়েছিল প্রহসন। মিরজাফর, রাজবল্লভ, ইয়ার লুৎফ খাঁ এদের কারও সৈন্যই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। এরা নবাবের বিরুদ্ধে ইংরেজদের সঙ্গে আঁতাত করেছিল। ফলে পলাশির প্রান্তরে ইংরেজদের বিরুদ্ধে পাতানো যুদ্ধে নবাবের পরাজয় হয়।

প্রশ্ন ৩৬। ‘আজ রাত্রেই কাজ সারতে হবে। এসব ব্যাপারে চান্স নেওয়া চলে না’— কথাটি বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : ‘আজ রাত্রেই কাজ সারতে হবে। এসব ব্যাপারে চান্স নেওয়া চলে না।’- কথাটি ক্লাইভ মিরনকে বলে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করার প্রসঙ্গে। মিরন খবর নিয়ে আসে পলাতক নবাব সিরাজউদ্দৌলা মিরকাশেমের সৈন্যদের হাতে বন্দি হয়েছেন। নবাবকে রাজধানীতে নিয়ে আসার বিষয়ে মিরজাফর ক্লাইভের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছিল। সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যার জন্য ক্লাইভ মিরনকে লোক ঠিক করতে বলে। কিন্তু নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যার হুমুক কে দিবে তা নিয়ে মিরনের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়। কিন্তু ক্লাইভ চায় রাতের মধ্যেই সিরাজকে হত্যা করতে। এই প্রসঙ্গেই প্রশ্নোক্ত কথাটি ক্লাইভ মিরনকে বলেছিল ।

প্রশ্ন ৩৭। মিরজাফর উমিচাঁদকে কালকেউটে বলেছেন কেন?
উত্তর : উমিচাঁদের ধৃর্ততা, স্বার্থান্বেষী মনোভাব এবং দ্বিমুখী নীতির জন্য মিরজাফর উমিচাঁদকে কালকেউটে বলেছেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য মিরজাফর,জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, ঘসেটি বেগম ইংরেজদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তাদের সঙ্গে উমিচাঁদও ছিল। কিন্তু নবাবকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর কে কতটুকু ভাগ পাবে তা নির্দিষ্ট করার জন্য ক্লাইভের তৈরি দলিলে অন্যরা স্বাক্ষর করতে এলেও উমিচাঁদ অনুপস্থিত ছিল। মিরজাফরের ধারণা, উমিচাঁদ কলকাতায় বসেই চুক্তিতে স্বাক্ষর দেবে এবং চুক্তিতে তার দাবি পূরণ না হলে গোপন ষড়যন্ত্রের সমস্ত খবর নবাবের দরবারে পৌঁছে দেবে। এই কারণেই মিরজাফর উমিচাঁদকে কালকেউটে বলেছেন।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৩৮। “প্রাণ বাঁচবে সব” — বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : প্রশ্নোক্ত বাক্যটির মাধ্যমে যুদ্ধে পরাজিত ইংরেজদের নিজেদের মধ্যে কলহ ও শোচনীয় অবস্থার প্রসঙ্গটি উপস্থাপিত হয়েছে। নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাবাহিনী কর্তৃক কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ পতনের পর ইংরেজরা কলকাতা ছেড়ে পালিয়ে ভাগীরথী নদীতে ফোর্ট উইলিয়াম জাহাজে আশ্রয় নেয়। সেখানে তারা খাদ্য ও বস্ত্রের চরম সংকটে পড়ে। নিজেদের মধ্যে কলহ শুরু হয়। এসবের মধ্যেও ড্রেক নবাবকে আক্রমণ করার চক্রান্ত করে। মার্টিনসহ অন্যান্য সৈনিক ড্রেকের নির্দেশে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানায়। ড্রেক মার্টিনকে বন্দি করার কথা বললে জাহাজের এক ইংরেজ নারী উপর্যুক্ত কথাটি বলেন, যার মাধ্যমে ইংরেজদের অসহায়ত্ব ও দুর্বিষহ জীবনের কথা ফুটে উঠেছে।।

প্রশ্ন ৩৯। আমি বরং নবাবকে বিশ্বাস করতে পারি- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আমি বরং নবাবকে বিশ্বাস করতে পারি- নবাবের অমাত্যদের বিশ্বাসঘাতকতা ও দুরভিসন্ধির প্রতি ইঙ্গিত করে কথাটি ক্লাইভ রাজবল্লভকে বলেছেন। ক্লাইভের সঙ্গে নবাবের প্রধান অমাত্যবর্গ হাত মেলায়। নিজের লোকের সঙ্গে যারা প্রতারণা করতে পারে তারা অন্যের সঙ্গেও প্রতারণা করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই ক্লাইভ এ কথাটি বলেছেন।

ক্লাইভ যখন রাজবল্লভ ও জগৎশেঠের সঙ্গে কথা বলেন তখন জগৎশেঠ ও রাজবল্লভের কথার প্রত্যুত্তরে ক্লাইভ বলেন, ‘আজ নবাবকে ডোবাচ্ছেন, কাল আমাদের পথে বসাবেন। অর্থাৎ যারা ক্ষতিকর ব্যক্তি তারা কারও বন্ধু হতে পারে না, তারা সুযোগ পেলেই অন্যের ক্ষতি করে। ক্লাইভের কাছে তাই তাদের চেয়ে নবাবকেই বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে। কারণ নবাব অন্তত কথার খেলাপ করেন না।

প্রশ্ন ৪০। ক্লাইভ কেন সিরাজকে হত্যা না করা পর্যন্ত স্বস্তি পায় না?
উত্তর : গণবিক্ষোভের আশঙ্কায় ক্লাইভ নবাব সিরাজকে হত্যা না করা পর্যন্ত স্বস্তি পায় না।পলাশি যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর নবাব সিরাজ পাটনায় পালিয়ে যাওয়ার সময় বন্দি হন। তাকে মিরজাফরের সৈন্যরা মুর্শিদাবাদে নিয়ে আসে। সিরাজকে হত্যা করার বিষয়ে মিরজাফর দ্বিধান্বিত থাকলেও চতুর লর্ড ক্লাইভ সিরাজকে দ্রুত হত্যা করতে চায়। কারণ সে ভাবে, বন্দি সিরাজকে মুক্ত করার জন্য গণবিক্ষোভ হতে পারে। তাই সিরাজকে হত্যা না করা পর্যন্ত ক্লাইভ মনে স্বস্তি পায় না।

প্রশ্ন ৪১। “তোমাদের প্রাণ বিপন্ন হবে অথচ স্বাধীনতা রক্ষা হবে না,এই চিন্তাটাই বেশি বেশি পীড়া দিচ্ছে।”— ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সেনাপতি মিরমর্দানের উক্তির জবাবে নবাব প্রশ্নোত্ত উক্তিটি করেছিলেন।পলাশির যুদ্ধের আগের দিন নবাবের শিবিরে শলাপরামর্শের জন্য উপস্থিত হন মিরমর্দান ও মোহনলাল। তাঁরা যুদ্ধকৌশল নিয়ে আলোচনা করার সময় মিরজাফরকে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। এ ছাড়া নিজেরা প্রাণপণ লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দেন নবাবকে। বলেন, তাঁদের প্রাণ থাকতে নবাবের কোনো ক্ষতি তাঁরা হতে দেবে না। তখন নবাব গভীর বেদনায় প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেন।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৪২। ‘ওরা বেনিয়ার জাত। পয়সা ছাড়া কিছু বোঝে না।’-কথাটি কে কোন প্রসঙ্গে কেন করেছিল?
উত্তর : ইংরেজদের স্বার্থান্বেষী বৈশিষ্ট্যের প্রতি ইঙ্গিত করে রাজবল্লভ মিরজাফরের কাছে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তাঁর পারিষদবর্গ গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তারা ভিনদেশি ইংরেজদের সঙ্গে হাত মেলায়। দেশ ও জাতির স্বার্থ তারা ভিনদেশিদের কাছে বিকিয়ে দেয়। এই ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে রয়েছেন মিরজাফর এবং রাজবল্লভ। ইংরেজরা যে স্বার্থ ছাড়া এক পাও চলে না এরা তা জানেন। নবাবের কাছ থেকে ইংরেজদের কোনো সুবিধা পাওয়ার আশা নেই; তাই তারা নবাবকে কখনই সাহায্য করবে না। কাজেই তারা সিংহাসনে বসার জন্য মিরজাফরকে সবরকমের সাহায্য দেবে। এটা বোঝাতে গিয়ে রাজবল্লভ আলোচ্য উক্তিটি করেন ।

প্রশ্ন ৪৩। ‘অন্ধকারের ফাঁকা দরবারে বসে থেকে কোনো লাভ নেই নবাব।’— কে, কেন বলেছেন?
উত্তর : : ‘অন্ধকারের ফাঁকা দরবারে বসে থেকে কোনো লাভ নেই নবাব’— লুৎফুন্নেসা তার স্বামী নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে বলেছেন এ কথা। পলাশি যুদ্ধে পরাজয়ের পর নবাব সিরাজউদ্দৌলা পুনরায় সংগঠিত হতে মুর্শিদাবাদ তাঁর দরবারে ফিরে আসেন। যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের খবর শুনে সাধারণ মানুষ দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করে। নবাব তখন বিভিন্ন লোকের সাথে পরামর্শ করতে থাকেন, জনগণকে সংঘবদ্ধ করতে চান কিন্তু কোনো লাভ হয় না। অবসন্ন নবাবের কাছে আসেন স্ত্রী লুৎফা। তিনি নবাবের মাথায় হাত রেখে তাঁকে ডাকেন এবং আলোচ্য উক্তিটি করেন। তিনি নবাবকে সাহস জোগান এবং তাঁকে প্রাসাদ ত্যাগ করতে বলেন।

প্রশ্ন ৪৪। লবণ প্রস্তুতকারকের ওপর ইংরেজদের অত্যাচারে নবাব নিজেকে দায়ী করেছেন কেন?
উত্তর : লবণ প্রস্তুতকারকের ওপর ইংরেজদের অত্যাচারে নবাব দুর্বল শাসনব্যবস্থার জন্য নিজেকে দায়ী করেছেন। নবাব নিজে যাচাই না করে রাজ অমাত্যদের পরামর্শে ইংরেজদের লবণের ইজারা দিয়েছিলেন। তাতে দেশের রাজস্বের পরিমাণ বাড়বে, দেশের অর্থনীতি মজবুত হবে— এ ছিল নবাবের ভাবনা । আর ইংরেজরা ব্যবসায় না করে প্রায় ডাকাতি করছিল,প্রজাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন করছিল। লবণ প্রস্তুতকারক প্রজাদের ওপর অত্যাচার দেখে নবাব নিজেকে দায়ী করেছিলেন, যাতে রাজ অমাত্যরাও নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন।

প্রশ্ন ৪৫। ডাচ ফরাসিদের ইংরেজরা সাহায্য চেয়েছিল কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : নবাবের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য ইংরেজরা ডাচ ও ফরাসিদের কাছে সাহায্য চেয়েছিল। .সুচতুর ইংরেজরা কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে গোপনে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে। নবাব সিরাজউদ্দৌলা সেই খবর পান এবং ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ আক্রমণ করেন। ইংরেজরা সেই আক্রমণের খবর পেয়ে নিজেদের স্বল্প সৈন্য ও অস্ত্রের কথা চিন্তা করে ডাচ ও ফরাসিদের কাছে সাহায্য চেয়েছিল। তারা ভেবেছিল ডাচ ও ফরাসিদের কাছ থেকে সাহায্য পেলে সহজেই নবাবের সৈন্যদের প্রতিহত করতে পারবে।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৪৬। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার মনোভাব কেমন ছিল?– ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : অত্যাচারীর বিরুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার মনোভাব ছিল। কঠিন থেকে কঠিনতর।নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন প্রজাহিতৈষী। তিনি প্রজাদের ওপর কোনোরূপ অত্যাচার করতেন না। অথচ নবাবের নির্দেশ অমান্য করে ইংরেজ কুঠিয়ালরা প্রজাদের ওপর নির্মম নির্যাতন করে। নবাব এক লবণচাষিকে এমন নির্যাতিত হতে দেখে সহ্য করতে পারেননি। তাই তিনি অত্যাচারী ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রজাদের কঠিন অবস্থান নিতে আহ্বান জানান এবং নিজেও এ ব্যাপারে কঠোর হন।

প্রশ্ন ৪৭। যুদ্ধ চলাকালে মোহনলাল নবাব সিরাজকে রাজধানীতে ফিরে যেতে বলেছিলেন কেন?
উত্তর : যুদ্ধ চলাকালে নতুন করে শক্তি সঞ্চয়ের জন্য মোহনলাল পলাশির প্রান্তর থেকে সিরাজউদ্দৌলাকে রাজধানীতে ফিরে যেতে বলেছিলেন। পলাশির যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে নবাব নিজে যখন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত তখন মোহনলাল নবাবকে অবিলম্বে রাজধানীতে ফিরে যেতে বলেন। কারণ সেখানে গিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে আত্মরক্ষার চেষ্টা করতে হবে। যুদ্ধের বিধি অনুসারেই হাল ছেড়ে বিজয়ী শত্রুর কাছে আত্মসমর্পণ করা যাবে না। স্বাধীনতা বজায় রাখার শেষ চেষ্টা করতে হবে। এসব কারণে মোহনলাল নবাবকে রাজধানীতে ফিরে যেতে বলেছিলেন।

প্রশ্ন ৪৮। হলওয়েল সাদা নিশান ওড়াতে বলেছিলেন কেন?
উত্তর : নবাবের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করার জন্য হলওয়েল সাদা নিশান ওড়াতে বলেছিলেন। কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে নবাবের সঙ্গে ইংরেজদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এতে নবাবের সৈন্যবাহিনীর কাছে ইংরেজ বাহিনী পরাজিত হয়। তখন হলওয়েল বুঝতে পারেন যে যুদ্ধরত অবস্থায় ধরা পড়লে তার মৃত্যু অনিবার্য। তাই তিনি যুদ্ধে শান্তিচুক্তি করার জন্য সাদা নিশান ওড়াতে বলেছিলেন।

প্রশ্ন ৪৯। সিরাজউদ্দৌলা ঘসেটি বেগমকে নিজ প্রাসাদে রাখতে চেয়েছিলেন কেন?
উত্তর : সিরাজউদ্দৌলা ষড়যন্ত্র থেকে দূরে রাখার জন্য ঘসেটি বেগমকে নিজ প্রাসাদে রাখতে চেয়েছিলেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার বড় খালা ঘসেটি বেগম। সিরাজ নবাব হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ঘসেটি বেগমের স্বার্থে আঘাত লাগে। তাই তিনি ইংরেজ ও দেশীয় রাজকর্মীদের সঙ্গে সিরাজের পতনের জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। এ বিষয়টি সিরাজ তাঁর গুপ্তচর মারফত জানতে পারেন। তাই তিনি ঘসেটি বেগমকে নিজ প্রাসাদে রেখে তার ওপর নরজদারি জোরদার করেন, যাতে তিনি কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে না পারেন।

প্রশ্ন ৫০। নবাব সিরাজউদ্দৌলা কেন নিজেকে শ্রেষ্ঠ বীর বলে আখ্যায়িত করেছেন?
উত্তর : নবাব আলিবর্দি খাঁর সঙ্গে থেকে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে অনেক বিজয় অর্জন করেছেন বলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা নিজেকে শ্রেষ্ঠ বীর বলে আখ্যায়িত করেছেন। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার নানা ছিলেন নবাব আলিবর্দি খাঁ। তিনি অত্যন্ত সাহসী এবং বিভিন্ন রাজ্যবিজয়ী নবাব ছিলেন। তাঁর সঙ্গে নবাব সিরাজউদ্দৌলাও যুদ্ধে যেতেন এবং বিপক্ষ শক্তির কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে আনতেন। তিনি ছিলেন প্রবল আত্মবিশ্বাসী একজন নবাব। নানার সঙ্গে বিভিন্ন যুদ্ধে গিয়ে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন বলে তিনি নিজেকে বাংলার শ্রেষ্ঠ বীর বলে আখ্যায়িত করেছেন।

প্রশ্ন ৫১। ক্লাইভ উমিচাঁদকে যুগের সেরা বিশ্বাসঘাতক বলেছেন কেন?
উত্তর : অর্থের মোহে উমিচাঁদ যেকোনো কাজ করতে পারেন বলে ক্লাইভ উমিচাঁদকে যুগের সেরা বিশ্বাসঘাতক বলেছেন। অর্থের প্রতি অপরিসীম লোভ উমিচাঁদের। অর্থের মোহে পড়ে তিনি যেকোনো ধরনের কাজ করতে পারেন। তিনি অর্থের জন্য নবাবকে ছেড়ে যেমন ইংরেজদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন তেমনি আবার অর্থের জন্য ইংরেজদের ছেড়ে দিতে পারেন। এজন্যই ক্লাইভ তাকে যুগের সেরা বিশ্বাসঘাতক বলেছেন।

বিশ্লেষিত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন ৫২। “এখন আপনাকে শক্ত হতে হবে”- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে বন্দি করে রাজধানীতে নিয়ে আসার ব্যাপারে মিরজাফরকে দ্বিধাগ্রস্ত দেখে ক্লাইভ প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেন। পলাশি যুদ্ধে পরাজিত হয়ে নবাব মিরকাশেমের সৈন্যদের হাতে ভগবানগোলায় বন্দি হন। ক্লাইভ চান বন্দি নবাবকে রাজধানীতে এনে যুদ্ধাপরাধী সাজিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতে। এ ব্যাপারে মিরজাফর কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তখন ক্লাইভ তাকে বোঝান যে তিনি এখন শাসনকর্তা। তিনি শাসন করতে পারেন, শাস্তি দিতে পারেন। এসব কাজের জন্য তাকে এখন শক্ত হতে হবে। ক্লাইভ উক্ত কথার মাধ্যমে মিরজাফরকে সেই কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেন।

প্রশ্ন ৫৩। “কেউ নেই, কেউ আমার সঙ্গে দাঁড়াল না লুৎফা।”—উক্তিটি বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : প্রশ্নোক্ত বাক্যটির মাধ্যমে নবাব বিপদের সময় তাঁর অসহায়ত্বকে বুঝিয়েছেন।পলাশির যুদ্ধে মিরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার ফলে পরাজিত হন নবাব। তাই তিনি রাজধানীতে ফিরে এসে সৈন্য জোগাড়ে ব্যস্ত হন রাজধানী সুরক্ষার জন্য। এছাড়া রাজ্যের প্রতিটি মানুষের প্রতি আহ্বান জানান স্বাধীনতা রক্ষার জন্য। কিন্তু কেউ তাঁর পাশে দাঁড়াল না। তখন নবাব অসহায় অবস্থায় স্ত্রী লুৎফার কাছে আলোচ্য কথাটি বলে মনোবেদনা প্রকাশ করেন।

প্রশ্ন ৫৪। নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে আক্রমণ করেছিলেন কেন?
উত্তর : ইংরেজদের এবং তাঁর প্রতিপক্ষ শত্রুদের শায়েস্তা করার জন্য নবাব সিরাজউদ্দৌলা ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে আক্রমণ করেছিলেন। বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। তার শাসনের তোয়াক্কা না করেই ইংরেজরা এদেশে অবাধে বাণিজ্য শুরু করে এবং সাধারণ প্রজাদের ওপর অত্যাচার করতে থাকে। এছাড়া নবাবের বিশ্বাসঘাতক সহচারীরা তাঁকে মসনদচ্যুত করার জন্য এ দুর্গে ইংরেজদের সঙ্গে এক গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এ কারণে নবাব তাদের দমন করতে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে আক্রমণ করেছিলেন।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৫৫। কাশিমবাজার কুঠিতে ইংরেজরা অস্ত্র আমদানি করেছিল কেন?
উত্তর : কাশিমবাজার কুঠিতে ইংরেজরা অস্ত্র আমদানি করেছিল সিরাজউদ্দৌলাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। বাংলার মসনদের মোহে নবাবের আশপাশের স্বার্থপর মানুষ ইংরেজদের সঙ্গে হাত মেলায়। তারা নবাবকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এতে নবাবের রাজসভার বেইমান সদস্যরা ইংরেজদের সাহায্য-সহযোগিতা করে। যার প্রস্তুতিস্বরূপ কাশিমবাজারের কুঠিতে তারা অস্ত্র আমদানি করেছিল।

প্রশ্ন ৫৬। ইংরেজরা কলকাতার আশপাশের গ্রামগুলো নিজেদের দখলে নিতে থাকে কেন?
উত্তর : ইংরেজরা এদেশে তাদের কর্তৃত্ব স্থাপন করার জন্য কলকাতার আশপাশের গ্রামগুলো নিজেদের দখলে নিতে থাকে। ইংরেজরা এদেশে বাণিজ্য করতে এসে সম্পদের মোহে পড়ে। ফলে তারা এ দেশ শাসনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। তাই তারা এদেশে তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য গোপনে অস্ত্র আমদানি শুরু করে। তাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার প্রাথমিক পর্যায় হিসেবে তারা কলকাতার আশপাশের গ্রামগুলো দখলে নিতে থাকে ।

প্রশ্ন ৫৭। ইংরেজদের এদেশে আসার প্রাথমিক উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর : ইংরেজদের এদেশে আসার প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল বাণিজ্য। অথচ পরবর্তীতে তারা এদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে। প্রাচ্যে বাণিজ্য করার জন্য ইংরেজরা ভারতবর্ষকে বেছে নিয়েছিল। যার ফলে গড়ে তোলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। বাণিজ্যকে উদ্দেশ্য করে এদেশে এলেও তারা পরবর্তীতে রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা পূরণে সচেষ্ট হয়।

প্রশ্ন ৫৮। “বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে বাঙালির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবার স্পর্ধা ইংরেজ পেল কোথা থেকে? আমি তার কৈফিয়ত চাই।”উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : প্রশ্নোক্ত বাক্যটি দ্বারা সিরাজউদ্দৌলার দেশপ্রেম তাঁর বিরুদ্ধে ইংরেজদের ষড়যন্ত্রের বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন স্বাধীনচেতা নবাব। তিনি তাঁর শাসনব্যবস্থায় অন্যের হস্তক্ষেপ পছন্দ করতেন না। অথচ তাঁর রাজ্যেই ইংরেজরা তাঁরই বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে এবং প্রজাদের ওপর অত্যাচার চালাতে থাকে। তাই উক্তিটির মাধ্যমে নবাব ইংরেজদের জবাবদিহি করতে বলেছেন।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৫৯। নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কেন?
উত্তর : নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের সম্পত্তি অবৈধ উপায়ে অর্জিত বলেই তা বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইংরেজরা এদেশে এসেছিল মূলত বাণিজ্য করতে। তবু তারা বাংলার বুকে নবাবের অনুমতি ছাড়াই বাণিজ্য করতে থাকে এবং রাজ কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। শুধু তা-ই নয়, তারা নবাবের বিরুদ্ধে অস্ত্রও ধারণ করে। তাই নবাব কলকাতা অভিযানের সমস্ত খরচ মেটাতে এবং ইংরেজদের দমন করতে তাদের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

প্রশ্ন ৬০। “লোকবল বাড়ুক আর না বাড়ুক, আহার্যের অংশীদার বাড়ল তা অবশ্য ঠিক।”— বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : নবাব কর্তৃক তাড়া খেয়ে ভাগীরথী নদীর উপর ভাসমান জাহাজে বসে নিজের চরম দুরবস্থা প্রসঙ্গে মার্টিন ও ড্রেককে উদ্দেশ করে হ্যারি উক্তিটি করেছিল। ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে নবাবের আক্রমণ সহ্য করতে না পেরে ড্রেক তার সহযোগীদের নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর আশ্রয় নেয় ফোর্ট উইলিয়াম জাহাজে। এরপর তারা সাহায্যের জন্য মার্টিনের কাছে হাত বাড়ালে মার্টিন মাত্র ২৫০ জন সৈন্য দেয়— যা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য। তাই ব্যঙ্গ করে হ্যারি আলোচ্য উক্তিটি করেছিল।

প্রশ্ন ৬১। রাইসুল জুহালা শিল্পীর ছদ্মবেশ ধরে ঘসেটি বেগমের বাড়িতে গিয়েছিলেন কেন?
উত্তর : রাইসুল জুহালা সংবাদ সংগ্রহের জন্য শিল্পীর ছদ্মবেশ ধরে ঘসেটি বেগমের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রাইসুল জুহালা হলেন নবাবের প্রধান গুপ্তচর। বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশ ধারণ করে সংবাদ সংগ্রহ করায় তার জুড়ি নেই। তাই তো উমিচাঁদকে ভুলিয়ে তার সঙ্গে ভাব করেন। এরপর নবাবের পক্ষে সংবাদ সংগ্রহের জন্য শিল্পীর ছদ্মবেশ ধারণ করে ঘসেটি বেগমের বাড়িতে যান।

প্রশ্ন ৬২। নবাব সিরাজউদ্দৌলা মিরজাফর আলি খানকে দিয়ে কোরান ছুঁইয়ে শপথ করিয়েছিলেন কেন?
উত্তর : মিরজাফর আলি খান যাতে নবাবের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা না করেন সেজন্য নবাব তাকে কোরান স্পর্শ করিয়ে শপথ করিয়েছিলেন। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাপতি ছিলেন মিরজাফর আলি খান। তিনি গোপনে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। নবাব তাদের কর্মকাণ্ড জানতে পারেন। তাই তিনি কৌশল হিসেবে মিরজাফর আলি খানকে পবিত্র কোরান শরিফ ছুঁইয়ে শপথ করান, যাতে তিনি তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে না পারেন।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৬৩। নবাব ওয়াটসকে দরবারে আশ্রয় দিয়েছিলেন কেন?
উত্তর : আলিনগরের সন্ধি অনুযায়ী নবাব ওয়াটসকে দরবারে আশ্রয় দিয়েছিলেন । কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে আক্রমণকালে নবাবের সঙ্গে ইংরেজদের সন্ধি হয়। এ সন্ধি অনুযায়ী নবাব কোম্পানির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চেয়েছিলেন। এই সন্ধির স্বীকৃতিস্বরূপ কোম্পানির একজন প্রতিনিধি ওয়াটসকে তাঁর দরবারে আশ্রয় দিয়েছিলেন।

প্রশ্ন ৬৪। সভাসদ কোম্পানির প্রতিনিধি ওয়াটস সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হলেন কেন?
উত্তর : সিরাজউদ্দৌলার ন্যায় শাসন, তাঁর জবাবদিহিতামূলক আচরণের কারণে সভাসদ ও কোম্পানির প্রতিনিধি ওয়াটস তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন স্বাধীনচেতা নবাব। তাই তাঁর রাজ্যে ইংরেজ অপশাসন মেনে নেননি, বরং ওয়াটসের কাছে এর জবাবদিহিতা চেয়েছেন। এছাড়া সভাসদকে ধর্মীয় গ্রন্থ স্পর্শ করিয়ে দেশরক্ষায় কাজ করার আহ্বান করেছেন। এর ফলে তারা নবাবের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হলেন।

প্রশ্ন ৬৫। “আরে বাপরে, একেবারে কালকেউটে!”- উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : উমিচাঁদের অর্থলোভী মনোভাবের পরিচয় পেয়ে মিরজাফর আলোচ্য উক্তিটি করেছেন। উমিচাঁদ একজন অর্থলোভী মানুষ। মিরজাফরদের সঙ্গে মিলে নবাবের বিরুদ্ধে তিনিও গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। তবে এতে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল অর্থ অর্জন করা। এখানে উমিচাদের স্বভাবকে বোঝাতেই মিরজাফর প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছিলেন।

প্রশ্ন ৬৬। “আজ নবাবকে ডোবাচ্ছেন, কাল আমাদের পথে বসাবেন না তা কি বিশ্বাস করা যায়?”- উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : প্রশ্নোক্ত উক্তিটির মাধ্যমে ক্লাইভ মিরজাফরসহ তার সহযোগীদের বেইমানি করার স্বভাবের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মিরজাফর এবং সহযোগীরা স্বার্থের জন্য নবাবকে ত্যাগ করেন। এরপর তারা ইংরেজদের সঙ্গে হাত মেলান বাংলার মসনদে আরোহণ করার জন্য। তারপরও ইংরেজ প্রতিনিধি তাদের বিশ্বাস করতে চান না। কেননা আজ যেমন স্বার্থের মোহে তারা নবাবকে ত্যাগ করেছেন, কাল ইংরেজদের সঙ্গেও তেমনি একই কাজ করতে পারেন । উক্তিটি দ্বারা এ কথাই বোঝানো হয়েছে।

প্রশ্ন ৬৭ । মিরজাফর ক্লাইভের মধ্যে কী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল?
উত্তর : মিরজাফর ও ক্লাইভের মধ্যে নবাবের পতনের পর ক্ষমতা বণ্টনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। মিরজাফর ও সহযোগীরা নবাবের পতনের জন্য ক্লাইভের সঙ্গে যোগদান করেন। এতে দুপক্ষই একে অপরকে বিশ্বাস করতে ব্যর্থ হচ্ছিল। তাই তারা যুদ্ধজয়ের পর ক্ষমতা বণ্টন নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তি অনুযায়ী মিরজাফর বাংলার মসনদে বসবেন কিন্তু রাজ্য চালাবে কোম্পানি।

প্রশ্ন ৬৮। মোহনলাল অনুমতি ছাড়াই আকস্মিকভাবে মিরনের মহলে প্রবেশ করেন কেন?
উত্তর : গুপ্তচর মারফত নবাবের বিরুদ্ধে চক্রান্তের খবর শুনে মোহনলাল অনুমতি ছাড়াই আকস্মিকভাবে মিরনের মহলে প্রবেশ করেন। নবাবের সভাসদরা বিশ্বাসঘাতক মিরনের প্রাসাদে বসে ইংরেজদের সঙ্গে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন। এতে তারা একটি চুক্তি স্বাক্ষরও করেন, যা গুপ্তচর মারফত নবাবের বিশ্বস্ত সেনাপতি মোহনলাল জেনে যান। তাই তিনি কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই আকস্মিকভাবে মিরনের প্রাসাদে প্রবেশ করেন।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৬৯। “কে পুত্র আর কে পুত্রবধূ? সিরাজ আমার কেউ নয়।”সিরাজ বাংলার নবাব, আর আমি তার প্রজা।”— বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : প্রশ্নোক্ত উক্তিতে ঘসেটি বেগমের ক্ষমতা না পাওয়া ও তার ওপর সিরাজের নজরদারিতে আক্ষেপ ও ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। নবাব আলিবর্দি খাঁর মৃত্যুর পর বাংলার মসনদে আরোহণ করেন সিরাজউদ্দৌলা, যা ঘসেটি বেগমের সারাজীবনের লালিত স্বপ্ন ধ্বংস করে দেয়। এতে তিনি নবাবের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করতে থাকেন। এ বিষয়টি নবাব বুঝতে পেরে তাকে নিজ প্রাসাদে এনে নজরদারিতে রাখেন। তাই সিরাজের প্রতি ঘসেটি বেগমের এত আক্ষেপ ও ক্ষোভ ।

প্রশ্ন ৭০। সিরাজউদ্দৌলাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারলে ঘসেটি বেগমের খুশি হওয়ার কারণ কী?
উত্তর : সিরাজউদ্দৌলাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারলে ঘসেটি বেগমের খুশির কারণ প্রতিহিংসা।নবাব আলিবর্দি খাঁর মৃত্যুর পরবর্তীকালে বাংলার মসনদে আরোহণের স্বপ্ন দেখেছিলেন ঘসেটি বেগম। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে বাংলার নবাব হন সিরাজ, যা তাকে অস্তিত্বের সংকটে ফেলে দেয়। এজন্যই তো তিনি সর্বদা সিরাজের পতন কামনা করতেন এবং সিরাজের পতন হলে তার সবচেয়ে আনন্দিত হওয়ার বিষয়টিও তিনি ব্যক্ত করেছেন।
প্রশ্ন ৭১। “কিন্তু আমার বিশ্বাস করতে প্রবৃত্তি হয় না যে, ওরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়বে।”— নবাব কেন এ কথাটি বলেছেন?
উত্তর : মিরজাফর ও তার সহযোগীদের ওপর অবিশ্বাসের কারণে নবাব প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাপতি ছিলেন মিরজাফর। তিনি ইংরেজদের সঙ্গে গোপনে নবাবের পতনের জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন এবং কৌশলে পলাশির যুদ্ধের আয়োজন করেন। এ বিষয়টি নবাব সিরাজউদ্দৌলা উপলব্ধি করতে পেরে আলোচ্য কথাটি বলেছেন।

প্রশ্ন ৭২। নবাব মোহনলালের ওপর ভরসা রেখেছিলেন কেন?
উত্তর : নবাবের বিশ্বস্ততার মূল্য মোহনলাল দিয়েছিলেন বলেই নবাব তার ওপর ভরসা রেখেছিলেন। সিরাজউদ্দৌলার সবচেয়ে বিশ্বস্ত সেনাপতি ছিলেন মোহনলাল। যিনি নিজের প্রাণ দিয়ে হলেও নবাবের সম্মান ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে সচেষ্ট ছিলেন। এ কারণেই তার প্রতি নবাব অগাধ বিশ্বাস ও ভরসা রেখেছিলেন। ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে আক্রমণের সময় তিনিই নবাবের পক্ষে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ করেছিলেন ।

প্রশ্ন ৭৩। মিরজাফর আলি খান ক্লাইভের হাত ধরে বাংলার মসনদে বসেছিলেন কেন?
উত্তর : ক্লাইভের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য তার হাত ধরে মিরজাফর বাংলার মসনদে বসেছিলেন। পলাশির যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতক নির্লজ্জ মিরজাফর ক্লাইভের সঙ্গে যোগ দিয়ে সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করেন। এরপর বাংলার নবাব পদ গ্রহণ করেন। মূলত ক্লাইভের কূটকৌশলের কারণেই তিনি বাংলার নবাব হতে পেরেছিলেন। তাই ক্লাইভের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য তিনি তার হাত ধরে বাংলার মসনদে বসেছিলেন।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৭৪। “সিরাজউদ্দৌলা এখন কয়েদি, ওয়ার ক্রিমিন্যাল।” – উক্তিটি বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যার জন্য মিরজাফরের কাছে ক্লাইভ প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেছিলেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মধ্যে ছিল অপরিমেয় দেশপ্রেম কিন্তু ভাগ্যের কাছে পরাজিত হয়ে তিনি হয়েছেন কয়েদি। পলাশির যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর তাঁকে আটক করে অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। এরপর ক্লাইভ তাঁকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করতে মিরজাফরকে আদেশ দেন। মূলত নবাবকে হত্যার জন্যই ক্লাইভ তাকে ‘ওয়ার ক্রিমিন্যাল’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।

প্রশ্ন ৭৫। মিরজাফর কেন ইংরেজদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন?
উত্তর : মিরজাফর আত্ম স্বার্থসিদ্ধির জন্য ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়েছিলেন। ইংরেজদের প্রলোভনে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় মিরজাফর নবাবের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। পলাশির যুদ্ধে সেনাপতির পদে অধিষ্ঠিত হন। পবিত্র কোরান ছুঁয়ে নবাবের পক্ষে যুদ্ধ করার শপথ নিয়েও তিনি তা করেননি, বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। ক্ষমতালিপ্সার কারণেই তিনি এমন আচরণ করেছেন। শেষ পর্যন্ত ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়ে নবাবকে পরাজিত করেছেন।

প্রশ্ন ৭৬। কুঠিয়াল ইংরেজরা গরিব প্রজাদের নানাভাবে অত্যাচার করত কেন?
উত্তর : লবণ বিক্রি করতে অসম্মত হলে কুঠিয়াল ইংরেজরা গরিব প্রজাদের ওপর নানাভাবে অত্যাচার করত। লবণের ইজারাদার কুঠিয়াল ইংরেজরা স্থানীয় লোকদের যাবতীয় লবণ তিন আনা বা চার আনা দরে পাইকারি হিসেবে কিনে নেয়। তারপর এখানকার লোকের কাছেই সেই লবণ বিক্রি করে দুই টাকা বা আড়াই টাকা মণ দরে। যারা এটি জানত তারা তাদের কাছে লবণ বিক্রি করতে চাইত না। আর তখন তাদের ওপর নেমে আসত অমানুষিক অত্যাচার।

প্রশ্ন ৭৭। জগৎশেঠের মতে দরবারে মিরজাফরের পৌঁছতে বিলম্ব হওয়ার কারণ কী?
উত্তর : দরবারে মিরজাফরের বিলম্বে পৌছার কারণ হিসেবে জগৎশেঠ চারটি বিষয় উল্লেখ করেছিলেন। জগৎশেঠের মতে, ঢাল-তলোয়ার ছেড়ে নবাবি লেবাস নিচ্ছেন খা সাহেব, ফলে একটু দেরি তো হবেই। তাছাড়া চুলে নতুন খেজাব, চোখে সুরমা, দাড়িতে আতর লাগানোর মতো কাজে তাড়াহুড়ো করা যায় না বলে খাঁ সাহেবের দরবারে পৌঁছতে বিলম্ব ঘটছে।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র)

প্রশ্ন ৭৮। ক্লাইভ কেন বলছিল “No clown will ever beat him.”?
উত্তর : মিরজাফরের সীমাহীন কাপুরুষতা ও ভাঁড়ামিপূর্ণ আচরণের কারণে ক্লাইভ উপর্যুক্ত কথা বলেছিলেন। বাংলার মসনদ অধিকার করেও ব্যক্তিত্বহীন মিরজাফর তার ষড়যন্ত্রের দোসর ক্লাইভের হাত ধরা ছাড়া সেই মসনদে বসতে চায়নি। বিষয়টি দরবারের সভাসদ ও অমাত্যবর্গকে হতবাক করে। এতে ইংরেজ সেনাপতি ক্লাইভও বিস্মিত হন। ক্লাইভের কাছে মিরজাফরের স্মৃতিপূর্ণ এ বক্তব্য চরম ভাঁড়ামিপূর্ণ মনে হয়। তাই ক্লাইভ ওয়াট্সকে নিচু স্বরে বলেন, “No clown will ever beat him. “

এই সিরাজউদ্দৌলা নাটকের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর (এইচএসসি বাংলা ১মপত্র) ছাড়াও আরো পড়ুন

You cannot copy content of this page

Scroll to Top