২য় অধ্যায় প্রাণীর পরিচিতি (ঘাসফড়িং) | ঘাসফড়িং জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর | HSC

২য় অধ্যায় প্রাণীর পরিচিতি (ঘাসফড়িং) | ঘাসফড়িং জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সাজশন ও অনুশীলন ও পরীক্ষায় ভালো করার জন্য দিয়েছি উত্তরসহ। আশাকরি তোমাদের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে এই আর্টিকেলটি সহায়তা করবে।

ঘাসফড়িং

প্রশ্ন-১৮. Locust কী?
উত্তর: পঙ্গপাল হলো ঘাসফড়িংসহ কিছু আর্থ্রোপোড প্রজাতির প্রাণী যারা দলবদ্ধভাবে একস্থান থেকে অন্যস্থানে গমন করতে পারে।

প্রশ্ন-১৯, ইনসেক্ট কী?
উত্তর: আর্থ্রোপোডা পর্বের অন্তর্গত কাইটিনময় বহিঃকঙ্কাল, তিন খণ্ড বিশিষ্ট দেহ, তিনজোড়া সন্ধিযুক্ত পা, পুঞ্জাক্ষি ও একজোড়া অ্যান্টেনাযুক্ত প্রাণীরাই হলো ইনসেক্ট।

প্রশ্ন-২০. ক্লাইপিয়াস কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের মাথার ফ্রন্সের নিচের প্রশস্ত আয়তাকার পাতটিই হলো ক্লাইপিয়াস।

প্রশ্ন-২১. পুঞ্জাক্ষি কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের মাথার পৃষ্ঠভাগের উভয়পার্শ্বে অবস্থিত বড় বৃত্তহীন, বৃক্কাকার, উত্তল কালো অংশই হলো পুঞ্জাক্ষি।

প্রশ্ন-২২. সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ কী?
উত্তর: কোনো প্রাণীর উপাঙ্গ খণ্ডিত থেকে সন্ধির মাধ্যমে যুক্ত থাকলে সে উপাঙ্গই হলো সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ ।

প্রশ্ন-২৩. প্রোনোটাম কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের অগ্রবক্ষের বড়, চওড়া এবং পেছনে ও প্রসারিত টার্গামই প্রোনোটাম।

প্রশ্ন-২৪, এলিট্রা কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের মধ্যবক্ষীয় অর্থাৎ সামনের দুটি ডানাই হলো এলিট্রা।

প্রশ্ন-২৫. একডাইসিস কী?
উত্তর: ঘাসফড়িং রূপান্তরের সময় নিম্ফগুলোর নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর দেহে কিউটিকল নির্মিত খোলস ত্যাগের প্রক্রিয়াই হলো একডাইসিস বা মোল্টিং।

■ ঘাসফড়িংয়ের পরিপাকতন্ত্র

প্রশ্ন-২৬. ম্যাক্সিলা কী?
উত্তর : ঘাসফড়িংয়ের মুখোপাঙ্গের একটি অস্থি যা চারটি তল এবং জাইগোম্যাটিক ফ্রন্টাল, অ্যালভিওলার ও প্যালাটাইন নামক চারটি প্রবর্ধন নিয়ে গঠিত, তাই হলো ম্যাক্সিলা।

প্রশ্ন-২৭. ল্যাবিয়াল পাল্প কী ধরনের অঙ্গ হিসেবে কাজ করে?
উত্তর: ল্যাবিয়াল পাল্প সংবেদনশীল অঙ্গ হিসেবে কাজ করে।

প্রশ্ন-২৮. প্রোভেন্ট্রিকুলাস কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের পৌষ্টিকনালির ক্রুপের পরবর্তী ত্রিকোণাকার, শক্ত, পুরু প্রাচীর বিশিষ্ট এবং কাইটিনময় দাঁতযুক্ত অংশই হলো প্রোভেন্ট্রিকুলাস বা গিজার্ড।

■ ঘাসফড়িংয়ের সংবহন

প্রশ্ন-২৯, উন্মুক্ত রক্ত সংবহনতন্ত্র কী?
উত্তর: যখন রক্ত ও রক্ত প্রবাহ শিরা, ধমনি বা রক্তজালকের মধ্যে আবদ্ধ থাকে না তখন এ ধরনের রক্ত সংবহনতন্ত্রকে বলা হয় উন্মুক্ত রক্ত সংবহনতন্ত্র।

প্রশ্ন-৩০. হিমোসিল কাকে বলে? [রা. বো, ১৯]
উত্তর: আর্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণিদেহের পেরিটোনিয়াল আবরণীবিহীন এক ধরনের অপ্রকৃত দেহগহ্বরকে হিমোসিল বলে।

প্রশ্ন-৩১. হিমোলিস্ম্ফ কী? [সকল বোর্ড ১৮]
উত্তর: বর্ণহীন প্লাজমা এবংয়ের মধ্যে ভাসমান অসংখ্য রক্তকণিকা নিয়ে গঠিত পতঙ্গের রক্তই হলো হিমোলিম্ফ |

প্রশ্ন-৩২. ট্রাকিয়া কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের প্রধান শ্বসন অঙ্গই হলো ট্রাকিয়া।

২য় অধ্যায় প্রাণীর পরিচিতি (ঘাসফড়িং) | ঘাসফড়িং জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর | HSC

■ ঘাসফড়িংয়ের শ্বসন

প্রশ্ন-৩৩, স্পাইরাকল কী? *দি. বো. ১৭
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের ট্রাকিয়ালতন্ত্রের উন্মুক্ত ছিদ্রপথই হলো স্পাইরাকল।

প্রশ্ন-৩৪, টিনিডিয়া কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের ইন্টিমার আবরণ সমভাবে বিস্তৃত না হওয়ার কারণে ট্রাকিয়ার অভ্যন্তরে ইন্টিমায় যে সর্পিলাকার বলয়ের সৃষ্টি হয় তাই হলো টিনিডিয়া।

প্রশ্ন-৩৫. ট্রাকিওল কোষ কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের ট্রাকিয়াগুলো শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে বহুভুজাকার কোষে পরিসমাপ্তি ঘটায়। এ বহুভুজাকার কোষই ট্রাকিওল কোষ।

■ ঘাসফড়িংয়ের পুঞ্জাক্ষির গঠন ও দর্শন কৌশল

প্রশ্ন-৩৬, ওসেলি কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের দুটি পুঞ্জাক্ষির মাঝখানে যে তিনটি সরলাক্ষি থাকে তাই ওসেলি |

প্রশ্ন-৩৭, ওমাটিডিয়াম কী? [য, বোঁ, ১৯]
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের পুঞ্জাক্ষির দর্শনের গঠন ও কার্যকরী এককই ওমাটিডিয়াম।

প্রশ্ন-৩৮, ক্রিস্টালাইন কোন কোষ কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের ওমাটিডিয়ামের কর্নিয়াজেন কোষের নিচের চারটি লম্বাকৃতির কোষই হলো ক্রিস্টালাইন কোন কোষ।

প্রশ্ন-৩৯, ভিত্তি পর্দা কী?
উত্তর: ওমাটিডিয়াম যে পাতলা পর্দার ওপর অবস্থিত তাই হলো ভিত্তি পৰ্দা।

■ ঘাসফড়িংয়ের রেচনতন্ত্র

প্রশ্ন-৪০, ইউরেট কোষ কী?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের দেহে অবস্থিত চর্বি সঞ্চয়কারী কোষকে ইউরেট কোষ বলে। এর শর্করা, আমিষ ও স্নেহজাতীয় খাদ্যকে পরিবর্তিত রূপে জমা রাখে।

ঘাসফড়িংয়ের প্রজননতন্ত্র

প্রশ্ন-৪১. ঘাসফড়িংয়ের ডিম্বাণু কী ধরনের?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের ডিম্বাণু সেন্ট্রোলেসিথাল অর্থাৎ কুসুম কেন্দ্রে সীমাবদ্ধ।

প্রশ্ন-৪২. অণুডিম্বাশয় দ্বারা কী গঠিত হয়?
উত্তর: অণুডিম্বাশয় দ্বারা ডিম্বাশয় গঠিত হয়।

প্রশ্ন-৪৩, স্পার্মাথিকা কী?
উত্তর: স্পার্মাথিকি হলো ডিম্বানালি দুটির অন্তবর্তী স্থানে একজোড়া অসম অঙ্গ।

■ ঘাসফড়িংয়ের প্রজনন ও রূপান্তর

প্রশ্ন-৪৪, উওথেকা কী?
উত্তর: উওথেকা হলো ঘাসফড়িংয়ের দেহ নিঃসৃত এক ধরনের আঠালো পদার্থ দ্বারা গঠিত থলি যেখানে ঘাসফড়িং ডিম পেড়ে গুচ্ছাকারে সঞ্চিত রাখে।

প্রশ্ন-৪৫. ডায়াপজ কী?
উত্তর: বাইরের পরিবেশের ঠাণ্ডা ও খাদ্যের অপ্রতুলতা মোকাবেলার জন্য ঘাসফড়িংয়ের ডিমের ভেতর ভ্রূণের বর্ধন কিছু সময়ের জন্য থেমে থাকার অবস্থাই হলো ডায়াপোজ।

প্রশ্ন-৪৬. অসম্পূর্ণ রূপান্তর কী? ঢা. বো: ১৬
উত্তর: যে রূপান্তরে শিশু প্রাণী দেখতে প্রায় পূর্ণাঙ্গ প্রাণীর মতো এবং এদের বিকাশের সময় খুব সীমিত বৈশিষ্টের পরিবর্তন ঘটে, তাই অসম্পূর্ণ রূপান্তর।

প্রশ্ন-৪৭. নিম্ফ কী?
উত্তর: নবজাতক বা শিশু ঘাসফড়িংই হলো নিম্ফ।

ঘাসফড়িং ২য় অধ্যায় প্রাণীর পরিচিতি (ঘাসফড়িং) | ঘাসফড়িং জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর | HSC

■ ঘাসফড়িং(অনুধাবনমূলক)

প্রশ্ন-১৭. ঘাসফড়িংকে Insecta শ্রেণিভুক্ত করা হয় কেন?
উত্তর: ঘাসফড়িং কাইটিনময় বহিঃকঙ্কাল, তিনখণ্ডবিশিষ্ট দেহ (মস্তক,বক্ষ ও উদর), তিনজোড়া সন্ধিযুক্ত পা, জটিল পুঞ্জাক্ষি এবং একজোড়া অ্যান্টেনা বহন করে । এসব বৈশিষ্ট্য Insecta শ্রেণিভুক্ত সদস্যের প্রাণীদের মধ্যে বিদ্যমান। এজন্য ঘাসফড়িংকে Inseeta শ্রেণিভুক্ত করা হয়।

প্রশ্ন-১৮. পুরুষ ও স্ত্রী ঘাসফড়িংয়ের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর: পুরুষ ও স্ত্রী ঘাসফড়িংয়ের উদরের প্রান্তদেশ সামান্য ভিন্নতর। স্ত্রী ঘাসফড়িংয়ে ওভিপজিটর ৪টি গাঢ় রংয়ের সূঁচালো কপাটিকা দিয়ে গঠিত। কিন্তু পুরুষ সদস্যে রয়েছে সার্কি, ফারকুলা, সাবজেনিটাল ও সুপ্রাঅ্যানাল প্লেট। পুরুষের উদরটি গোল ধরনের, প্রান্তের দিকে সামান্য ওপরে বাঁকিয়ে উঠানো। কিন্তু স্ত্রী ঘাসফড়িংয়ের উদর সোজা। এছাড়া স্ত্রী সদস্য পুরুষের চেয়ে অনেক বড় এবং এদের পা ও পুরুষের চেয়ে কয়েক মিলিমিটার বেশি লম্বা।

ঘাসফড়িংয়ের পরিপাকতন্ত্র

প্রশ্ন-১৯. হাইপোফ্যারিংক্স বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের ল্যাব্রামের নিচে যে ক্ষুদ্র, মাংসল মুখোপাঙ্গ অবস্থান করে তাকে হাইপোফ্যারিংক্স বা উপজিহ্বা বলা হয়। এটি চারিদকে ম্যান্ডিবল, ম্যাক্সিলা ও ল্যাবিয়াম দিয়ে পরিবৃত থাকে। হাইপোফ্যারিংক্স খাদ্যবস্তুকে নাড়াচাড়া করে লালার সাথে মেশাতে সাহায্য করে।

প্রশ্ন-২০. মেসেন্টেরন বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের পৌষ্টিকতন্ত্রের গিজার্ডের পরবর্তী অংশ হলো মেসেন্টেরন। এটি খাটো এবং সমব্যাসযুক্ত, কিন্তু এর প্রাচীরে কিউটিকল অনুপস্থিত। মেসেন্টেরনের সম্মুখ ভাগকে পাকস্থলি বলা হয়। এর প্রাচীর থেকে নানা রকম উৎসেচক নিঃসৃত হয় যা পরিপাকে সাহায্য করে।

■ ঘাসফড়িংয়ের সংবহন

প্রশ্ন-২১. হিমোসিল বলতে কী বোঝায়? [চ বো ১৯; ঢা, বো, ১৭ ই বো, ১৫]
উত্তর: অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্তপূর্ণ দেহগহ্বরকে হিমোসিল বলে। ইহা পেরিটোনিয়াম আবরণবিহীন। হিমোসিল পৃষ্ঠীয় ও অঙ্কীয় পর্দা দ্বারা প্রকোষ্ঠ বা সাইনাসে বিভক্ত থাকে। এতে হৃদযন্ত্র ও অ্যাওটী থাকে।

প্রশ্ন-২২. ঘাসফড়িংয়ে রক্তের ভূমিকা লেখো।
উত্তর: বর্ণহীন রক্তরস বা প্লাজমা এবং এর মধ্যে ভাসমান অসংখ্য বর্ণহীন রক্তকণিকা বা হিমোসাইট নিয়ে ঘাসফড়িংয়ের রক্ত গঠিত। হিমোগ্লোবিন বা অন্য কোনো ধরনের শ্বাসরঞ্জক না থাকায় এর রক্ত বর্ণহীন এবং শ্বসনে কোনো ভূমিকা রাখে না। খাদ্যসার, রেচনদ্রব্য, হরমোন ইত্যাদি পরিবহন, অ্যামিনো অ্যাসিড, কার্বোহাইড্রেট প্রভৃতি সঞ্চিত রাখা, জীবাণু ধ্বংস করা, রক্ততঞ্জনে এবং ডানার সঞ্চালন ও খোলস মোচনে সহায়তা করা হিমোলিম্ফের কাজ।

■ ঘাসফড়িংয়ের শ্বসন

প্রশ্ন-২৩, স্পাইরাকল বলতে কী বোঝ?
উত্তর: স্পাইরাকল হলো ট্রাকিয়ালতন্ত্রের উন্মুক্ত ছিদ্রপথ যা ঘাসফড়িংয়ের দেহের উভয়পাশে গ্লিউরন পর্দায় সারিবদ্ধভাবে বিদ্যমান। ঘাসফড়িংয়ের দেহের উভয় পাশে মোট দশ জোড়া স্পাইরাকল রয়েছে। এর মধ্যে দুজোড়া ৰক্ষীয় অঞ্চলে এবং আট জোড়া উদরীয় অঞ্চলে অবস্থিত।প্রতিটি স্পাইরাকল পেরিট্রিম নামক কাইটিন নির্মিত বেড় দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকে।

প্রশ্ন-২৪. ট্রাকিয়া ও ট্রাকিওলের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর: ট্রাকিয়া ও ট্রাকিওলের মধ্যে পার্থক্য :

ট্রাকিয়াটাকিওল
i. ট্রাকিয়া শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত ও ক্ষুদ্র ব্যাসযুক্ত এক ধরনের শ্বাসনালি ।i. ট্রাকিওল খুব ক্ষুদ্র ব্যাসযুক্ত শাখাবিহীন শ্বাসনালি।
ii এটি প্রধানত হিমোসিলে থাকে।ii এটি দেহকোষের সাথে নিবিড়ভাবে অবস্থিত।
iii. ট্রাকিয়া বায়ুপূর্ণ রূপার মতো চকচকে নালি।iii. ট্রাকিওল তরলপূর্ণ সাদাটে নালি।
২য় অধ্যায় প্রাণীর পরিচিতি (ঘাসফড়িং) | ঘাসফড়িং জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর | HSC

■ ঘাসফড়িংয়ের পুঞ্জাক্ষির গঠন ও দর্শন কৌশল

প্রশ্ন-২৫, ওসেলাসকে আলোক সংবেদী অঙ্গ বলা হয় কেন?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের অন্যতম আলোক সংবেদী অঙ্গ হলো ওসেলাস।এটি প্রত্যেক অ্যান্টেনার গোড়ায় অবস্থিত। কারণ এর সাহায্যে ঘাসফড়িং আলোকের তীব্রতায় তারতম্য অনুভব করতে পারে। পাশাপাশি বস্তুর প্রতিবিম্বও সৃষ্টি করতে পারে। এজন্যই ওসেলাসকে আলোক সংবেদী অঙ্গ বলা হয়।

প্রশ্ন-২৬. ঘাসফড়িংয়ের পুঞ্জাক্ষিতে কয় ধরনের প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয় ও কী কী?

উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের পুঞ্জাক্ষিতে ২ ধরনের প্রতিবিম্ব সৃষ্টি হয়। যথা-
অ্যাপোজিশন প্রতিবিম্ব এবং সুপারপজিশন প্রতিবিম্ব। দিনের বেলায় উজ্জ্বল আলোতে ঘাসফড়িং পুঞ্জাক্ষিতে যে ধরনের প্রতিবিম্ব সৃষ্টি করে তা হলো অ্যাপোজিশন প্রতিবিম্ব এবং রাতের স্তিমিত আলোতে যে ধরনের প্রতিবিম্ব সৃষ্টি করে তা হলো সুপারপজিশন প্রতিবিম্ব।

প্রশ্ন-২৭. সুপারপজিশন প্রতিবিম্ব বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: পুঞ্জাক্ষি বিশিষ্ট প্রাণীদের মৃদু আলোতে দর্শন প্রক্রিয়ায় ক্রিস্টালাইন কোন ও র‍্যাবডোম অনাবৃত থাকে। এসময় দর্শন বস্তু হতে উলম্ব আলোক রশ্মি সোজাসুজি কর্নিয়ার ক্রিস্টালাইন কোন হয়ে র‍্যাবডোমে পৌঁছায় এবং তির্যক আলোকরশ্মি একটি ওমাটিডিয়ামের কর্নিয়ার মধ্য দিয়ে পাশের ওমাটিডিয়ামের র‍্যাবডোমে এসে পড়ে। একটি ওমাটিডিয়ামে একাধিক দিক থেকে আসা আলোকরশ্মি দিয়ে একটির উপর আরেকটি এভাবে একাধিক প্রতিবিম্ব পড়ে একটি অস্পষ্ট ও ঝাপসা প্রতিবিম্ব তৈরি হয়। এ ধরনের প্রতিবিম্বই হলো সুপারপজিশন প্রতিবিম্ব।

প্রশ্ন-২৮. সুপারপজিশন ও অ্যাপোজিশনের মধ্যে তুলনা করো।
উত্তর: সুপারপজিশন ও অ্যাপোজিশনের মধ্যে তুলনা নিম্নে দেয়া হলো-
(i) সুপারপজিশন মৃদু আলোতে এবং অ্যাপোজিশন উজ্জ্বল আলোতে গঠিত হয়।
(ii) সুপারপজিশনে অস্পষ্ট প্রতিবিম্ব এবং অ্যাপোজিশনে স্পষ্ট প্রতিবিম্ব গঠিত হয়।
(iii) সুপারপজিশন অ্যাপোজিশন উভয়ই হচ্ছে Arthropoda পর্বের প্রাণীর দর্শন কৌশল।

ঘাসফড়িংয়ের রেচনতন্ত্র

প্রশ্ন-২৯. মালপিজিয়ান নালিকার কাজ লেখো।
উত্তর: মালপিজিয়ান নালিকা একস্তর বিশিষ্ট এপিথেলিয়াম কোষে গঠিত। এ কোষ ইউরিক অ্যাসিড, ইউরেট প্রভৃতি বর্জ্য পদার্থ হিমোসিলের হিমোলিম্ফ থেকে শোষণ করে এবং পরে ইউরিক অ্যাসিডের দানা হিসেবে অন্ত্রে মুক্ত করে। পরে এর দানাদার দূষিত পদার্থ মলের সাথে পায়ুপথে দেহের বাইরে বের হয়ে যায়।

■ ঘাসফড়িংয়ের প্রজনন ও রূপান্তর

প্রশ্ন-৩০, ওডিপোজিটরের কাজ লেখো। সি.বো. ১৭
উত্তর: স্ত্রী ঘাসফড়িংয়ের উদরের শেষ প্রান্তে ৮ম ও ৯ম খণ্ডে অঙ্কীয়ভাবে অবস্থিত একটি নলাকৃতির বিশেষ অঙ্গ হলো ওডিপোজিটর।এটি স্ত্রী জনন ছিদ্রের মাধ্যমে বেরিয়ে আসা ডিম্বাণুগুলো সাময়িক সময়ের জন্য জমা করে রাখে এবং পরে দেহ থেকে আলাদা করে দেয়।এটি মাটিতে বা গাছে ডিম্বাণু রাখার স্থান নির্মাণেও ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন-৩১. ঘাসফড়িংয়ে ডায়াপজ ঘটে কেন?
উত্তর: বাইরের পরিবেশের ঠাণ্ডা ও খাদ্যের অপ্রতুলতা মোকাবেলার জন্য ঘাসফড়িংয়ের ডিমের ভিতরে ভূণের বর্ধন কিছু সময়ের জন্য থেমে থাকার অবস্থাই হলো ডায়াপজ। এর মাধ্যমে ভ্রূণ নিজে প্রতিকূল পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেয়। যখন পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও খাদ্যের প্রতুলতা বৃদ্ধি পায়, তখন ডিম ফুটে ছোট ঘাসফড়িং বেরিয়ে আসে।

প্রশ্ন-৩২. অসম্পূর্ণ রূপান্তর বলতে কী বোঝ? (ঢা. বো. ১৬)
উত্তর: অসম্পূর্ণ রূপান্তর হলো এক ধরনের ভ্রূণোত্তর পরিস্ফুটন। অসম্পূর্ণ রূপান্তর প্রক্রিয়ায় শিশু প্রাণীটি দেখতে পূর্ণাঙ্গ প্রাণীর মতো হয়। শিশু প্রাণীটিকে নিম্ফ বলে। এই রূপান্তরে একটি পতঙ্গ ডিম ফুটে বেরিয়ে প্রশ্ন কয়েকটি নিম্ফ দশা অতিক্রমের পর পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে পরিণত হয়। এদের উচ্চ দেহ ছোট, ডানা ও জননাঙ্গ থাকে না। নিম্ফ খোলস মোচনের মাধ্যমে এ পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়। যেমন— ঘাসফড়িংয়ের রূপান্তর ।

প্রশ্ন-৩৩, লার্ভা ও নিম্ফ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: সম্পূর্ণ রূপান্তরে শিশু অবস্থার প্রাণীকে লার্ভা বলে। যেমন—মৌমাছি, প্রজাপতি ইত্যাদির রূপান্তরে ডিম থেকে উদ্ভূত পরবর্তী দশটি লার্ভা। অসম্পূর্ণ রূপান্তরে তেলাপোকা, ঘাসফড়িং ইত্যাদি পতঙ্গে ডিম ফুটে যে শিশু দশা বের হয়ে আসে তাকে নিম্ফ বলে।

প্রশ্ন-৩৪. ডায়াপজ ও ইনস্টার বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ঘাসফড়িংয়ের নিষিক্ত ডিম্বাণুর পরিস্ফুটন শীতকালে বন্ধ থাকার অবস্থাকে ডায়াপজ বলে। বাইরের পরিবেশের ঠাণ্ডা ও খাদ্যে অপ্রতুলতা মোকাবিলা করার জন্য খোলসের ভিতরে ভ্রূণের বর্ধন থেমে থাকে। শিশু ঘাসফড়িং বা নিম্ফ কয়েকবার খোলস মোচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে পরিণত হয়। দুইটি খোলস মোচনের মধ্যবর্তী অবস্থাকে ইনস্টার বলে।

প্রশ্ন-৩৫. একডাইসন হরমোন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: তরুণ ঘাসফড়িং (নিম্ফ) এর রূপান্তরের শুরুতে তাদের প্রোথোরাসিক গ্রন্থি থেকে যে হরমোন ক্ষরিত হয় তাকে একডাইসন হরমোন বলে। তাদের মস্তিষ্কের ইন্টারসেরিব্রাল গ্রন্থিকোষ থেকে ক্ষরিত প্রোথোরাসিকোট্রফিক হরমোনের উদ্দীপনায় এ হরমোনটি নিঃসৃত হয়। এটি নিম্ফের দেহকে নির্মোচন এবংয়ের কোষকলাকে বৃদ্ধির জন্য উদ্দীপিত করে।

প্রশ্ন-৩৬. রূপান্তর বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: কোনো প্রাণীর জীবনচক্রের প্রাথমিক দশা ও পূর্ণাঙ্গ দশার মধ্যে গঠনগত পার্থক্য থাকলে প্রাথমিক দশা থেকে পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় পৌঁছাতে যেসব দৈহিক পরিবর্তন সাধিত হয় তাকে রূপান্তর বলে। পতঙ্গ, ব্যাঙ, মাছ ইত্যাদি প্রাণীতে রূপান্তর দেখা যায় ।

এই ২য় অধ্যায় প্রাণীর পরিচিতি (ঘাসফড়িং) | ঘাসফড়িং জ্ঞানমূলক অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর | HSC ছাড়াও আরো জানতে ক্লিকঃ

Leave a Comment

You cannot copy content of this page

Scroll to Top