উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তরঃ এইচএসসি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা তোমাদের প্রস্তুতির জন্য সর্বশেষ বোর্ড প্রশ্নের প্রস্তুতির জন্য দেওয়া হয়েছে।
যশোর বোর্ড ২০২১
১। উদ্ভিদ এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় মাটি থেকে পানি ও খনিজ লবণ মূলের সাহায্যে শীর্ষভাগে পৌছে দেয়। যার একটিতে বিপাকীয় শক্তির প্রয়ােজন অপরটিতে প্রয়ােজন পড়ে না।
ক. হাইডাথোড কী?
খ, সাইটোক্রোম পাম্প বলতে কী বুঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াগুলি কী কী এবং তাদের মধ্যে প্রথম প্রক্রিয়ার আধুনিক মতবাদ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ লাইনটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর।
ক পাতার কিনারা বা অগ্রপ্রান্তে অবস্থিত পানি বহিঃক্ষরণকারী ছিদ্রপথকেই বলে হাইডাথােড।
খ লুনডেগড় মতবাদ অনুযায়ী, অ্যানায়ন পরিশােষণ প্রকৃতপক্ষে সাইটোক্রোম সিস্টেমের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এ মতানুযায়ী, ভেতরের তল-এ ডিহাইড্রোজিনেজ বিক্রিয়ার ফলে প্রােটন (H+) এবং ইলেকট্রন (e-) সৃষ্টি হয়। ইলেকট্রনটি সাইটোক্রোম চেইনের মাধ্যমে বাইরের দিকে চলে আসে এবং O2 এর সাথে মিলে প্রােটন সহযােগে পানি তৈরি করে। এর ফলে বাইরের তলে সাইটোক্রমের বিজারিত লৌহ ইলেকট্রন হারিয়ে জারিত হয় এবং একটি অ্যানায়ন গ্রহণ করে। এজন্য লুনডেগড়ের মতবাদকে সাইটোক্রোম পাম্প মতবাদ বলা হয় ।
গ প্রশ্নের উত্তর
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াগুলাে হলাে যথাক্রমে সক্রিয় পরিশােষণ এবং নিষ্ক্রিয় পরিশােষণ । সক্রিয় পরিশােষণে বিপাকীয় শক্তির প্রয়ােজন হয়। সক্রিয় পরিশােষণের সর্বাধুনিক মতবাদ হলাে প্রােটন-অ্যানায়ন কো-ট্রান্সপাের্ট । নিচে মতবাদটি ব্যাখ্যা করা হলাে-
প্রােটন অ্যানায়ন কো-ট্রান্সপাের্ট তত্ত্ব আধুনিক মতবাদ হিসেবে পরিচিত। এই আধুনিক মতবাদ অনুযায়ী আয়ন নির্দিষ্ট কিছু প্রােটিনই বাহক আয়ন হিসেবে কাজ করে। বাইরের দ্রবণ থেকে প্রতিটি আয়ন কোষঝিল্লীর অভ্যন্তরে নির্দিষ্ট প্রােটিন বাহক দিয়ে বাহিত হয়ে কোষের ভিতরে প্রবেশ করে। এতে যে চালিকাশক্তির প্রয়ােজন হয় তা কোষঝিল্লিস্থ ATPase এনজাইম কর্তৃক ATP ভেঙে তৈরি হয়।
এই ধারণা অনুযায়ী কোষঝিল্লির কোষমধ্য থেকে ATP-ase কর্তৃক ATP ভেঙ্গে এবং একই সঙ্গে একটি প্রােটন (H+) পার্শ্ববর্তী কোষে নিক্ষিপ্ত হয় যাকে প্রােটন পাম্প বলে। এর ফলে কোষের বাইরের সাথে ভেতরের একটি pH gradient (কোষের বাইরে pH কম এবং ভেতরে pH বেশি) এবং Potential gradient (কোষের বাইরে +ve charge বেশি এবং ভেতরে +ve charge কম) তৈরি হয়। এরূপ অবস্থাকে একত্রে প্রােটন মােটিভ ফোর্স বা তড়িৎ রাসায়নিক বিভব বলে। প্রােটন মােটিভ ফোর্স তৈরি হলেই বাহক প্রােটিনগুলাে সক্রিয় হয় এবং ক্যাটায়নের একক পরিবহন ঘটায়। আবার প্রােটনও বাইরে থেকে ভেতরে ঢুকতে চায় আর সে সময় অ্যানায়নগুলাে প্রােটন অ্যানায়ন কো-ট্রান্সপাের্ট প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট বাহকের মাধ্যমে ভেতরে ঢুকে ।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত শেষ লাইনটিতে খনিজ লবণ পরিশােষণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উদ্ভিদের খনিজ লবণ পরিশােষণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। উদ্ভিদের মূল অজৈব লবণের উপাদানগুলাে আয়ন হিসেবে শােষণ করে। অজৈৰ লবণ শােষণ প্রক্রিয়াকে আয়ন শােষণ প্রক্রিয়াও বলা হয়। খনিজ লবণ পরিশােষণকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- নিষ্ক্রিয় পরিশােষণ এবং সক্রিয় পরিশােষণ। সক্রিয় পরিশােষণে বিপাকীয় শক্তির প্রয়ােজন হয় এবং নিষ্ক্রিয় পরিশােষণে বিপাকীয় শক্তির প্রয়ােজন হয় না। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলাে-
সক্রিয় পরিশােষণে বিপাকীয় শক্তির প্রত্যক্ষ প্রয়ােগে সক্রিয় পরিশােষণ ঘটে। অপরপক্ষে নিষ্ক্রিয় পরিশােষণে বিপাকীয় শক্তির প্রত্যক্ষ প্রয়ােজন পড়ে না। সক্রিয় পরিশােষণে শ্বসন হার বৃদ্ধি পায়। কিন্তু নিষ্ক্রিয় পরিশােষণে শ্বসন হার বৃদ্ধি পায় না।
সক্রিয় পরিশােষণে ক্যাটায়ন (+) ও অ্যানায়ন (-) এর শােষণ একই সঙ্গে ঘটে। অন্যদিকে ক্যাটায়ন (+) ও অ্যানায়ন (-) একই সঙ্গে শােষিত হয় না। সক্রিয় শােষণে বাহক আয়ন বা অণু দ্বারা সম্পন্ন হয়। কিন্তু নিষ্ক্রিয় শােষণে কোনাে বাহক আয়ন বা অণুর প্রয়ােজন হয় না। সক্রিয় পরিশােষণে এনজাইম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু নিষ্ক্রিয় পরিশােষণে এনজাইমের কোনাে ভূমিকা নেই।
অনুসরণ করোঃ উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
যশোর বোর্ড ২০২১
২।
ক. RQ কী?
খ, ক্যাসপেরিয়ান ফিতা বলতে কী বুঝায়?
গ. উদ্দীপকে A নির্দেশিত প্রক্রিয়ার প্রভাবকসমূহের বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে B চিহ্নিত অংশটির কাজ লিখ।
উত্তরমালা
ক) উদ্ভিদ শ্বসন প্রক্রিয়ায় যে পরিমাণ CO2 ত্যাগ করে এবং যে পরিমাণ 02গ্রহণ করে তার অনুপাতকে শ্বসনিক কুশেন্ট বা হার বলে।
খ অন্তঃত্বকের কোষগুলাে ঘনসন্নিবিষ্ট ও পিপার ন্যায় আকৃতিবিশিষ্ট। এদের মধ্যে কোনাে আন্তঃকোষীয় অবকাশ থাকে না। দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের কাণ্ডে অন্তঃত্বক থাকলেও একবীজপত্রী উদ্ভিদের কাণ্ডে তা থাকে না। তবে উভয় ধরনের মূলেই অন্তঃত্বক আছে। মূলের অন্তঃত্বকের প্রাচীরে সুবেরিন ও লিগনিন যুক্ত হয়ে সরু ফিতার ন্যায় স্তর সৃষ্টি হয়। ফিতার ন্যায় এ স্তরটির নাম ক্যাসপেরিয়ান স্ট্রিপ। বিজ্ঞানী Caspery এটি প্রথম শনাক্ত করেন বলেই এর নাম ক্যাসপেরিয়ান ফিতা বা স্ট্রিপ।
গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘A’ নির্দেশিত প্রক্রিয়াটি হলাে পত্ররন্দ্রীয় প্রস্বেদন প্রক্রিয়া। প্রস্বেদনের হার কতগুলাে প্রভাবক বা নিয়ন্ত্রকের উপর নির্ভরশীল। প্রস্বেদনের প্রভাবকসমূহকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (ক) বাহ্যিক বা পরিবেশীয় প্রভাবকসমূহ এবং (খ) অভ্যন্তরীণ বা উদ্ভিদের গঠনগত প্রভাবকসমূহ। নিচে প্রভাবকসমূহের বর্ণনা দেয়া হলাে-
গ প্রশ্নের উত্তর
(ক) বাহ্যিক বা পরিবেশীয় প্রভাবকসমূহ :
১. আলাে : প্রখর সূর্যালোেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা হ্রাস পায় এবং প্রস্বেদনের হার বেড়ে যায়। আবার আলাের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতিতে পত্ররন্দ্র বন্ধ ও উন্মুক্ত হয়, যা পরােক্ষভাবে প্রস্বেদনকে নিয়ন্ত্রণ করে। তীব্র আলােতে প্রস্বেদন বেশি হয়।
২. তাপমাত্রা : সাধারণত ১০-১৫ সে, তাপমাত্রায় স্বাভাবিক প্রস্বেদন ঘটে। তাপের হ্রাস বৃদ্ধির ফলে প্রস্বেদন হারের ও হ্রাস বৃদ্ধি হয়ে থাকে।
৩. বায়ুচাপ : বায়ুচাপ বেশি হলে প্রস্বেদন কম হয় এবং বায়ুচাপ কম হলে প্রস্বেদন বেশি হয়।
৪. মাটিস্থ পানি : মাটিতে পানির পরিমাণ কম থাকলে উদ্ভিদের পানি পরিশােষণের পরিমাণ কমে যায় এবং এতে প্রস্বেদন হ্রাস পায়। অন্যদিকে মাটিতে পানির পরিমাণ বেশি হলে উদ্ভিদ পানি বেশি গ্রহণ করে ফলে প্রস্বেদনও বেশি হয়।
(খ) অভ্যন্তরীণ বা উদ্ভিদের গঠনগত প্রভাবকসমূহ :
১. পত্ররন্দ্র : পত্ররন্দ্রের ছিদ্র সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হলে প্রস্বেদন বেশি হয় এবং ছিদ্র আংশিক উন্মুক্ত হলে প্রস্বেদনের পরিমাণ কম হয়। পত্ররন্দ্রের সংখ্যাও প্রস্বেদনের হারকে প্রভাবিত করে।
২. পাতার আয়তন ও সংখ্যা : পাতার আয়তন ও সংখ্যা যত বেশি হয় পত্ররন্দ্রের সংখ্যাও তত বেশি হয়। ফলে প্রস্বেদনের হারও বেড়ে যায় ।
৩. মেসােফিল টিস্যুতে পানির পরিমাণ : পাতার মেসােফিল টিস্যুতে পানির পরিমাণ বেশি হলে প্রস্বেদনের হার বেশি হয়। আবার মেসােফিল টিস্যুতে পানির পরিমাণ কম হলে প্রস্বেদনের হারও কম হয়।
৪. পত্রমােচন : শীতকালে অনেক উদ্ভিদের পাতা ঝরে যায় বলে সেসব উদ্ভিদে তখন প্রস্বেদন কম হয়।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ উদ্দীপকের ‘B’ চিহ্নিত অংশটি হলাে পত্ররন্দ্র। পত্ররন্ধের মাধ্যমে উদ্ভিদের গুরুত্বপূর্ণ কাজসমূহ সম্পাদিত হয়। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলাে-
পত্ররন্দ্রের মাধ্যমে ৯৫ ভাগ প্রস্বেদন হয় যা পত্ররন্দ্রীয় প্রস্বেদন নামে পরিচিত। প্রস্বেদন প্রক্রিয়া উদ্ভিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ জৈবনিক প্রক্রিয়া। পাতা ও অন্যান্য অংশে পানি ও খাদ্যরস পৌঁছানাে অপরিহার্য। প্রস্বেদনের ফলে বাহিকানালিতে পানির যে টান পড়ে তা সরাসরি পানিকে জাইলেম ভেসেলের মাধ্যমে মূল হতে কাণ্ড হয়ে পাতা পর্যন্ত পৌঁছাতে সহায়তা করে।
এ পানির সাথে মূল কর্তৃক শােষিত খনিজ পদার্থ তথা সামগ্রিকভাবে খাদ্যরস উপরে উত্থিত হয়। পানি ও খনিজ লবণ পরিশােষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ জৈবনিক কার্যাবলি যা পত্ররন্দ্রের মাধ্যমে প্রস্বেদনের ফলে সৃষ্ট বাহিকা নালিতে টানের ফলে সৃষ্টি হয়। এছাড়া এর মাধ্যমে পাতা ও অন্যান্য অংশে খনিজ লবণ পৌঁছানাে সকল কোষে পানি সরবরাহ, পাতায় উপযুক্ত তাপ নিয়ন্ত্রিত হয় । সালােকসংশ্লেষণের মাধ্যমে খাদ্য তৈরির জন্য পানির প্রয়ােজন হয় পত্ররন্ত্রের মাধ্যমে।
প্রস্বেদনের ফলে বিপুল পরিমাণ পানি সালােকসংশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। কোষ বিভাজনের জন্য কোষের স্ফীতি অবস্থার প্রয়ােজন। প্রস্বেদন পরােক্ষভাবে এ স্ফীতি অবস্থা এবং পরােক্ষভাবে কোষ বিভাজনে সহায়তা করে। পত্ররন্ত্রের মাধ্যমে প্রস্বেদনের ফলে কোষ রসের ঘনত্ব বাড়ে। ফলে অভিস্রবণ প্রক্রিয়া ঘটার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং অভিস্রবণ ঘটে। উপরের আলােচনা হতে বুঝা যায় যে, পত্ররন্দ্রের মাধ্যমে উদ্ভিদে পানি ও খনিজ লবণ পরিশােষণ, সালােকসংশ্লেষণ, অভিস্রবণ এর মতাে গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি সম্পাদিত হয়।
নবম অধ্যায়ঃ উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
ময়মনসিংহ বোর্ড ২০২১
৩। নিচের চিত্র দুটি লক্ষ কর-
ক, প্রস্বেদন কী?
খ, TCA চক্র বলতে কী বােঝায়?
গ. উদ্দীপক M এ প্রদর্শিত প্রক্রিয়ার আধুনিক মতবাদ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপক ‘N’ প্রদর্শিত অঙ্গ খােলা ও বন্ধ হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ কর।
ক যে শারীরতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদের বায়বীয় অঙ্গ (সাধারণত পাতা) হতে প্রয়ােজনের অতিরিক্ত পানি বাম্পাকারে বের হয়ে যায় তাই প্রস্বেদন।
খ ক্রেবস চক্রকে TCA চক্র বলা হয়। কারণ-এই চক্রের প্রথম উৎপাদিত যৌগটি সাইট্রিক এসিড হওয়ায় একে সাইট্রিক এসিড চক্রও বলা হয়। সাইট্রিক এসিডে তিনটি কার্বক্সিল (- COOH) গ্রুপ থাকায় একে বর্তমানে ট্রাই কার্বোক্সিলিক এসিড চক্র বা TCA চক্র বলা হয়।
গ প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকে প্রদর্শিত চিত্রের ‘M’ প্রক্রিয়াটি হলাে উদ্ভিদের খনিজ লবণ শােষণ প্রক্রিয়া। খনিজ লবণ শােষণের বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে আধুনিক মতবাদ হিসেবে প্রােটন অ্যানায়ন কো-ট্রান্সপাের্ট বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। নিচে মতবাদটি ব্যাখ্যা করা হলাে- প্রােটন অ্যানায়ন কো-ট্রান্সপাের্ট তত্ত্ব আধুনিক মতবাদ হিসেবে পরিচিত। এই আধুনিক মতবাদ অনুযায়ী আয়ন নির্দিষ্ট কিছু প্রােটিনই বাহক আয়ন হিসেবে কাজ করে। বাইরের দ্রবণ থেকে প্রতিটি আয়ন কোষঝিল্লীর অভ্যন্তরে নির্দিষ্ট প্রােটিন বাহক দিয়ে বাহিত হয়ে কোষের ভিতরে প্রবেশ করে। এতে যে চালিকাশক্তির প্রয়ােজন হয় তা কোষঝিল্লিস্থ ATPase এনজাইম কর্তৃক ATP ভেঙ্গে তৈরি হয়।
with উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
এই ধারণা অনুযায়ী কোষঝিল্লির কোষমধ্য থেকে ATP-ase কর্তৃক ATP ভেঙ্গে এবং একই সঙ্গে একটি প্রােটন (H’) পার্শ্ববর্তী কোষে নিক্ষিপ্ত হয় যাকে প্রােটন পাম্প বলে। এর ফলে কোষের বাইরের সাথে ভেতরের একটি pH gradient (কোষের বাইরে pH কম এবং ভেতরে pH বেশি) এবং Potential gradient (কোষের বাইরে +ve charge বেশি এবং ভেতরে +ve charge কম) তৈরি হয়। এরূপ অবস্থাকে একত্রে প্রােটন মােটিভ ফোর্স বা তড়িৎ রাসায়নিক বিভব বলে । প্রােটন মােটিভ ফোর্স তৈরি হলেই বাহক প্রােটিনগুলাে সক্রিয় হয় এবং ক্যাটায়নের একক পরিবহন ঘটায়। আবার প্রােটনও বাইরে থেকে ভেতরে ঢুকতে চায় আর সে সময় অ্যানায়নগুলাে প্রােটন অ্যানায়ন। কো-ট্রান্সপাের্ট প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট বাহকের মাধ্যমে ভেতরে ঢুকে।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ উদ্দীপকে প্রদর্শিত চিত্র ‘N’ অংগটি হলাে পত্ররন্দ্র । পত্ররন্ত্রের মাধ্যমেই উদ্ভিদ তার শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বাম্পাকারে বের করে দেয়। পত্রর দিনের বেলা খােলা থাকে, রাতে বন্ধ থাকে।পত্ররন্দ্র খােলা ও বন্ধ হওয়ার কারণ বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। নিচে পত্ররন্দ্র খােলা ও বন্ধ হওয়ার কারণ হিসেবে আধুনিক মতবাদ বা প্রােটন প্রবাহ মতবাদটি বিশ্লেষণ করা হলাে-
পত্ররন্দ্র খােলা : আলােক বর্ণালীর নীল অংশ (Blue light) রক্ষীকোষের রিসেপ্টর গুলােকে উদ্দীপ্ত করে, যার ফলে সক্রিয়ভাবে পটাশিয়াম আয়ন (K+) রক্ষীকোষে প্রবেশ করে। K+ প্রবেশের কারণে কোষস্থ দ্রবণে দ্রব্যের (Solute) ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় এবং পার্শ্ববর্তী কোষ হতে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় পানি রক্ষীকোষে প্রবেশ করে। রক্ষীকোষে পানি প্রবেশের ফলে রক্ষীকোষ স্ফীত হয় এবং পত্ররন্দ্র খুলে যায়। কোষে CO2 এর পরিমাণ কমে গেলে রক্ষীকোষে K+ প্রবেশ বৃদ্ধি পায়, ফলে পার্শ্ববর্তী কোষ থেকে পানি রক্ষীকোষে প্রবেশ করে এবং রক্ষীকোষ স্ফীত হয়ে পত্ররন্দ্র খুলে যায়।রক্ষীকোষ থেকে সক্রিয়ভাবে H+ বের হয়ে গেলেও পত্ররন্দ্র খুলে যায় ।
পত্ররন্দ্র বন্ধ হওয়া : রক্ষীকোষ থেকে K+ বের হয়ে যায়, সাথে সাথে পানিও বের হয়ে যায়। ফলে রক্ষীকোষ স্ফীতি হারিয়ে শিথিল হয়ে পড়ে এবং পত্ররন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়।মেসেফিল কোষে পানির অভাব দেখা দিলে সেখানে অ্যাবসিসিক এসিড তৈরি হয়। যার ফলে রক্ষীকোষ থেকে K+ বের হয়ে যায় । K+ বের হয়ে গেলে পানিও বের হয়ে যায়, ফলে রক্ষীকোষ স্ফীতি হারায় এবং পত্ররন্ধু বন্ধ হয়ে যায়।
উচ্চ তাপমাত্রায় ফটোসিনথেসিস কমে যায় এবং কোষীয় শ্বসন বেড়ে যায়। এর ফলে কোষে CO2 এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। পরিণামে পত্ররন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। কাজেই মনে করা হয় পত্ররন্দ্র খােলা ও বন্ধ হওয়ার জন্য একাধিক নিয়ামক কাজ করে।
Plant Physiology: উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর
সিলেট বোর্ড ২০২১
৪।
ক. NADP কী?
খ, ফার্মেন্টেশন বলতে কী বুঝ?
গ. উদ্দীপকে নির্গত ‘x’ এর উৎস বর্ণনা কর।
ঘ. প্রকৃতিতে Y আত্তীকরণ প্রক্রিয়াটির তাৎপর্য লিখ।
ক) Nicotinamide Adenine Dinucleotide Phosphate.
খ কোষের বাইরে অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে গ্লুকোজ অণু অসম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে অ্যালকোহল বা ল্যাকটিক এসিড সৃষ্টি ও অল্প পরিমাণ শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ফার্মেন্টেশন বা গাজন বলে । ফার্মেন্টেশনের ফলে ইথানল অথবা ল্যাকটিক এসিড উৎপন্ন হয়। ফার্মেন্টশনে কোষের মধ্যে সৃষ্ট বিভিন্ন এনজাইম কোষের বাইরে নিঃসৃত হয়ে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে ।
গ প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকে নির্দেশিত নির্গত “X” দ্বারা অক্সিজেন (02) কে বুঝানাে হয়েছে। যার উৎস হলাে পানি (H2O)। নিচে “X” অর্থাৎ O2 এর উৎস যে পানি (H2O) তা প্রমাণ করার জন্য দুটি পরীক্ষা বর্ণনা করা হলাে-
১. হিল বিক্রিয়া : ১৯৩৭ সালে রবিন হিল নামক ইংরেজ প্রাণরসায়নবিদ এ পরীক্ষা করেন । তিনি CO2 এর অনুপস্থিতিতে আলাদা ক্লোরােপ্লাস্ট, পানি ও কিছু অজৈব জারক অর্থাৎ হাইড্রোজেন গ্রাহক একত্রে রাখেন। এ পরীক্ষায় দেখা যায় CO2 এর অনুপস্থিতিতে কোনাে শর্করা তৈরি হয় নি, কিন্তু অক্সিজেন নির্গত হয়। বাস্তবে পানির হাইড্রোজেন অজৈব জারক তথা হাইড্রোজেন গ্রাহককে বিজারিত করে এবং অক্সিজেনকে বের করে দেয়। হিলের এ পরীক্ষা থেকে প্রমাণিত হয় যে, সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নির্গত বিক্রিয়াটি নিম্নরূপ :
A (অজৈব জারক) + H2O → (আলাে+ক্লোরােফিল) AH2 + 1/2O2
২. রুবেন ও কামেন এর তেজস্ক্রিয় চিহ্নিতকরণ পরীক্ষা : ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যামুয়েল রুবেন ও কামেন তেজস্ক্রিয় 0,18 (অক্সিজেনের তেজস্ক্রিয় আইসােটোপ) দ্বারা পানির অক্সিজেনকে চিহ্নিত করেন এবং ঐ পানিতে কতকগুলাে শৈবাল জাতীয় উদ্ভিদ রেখে সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার ফলাফল লক্ষ করেন।
6CO2 + 12H2O18 → (আলাে+ক্লোরােফিল) C6H12O6+6H2O+ 6O218
দেখা গেল যে, নির্গত অক্সিজেন তেজস্ক্রিয় । এতে নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হলাে যে, সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নির্গত অক্সিজেনের উৎস পানি। এবার দেখা গেল যে, শর্করা ও পানিতে তেজস্ক্রিয় অক্সিজেন বিদ্যমান।কিন্তু সালােকসংশ্লেষণের ফলে নির্গত অক্সিজেন মােটেই তেজস্ক্রিয় নয়। কাজেই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলাে যে, সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নির্গত সবটুকু অক্সিজেনের উৎস পানি। এর সামান্যতম অংশও কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে আসে না।
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকে “Y” বলতে ATP ও NADPH + H+ আত্তীকরণ প্রক্রিয়াটির কথা বলা হয়েছে। নিচে এর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা হলাে-
আমরা জানি, সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ সূর্যের আলাে ব্যবহার করে H2O ও CO2 এর সাহায্যে শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরি করে এবং O2 নির্গত হয়। সালােকসংশ্লেষণের দুটি পর্যায় আলােক পর্যায় ও অন্ধকার পর্যায়। আলােক পর্যায়ে ATP ও NADPH + H+ আত্তীকরণ শক্তি তৈরি হয়, সেই শক্তি ব্যবহার করে অন্ধকার পর্যায়ে শর্করা তৈরি করে।আলােকনির্ভর অধ্যায়ের বিক্রিয়াসমূহ থাইলাকয়েড মেমব্রেনে সংঘটিত হয়।
ক্লোরােফিল অণু আলােকরশ্মির ফোটন শােষণ করে এবং শোষণকৃত ফোটন হতে শক্তি সঞ্চয় করে উচ্চ শক্তিসম্পন্ন ATP তৈরি করে। এছাড়া আলােক মাধ্যমে H2O ভেঙ্গে O2 নির্গত হয় এবং NADP বিজারিত হয়ে NADPH + H+ তৈরি হয়। উচ্চশক্তি সম্পন্ন ATP ও NADPH + H+ সৃষ্টি করতে যে বিপুল পরিমাণ শক্তির প্রয়ােজন হয় তা সূর্যালােক হতে আসে। সূর্যালােকের শক্তিকে ব্যবহার করে ATP তৈরির প্রক্রিয়াকে ফটোফসফোরাইলেশন বলে। CO2 আত্তীকরণের মাধ্যমে শর্করা তৈরির সময় ATP ও NADPH + H+ এর শক্তি ব্যবহৃত হয় বলে ATP ও NADPH + H+ কে আত্তীকরণ শক্তি বলে। এই আত্তীকরণ শক্তি উদ্ভিদ তার নিজের প্রয়ােজনে ব্যবহার করতে পারে ।
আরো দেখতেঃ উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর সহ অনুশীলন কর।
ঢাকা বোর্ড ২০২১
ক. শ্বসন কী?
খ. নিষ্ক্রিয় পরিশােষণ বলতে কী বােঝায়?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ‘M’ পথের মাধ্যমে গ্লুকোজ সৃষ্টির ধাপসমূহ ছকের সাহায্যে দেখাও।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ‘M’ ও ‘N’ পথের পার্থক্য বিশ্লেষণ কর।
ক) যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় O2 এর উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে কোষের জৈবখাদ্য জারণের মাধ্যমে শক্তি নির্গত করে এবং উপজাতদ্রব্য হিসেবে CO2 ও H2O উৎপন্ন করে তাই শ্বসন।
খ বিপাকীয় শক্তি ব্যয় না করে, ব্যাপন পদ্ধতিতে কোষ কর্তৃক আয়ন (খনিজ) শােষণের পদ্ধতিকে নিস্ক্রিয় পরিশােষণ বলা হয়। এতে শ্বসন হার স্বাভাবিক থাকে। নিষ্ক্রিয় শােষণে কোনাে বাহক আয়ন বা অণুর প্রয়ােজন হয় না। একই সাথে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের কোনাে শােষণও ঘটে না। নিষ্ক্রিয় পরিশােষণে এনজাইমের কোনাে ভূমিকা নেই।
গ প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকে বর্ণিত ‘M’ পথটি হলাে ক্যালভিন র্যাশাম চক্ৰ বা C3 চক্র। C3 চক্রের মাধ্যমে গ্লুকোজ যেভাবে সৃষ্টি হয় তা নিচে ছকের সাহায্যে উপস্থাপন করা হলাে-
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘M’ ও ‘N’ পথ হলাে যথাক্রমে ক্যালভিন- ব্যাশাম চক্র বা C3 চক্র, এবং হ্যাচ-স্ল্যাক চক্র বা C4 চক্র। নিচে C3 ও C4 চক্রের মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হলাে-
১. ক্যালভিন চক্রে CO2 এর প্রথম গ্রাহক হলাে রাইবুলােজ ১, ৫ বিসফসফেট, কিন্তু হ্যাচ ও স্ল্যাক চক্রে ফসফোইনল পাইরুভিক এসিড হলাে CO2 এর প্রথম গ্রাহক।
২. ক্যালভিন চক্রে প্রথম স্থায়ী পদার্থ হলাে ৩-কার্বনবিশিষ্ট ৩- ফসফোগ্লিসারিক এসিড, কিন্তু হ্যাচ-স্ল্যাক চক্রে প্রথম স্থায়ী পদার্থ ৪-কার্বনবিশিষ্ট অক্সালাে অ্যাসিটিক এসিড।
৩. ক্যালভিন চক্রের ক্ষেত্রে তা প্রতিটি ক্লোরােপ্লাস্টে চলতে পারে,অন্যদিকে হ্যাচ ও স্ল্যাক চক্র সম্পন্ন হতে মেসােফিল ক্লোরােপ্লাস্ট ও বান্ডলসীথ ক্লোরােপ্লাস্ট দুটিরই প্রয়ােজন।
৪. ক্যালভিন চক্রের ক্ষেত্রে আদর্শ তাপমাত্রা হলাে ১০°-২৫° সে.; অপরদিকে হ্যাচ-স্ল্যাক চক্রের মাধ্যমে CO2 বিজারণের আদর্শ তাপমাত্রা হলাে ৩০°—৪৫° সে.।
৫. ক্যালভিন চক্র চলতে গেলে বায়ুমণ্ডলে প্রতি মিলিয়নে কমপক্ষে 500 PPm CO2 থাকা প্রয়ােজন কিন্তু বায়ুমণ্ডলে প্রতি মিলিয়নে নিম্নতম 0.10 PPm CO2 থাকলেও হ্যাচ-ম্ল্যাক চক্র চলে।
৬. অধিক আলাের প্রখরতায় C3 চক্র বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু অধিক আলােতেও C4 চক্র সম্পূর্ণভাবে সচল থাকে।
৭. C3 চক্রে ফটোরেসপিরেশন ঘটে, কিন্তু C4 চক্রে ফটোরেসপিরেশন ঘটে না।
৮. C3 চক্রে সালােকসংশ্লেষণের হার কম, অপরদিকে C4 চক্রে সালােকসংশ্লেষণের হার বেশি।
ঢাকা বোর্ড ২০২১
৬। গ্লুকোজ → → → 2 অণু পাইভিক এসিড
ক. সালােকসংশ্লেষণ কী?
খ, লিমিটিং ফ্যাক্টর বলতে কী বােঝায়?
গ. উদ্দীপক প্রদর্শিত প্রক্রিয়ায় প্রথম তিনটি বিক্রিয়া বর্ণনা কর।
ঘ. সবাত শ্বসনের উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়ার সাথে তার পরবর্তী চক্রের পার্থক্য বিশ্লেষণ কর।
ক) যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় সজীব উদ্ভিদ কোষ অভ্যন্তরস্থ ক্লোরােফিল সূর্যালােকের উপস্থিতিতে CO2ও H2O কে ব্যবহার করে শর্করা জাতীয় খাদ্য উৎপন্ন এবং উপজাত হিসেবে O2 নির্গত করে তাকে সালােকসংশ্লেষণ বলে।
খ 1905 সালে Blackman, Law of minimum এর উপর ভিত্তি করে সীমাবদ্ধতার ফ্যাক্টর সূত্র প্রস্তাব করেন। তার মতে কোনাে বিক্রিয়া একাধিক প্রভাবক দ্বারা প্রভাবিত হলে সর্বাপেক্ষা কম মাত্রার প্রভাবক দ্বারা বিক্রিয়াটির হার নির্ধারিত হয়। Blackman কম মাত্রার প্রভাবকটিকে Limiting Factor বা সীমা নির্ধারণকারী প্রভাবক নামে অভিহিত করেছেন। যেমন, তাপমাত্রা সালােকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণকারী একটি ফ্যাক্টর।
গ প্রশ্নের উত্তর
গ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রদর্শিত প্রক্রিয়াটি হলাে গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়া যা সবাত শ্বসনের প্রথম পর্যায়। গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় এক অণু গ্লুকোজ বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জারিত হয়ে দুই অণু ৩-কার্বনবিশিষ্ট পাইরুভিক এসিডে পরিণত হয় । নিচে গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ার প্রথম তিনটি বিক্রিয়া বর্ণনা করা হলাে-
১ম ধাপ : প্রথমে গ্লুকোজ এক অণু ATP দ্বারা ফসফেটযুক্ত হয়ে শক্তি সঞয় করে গ্লুকোজ ৬-ফসফেটে পরিণত হয়। হেক্সোকাইনেজ এনজাইম এক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। ATP ফসফেট ত্যাগ করে ADP তে পরিণত হয়। বিক্রিয়াটি একমুখী।
গ্লুকোজ + ATP→ (হেক্সোকাইনেজ) গ্লুকোজ ৬-ফসফেট + ADP
২য় ধাপ : গ্লুকোজ ৬-ফসফেট ফসফোগ্লুকো আইসােমারেজ এনজাইমের প্রভাবে ফুক্টাজ ৬-ফসফেটে পরিণত হয়।
গ্লুকোজ ৬-ফসফেট → (আইসােমারেজ ) ফুক্টোজ ৬-ফসফেট
৩য় ধাপ : ফুক্টোজ ৬-ফসফেট ম্যাগনেসিয়াম আয়নের উপস্থিতিতে ফসফোফুক্টোকাইনেজ এনজাইমের প্রভাবে ATP দ্বারা ফসফেট যুক্ত হয়ে ফুক্টোজ-১, ৬-বিসফসফেটে পরিণত হয়। এসময় ATP হতে ADP তৈরি হয়।
ফ্রুক্টোজ-৬ ফসফেট→(ফসফোফুক্টোকাইনেজ )ফুক্টোজ-১, ৬-বিসফসফেট
ঘ প্রশ্নের উত্তর
ঘ) উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রক্রিয়াটি হলাে সবাত শ্বসনের প্রথম পর্যায় গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়া এবং তার পরবর্তী চক্রটি হলাে ক্রেবস চক্র। নিচে গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়া এবং ক্রেবস চক্রের মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করা হলাে-
১. গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়াটি শ্বসনের প্রথম পর্যায়। সবাত ও অবাত উভয় শ্বসনেই ঘটে। অপরদিকে ক্রেবসচক্র সবাত শ্বসনের দ্বিতীয় পর্যায় (প্রধান তিনটি ধাপ ধরে) এবং এখানেই সীমাবদ্ধ।
২. গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়া কোষের সাইটোপ্লাজমে ঘটে। কিন্তু ক্রেবসচক্র মাইটোটন্ড্রিয়ার ম্যাট্রিক্সে (ধাত্রে) ঘটে থাকে।
৩. গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় মাত্র ২ অণু ATP ব্যয় হয় । কিন্তু ক্রেবস চক্রে কোনাে ATP ব্যয় হয় না।
৪. গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় কোনাে O2 এর প্রয়ােজন হয় না । অন্যদিকে ক্রেবস চক্রে O2 এর প্রয়ােজন হয়।
৫, গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় কোনাে CO2 উৎপন্ন হয় না। অপরদিকে ক্রেবস চক্রে CO2উৎপন্ন হয়।
৬. গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় শ্বসন বস্তুর আংশিক জারণ ঘটে। কিন্তু ক্রেবসচক্রে শ্বসন বস্তুর সম্পূর্ণ জারণ ঘটে।
৭. গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় ১ অণু গ্লুকোজের জারণে নিট ২ অণু ATP ও ২ অণু NADH + H+ তৈরি হয়। অপরদিকে ক্রেবস চক্রের সমগ্র পর্যায়টিতে (অ্যাসিটাইল কো-এ সৃষ্টি থেকে) ৮ অণু NADH + H+ ; ২ অণু FADH2 ও ২ অণু ATP/GTP সৃষ্টি হয়।
৮. গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ার অপর নাম EMP পাথওয়েও বলা হয়। অন্যদিকে ক্রেবস চক্রের অপর নাম সাইট্রিক এসিড চক্র বা TCA চক্র বলা হয়।
এই উদ্ভিদ শারীরতত্ত্ব সৃজনশীল বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর ছাড়াও আরো দেখতে পারোঃ