অনিয়ন্ত্রিত মাইটোসিস

মাইটোসিস-এর ধাপসমূহ / Mitosis  

মাইটোসিস-এর ধাপসমূহ / Mitosis

মাইটোসিস (Mitosis) 

সম্পূর্ণ মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত; যথা-(i) ক্যারিওকাইনেসিস (Karyokinesis) — মাইটোসিস প্রক্রিয়া চলাকালে নিউক্লিয়াসের বিভাজন ও (ii) সাইটোকাইনেসিস (Cytokinesis)—মাইটোসিসের শেষ দিকে সাইটোপ্লাজমের বিভাজন। 

Read more

(i) ক্যারিওকাইনেসিস (Karyokinesis) : মাইটোসিস বলতে মূলত ক্যারিওকাইনেসিসকেই বোঝানো হয়ে থাকে। মাইটোসিস কোষ বিভাজনে মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস থেকে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস সৃষ্টি হওয়াকে ক্যারিওকাইনেসিস বলে। 

মাইটোসিস-এর পর্যায়সমূহ 

কোষ বিভাজন একটি অবিচ্ছিন্ন বা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া তাই একে বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করা সঠিক নয়। তবুও বর্ণনা ও ধারাবাহিকতার সুবিধার জন্য মাইটোসিসকে প্রধানত পাঁচটি দশা বা পর্যায়ে ভাগ করা হয়ে থাকে।

পর্যায়গুলো নিম্নরূপ :
(১) প্রোফেজ (Prophase) বা আদ্যপর্যায় (গ্রিক শব্দ pro = প্রাক + phase পর্যায় বা দশা) : মাইটোসিস-এর প্রথম পর্যায়কে প্রোফেজ বলে। এটি মাইটোসিসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী পর্যায়। এ পর্যায়ে কোষের নিউক্লিয়াস আকারে বড় হয়। নিউক্লিয়াস, বিশেষ করে ক্রোমোসোমগুলোতে জল-বিয়োজন (dehydration) আরম্ভ হয়। ক্রমাগত জল-বিয়োজনের ফলে ক্রোমোসোমগুলো সংকুচিত হতে থাকে, ফলে ক্রোমোসোমগুলো ক্রমাগত খাটো ও মোটা হয়, রং ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং স্পষ্ট হতে স্পষ্টতরভাবে দৃষ্টিগোচর হয়।

এ পর্যায়ের শেষের দিকে নিউক্লিওলাস এবং নিউক্লিয়ার এনভেলপের বিলুপ্তি ঘটতে থাকে। সাইক্লিন ডিপেনডেন্ট কাইনেজ (Cdk) কর্তৃক কতক প্রোটিনের ফসফোরাইলেশনের কারণে ক্রোমোসোমের সংকোচন শুরু হয় এবং কতক প্রোটিনের ফসফোরাইলেশনের কারণে নিউক্লিয়ার এনভেলপের বিলুপ্তি ঘটতে থাকে। 
মাইটোসিস-এর ধাপসমূহ / Mitosis

মাইটোসিস কোষ বিভাজনের প্রোফেজ পর্যায়ে প্রতিটি ক্রোমোসোম সেন্ট্রোমিয়ার ব্যতীত লম্বালম্বিভাবে (অনুদৈর্ঘ্যে) দুটি সূত্রে বিভক্ত থাকে। প্রতিটি সূত্রকে ক্রোমাটিড বলা হয়। ক্রোমোসোমগুলো প্রোফেজ পর্যায়ে ক্রোমাটিডে বিভক্ত হলেও আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রে সাধারণত অবিভক্তই মনে হয়।

এ পর্যায়ে স্পিন্ডল তন্ত্র সৃষ্টির সূচনা ঘটে। প্রাণিকোষে সেন্ট্রিওল থেকে স্পিন্ডল তন্তুর সৃষ্টি হলেও উদ্ভিদ কোষে মাইক্রোটিউবিউলস থেকে (সাধারণত উদ্ভিদ কোষে সেন্ট্রিওল থাকে না) স্পিন্ডল তন্তুর সৃষ্টি হয়। 

(২) প্রো-মেটাফেজ (Pro-metaphase) বা প্রাক-মধ্যপর্যায় (গ্রিক শব্দ pro = প্রাক + meta = মধ্য + phase = পর্যায় বা দশা) : প্রোফেজ পর্যায়ের পরবর্তী এবং মেটাফেজ পর্যায়ের অগ্রবর্তী পর্যায়কে প্রো-মেটাফেজ বলে। এটি স্বল্পস্থায়ী পর্যায় । প্রোফেজের একেবারে শেষদিকে উদ্ভিদকোষে কতগুলো তন্তুময় প্রোটিনের সমন্বয়ে দু’মেরুযুক্ত স্পিন্ডল যন্ত্রের (spindle apparatus) সৃষ্টি হয়।

এই পর্যায়ের প্রথম দিকেই স্পিন্ডল যন্ত্রের তন্তুগুলোর আঘাতে নিউক্লিয়ার এনভেলপ বিলুপ্ত হতে থাকে এবং এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যায়। এই পর্যায়ে নিউক্লিওলাসেরও বিলুপ্তি ঘটে। প্রো-মেটাফেজ পর্যায়ে উদ্ভিদ কোষে তন্তুময় প্রোটিন সমন্বয়ে গঠিত স্পিন্ডল যন্ত্রের সৃষ্টি হয়। স্পিন্ডল যন্ত্রের দু’মেরুর মধ্যবর্তী অঞ্চলকে ইকুয়েটর বা বিষুবীয় অঞ্চল বলা হয়। স্পিন্ডল যন্ত্রের তন্তুগুলো এক মেরু হতে অপর মেরু পর্যন্ত বিস্তৃত। এদেরকে স্পিন্ডল ফাইবার (spindle fibre) বলা হয়।

মাইটোসিস-এর ধাপসমূহ / Mitosis

প্রো-মেটাফেজ পর্যায়ে ক্রোমোসোমের সেন্ট্রোমিয়ার স্পিন্ডল যন্ত্রের নির্দিষ্ট তন্তুর সাথে সংযুক্ত হয়। এসময় ক্রোমোসোম একটু আন্দোলিত হয় যাকে ক্রোমোসোমীয় নৃত্য বলা হয়ে থাকে। আসলে ক্রোমোসোমগুলো বিষুবীয় অঞ্চলের দিকে যেতে থাকে। ক্রোমোসোমের সেন্ট্রোমিয়ার সংযুক্তকারী তন্ত্রকে ট্র্যাকশন ফাইবার (traction fibre) বলা হয়। ক্রোমোসোমগুলো এ সময় বিষুবীয় অঞ্চলে বিন্যস্ত হতে থাকে। (প্রাণিকোষে স্পিন্ডল যন্ত্র সৃষ্টি ছাড়াও পূর্বে বিভক্ত সেন্ট্রিওল দু’মেরুতে অবস্থান করে এবং দুমেরু হতে অ্যাস্টার তন্তু বিচ্ছুরিত হয়।) 

Mitotic centre : কোষের এ অঞ্চল মাইটোসিসের জন্য মাইক্রোটিউবিউল্স ব্যবস্থা করে। প্রাণিকোষে সেন্ট্রোসোম mitotic centre হিসেবে কাজ করে। 

স্পিন্ডল ফাইবার সেন্ট্রোমিয়ারের কাইনেটোকোরের মটর প্রোটিনে সংযুক্ত হয়। এই প্রোটিন ATP ভেঙ্গে ADP ও Pi সৃষ্টি করে এবং শক্তি নির্গত করে। এই শক্তি খরচ করে ক্রোমোসোম মাইক্রোটিউবিউলস ধরে চলতে থাকে। 

(৩) মেটাফেজ (Metaphase) বা মধ্যপর্যায় (গ্রিক শব্দ meta = মধ্য + phase পর্যায় বা দশা) : এ পর্যায়ের প্রথমেই সমস্ত ক্রোমোসোম স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে এসে অবস্থান করে। স্পিন্ডল যন্ত্রের দু’মেরুর মধ্যবর্তী স্থানকে বিষুবীয় বা নিরক্ষীয় অঞ্চল বলা হয়। কোষ বিভাজনের মেটাফেজ দশায় স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে ক্রোমোসোমের বিন্যপ্ত হওয়াকে মেটাকাইনেসিস বলে। এ পর্যায়ে ক্রোমাটিডগুলো সবচেয়ে বেশি মোটা, খাটো ও স্পষ্ট দেখা যায়। ক্রোমোসোমের খাটো ও মোটা হওয়াকে বলা হয় কন্ডেনসেশন (Condensation)। একটি অতিমাত্রায় কয়েলিং (coiling) প্রক্রিয়ায় এটি হয়ে থাকে তাই একে বলা হয় সুপার কয়েলিং।

সুপার কয়েলিং প্রক্রিয়ায় ক্রোমোসোম খাটো ও মোটা হয়। এ পর্যায়ে কোষে ক্রোমোসোম সংখ্যা, আকার ও আকৃতি নির্ণয় করা যায়। নিউক্লিয়ার এনভেলপ ও নিউক্লিওলাস সম্পূর্ণ বিলুপ্ত থাকে। মেটাফেজ পর্যায়ের শেষ ভাগে প্রতিটি সেন্ট্রোমিয়ার সম্পূর্ণ বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য সেন্ট্রোমিয়ার সৃষ্টি করে। 

(৪) অ্যানাফেজ (Anaphase) বা গতিপর্যায় (গ্রিক শব্দ ana = গতি + phase = পর্যায় বা দশা) : সেন্ট্রোমিয়ার পৃথক হওয়ার সাথে সাথে অ্যানাফেজ পর্যায় শুরু হয়। এ পর্যায়ে অপত্য ক্রোমোসোমসমূহ বিষুবীয় অঞ্চল থেকে মেরুমুখী চলতে শুরু করে। সেন্ট্রোমিয়ারের পূর্ণ বিভক্তির ফলে প্রতিটি ক্রোমাটিড একটি অপত্য ক্রোমোসোমে পরিণত হয় এবং প্রতিটি অপত্য ক্রোমোসোম এদের নিকটস্থ মেরুর দিকে ধাবিত হয়।

অপত্য ক্রোমোসোমের মেরু অভিমুখী চলনে সেন্ট্রোমিয়ারই অগ্রগামী থাকে এবং বাহুদ্বয় অনুগামী হয়, ফলে সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুযায়ী ক্রোমোসোমগুলো ইংরেজি V (মেটাসেন্ট্রিক), L (সাবমেটাসেন্ট্রিক), J (অ্যাক্রোসেন্ট্রিক) ও I (টেলোসেন্ট্রিক) অক্ষরের মতো দেখায়। অপত্য ক্রোমোসোমগুলো মেরুর কাছাকাছি পৌঁছালেই অ্যানাফেজ তথা গতিপর্যায়ের সমাপ্তি ঘটে। 

(৫) টেলোফেজ (Telophase) বা অন্তপর্যায় (গ্রিক শব্দ telo = শেষ + phase = পর্যায় বা দশা) : কোষ বিভাজনের এ পর্যায়ে অপত্য ক্রোমোসোমসমূহ দুই বিপরীত মেরুতে স্থির অবস্থান নেয় এবং ক্রোমোসোমগুলোতে আবার জলযোজন (hydration) ঘটে। ফলে এরা ক্রমান্বয়ে প্রসারিত হয়। ক্রোমোসোমগুলো ক্রমশ সরু ও লম্বা হতে থাকে এবং অস্পষ্ট হতে থাকে।

এ পর্যায়ের শেষের দিকে দুই মেরুতে ক্রোমোসোমগুলোর চারদিকে নিউক্লিয়ার এনভেলপ এবং স্যাট ক্রোমোসোমের গৌণ কুঞ্চনে নিউক্লিওলাসের পুনঃআবির্ভাব ঘটে। ফলে দু’মেরুতে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি হয়। স্পিন্ডল ফাইবারগুলো ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যায়। 

মাইটোসিসের প্রধান পর্যায়গুলো মনে রাখার একটি সহজ উপায় : IPMAT Interphase I is for Interlude (দুটো ঘটনার মাঝখানে অবকাশ Prophase P is for Prepare (বিভাজনের জন্য তৈরি হওয়া) Metaphase M is for Middle (ক্রোমোসোমের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান) Anaphase A is for Apart (ক্রোমাটিড পৃথক হয়ে সরে যাওয়া) Telophase Tis for Two (দুটি কোষের জন্য) 

(ii) সাইটোকাইনেসিস (Cytokinesis) : টেলোফেজ পর্যায়ের শেষের দিকে সাইটোকাইনেসিস আরম্ভ হয়। বিভাজনরত কোষের সাইটোপ্লাজম দু’ভাগে বিভক্ত হওয়াই সাইটোকাইনেসিস। উদ্ভিদ কোষে সাইটোকাইনেসিস ঘটে কোষপ্লেট ও কোষ প্রাচীর সৃষ্টির মাধ্যমে। উদ্ভিদ কোষে স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চল ক্রমশ প্রশস্ত হয়ে কোষ প্রাচীরকে স্পর্শ করে। সূত্রগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়। এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম থেকে আসা ফ্র্যাগমোপ্লাস্ট এবং ক্ষুদ্র ভেসিকল মিলিত হয়ে কোষপ্লেট তৈরি করে।

বিষুবীয় অঞ্চলেই লাইসোসোমের ন্যায় ফ্র্যাগমোসোম জমা হয় এবং পরে এরা মিলিত হয়ে প্লাজমালেমা (plasmalema) নামক ঝিল্লির সৃষ্টি করে। এরা কোষপ্লেট সৃষ্টিতে সাহায্য করে। কোষপ্লেটের ওপর সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ পেকটিন ও অন্যান্য দ্রব্য জমা হয়ে কোষ প্রাচীর গঠন করে। কোষ প্রাচীর গঠনের ফলে মাতৃকোষটি পরবর্তীতে দু’ভাগে ভাগ হয়ে দুটি অপত্য কোষের জন্ম হয়। 

মাইটোসিস-এর ধাপসমূহ / Mitosis

[ প্রাণীর ক্ষেত্রে স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চল বরাবর কোষঝিল্লিটি গর্তের ন্যায় ভেতরের দিকে ঢুকে যায় এবং এ গর্ত সব দিক হতে ক্রমান্বয়ে গভীরতর হয়ে মাঝখানে একত্রে মিলিত হয়, ফলে কোষটি দু’ভাগে ভাগ হয়ে পড়ে। প্রোটিন actin এবং myosin কোষঝিল্লির খাঁজ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। ] 

সাইটোকাইনেসিস না হলে (এবং ক্যারিওকাইনেসিস চলতে থাকলে) একই কোষে বহু নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি হয়। একে বলা হয় মুক্ত নিউক্লিয়ার বিভাজন (free nuclear division)। ডাবের পানি মুক্ত নিউক্লিয়ার বিভাজনের ফসল। কোনো কোনো শৈবাল, ছত্রাক ও প্রাণিকোষে ক্যারিওকাইনেসিস ঘটে কিন্তু সাইটোকাইনেসিস ঘটে না। এর ফলে একটি কোষে বহু নিউক্লিয়াস উৎপন্ন হয়। এ ধরনের উদ্ভিদ কোষকে সিনোসাইটিক (coenocytic) এবং প্রাণিকোষকে প্লাজমোডিয়াম (plasmodium) বলে। 

ক্যারিওকাইনেসিস ও সাইটোকাইনেসিস এর মধ্যে পার্থক্য 

ক্যারিওকাইনেসিস 

১। এ পদ্ধতিতে কোষের নিউক্লিয়াসের বিভাজন ঘটে। 
২। জটিল পদ্ধতি এবং দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। 
৩। সমগ্র প্রক্রিয়াটি পাঁচটি দশা, যথা-প্রোফেজ, প্রো-মেটাফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ এবং টেলোফেজ-এ বিভক্ত।
৪। নিউক্লিয়াস বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়। 
৫। নিউক্লিয়াসের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে। 
৬। ক্যারিওকাইনেসিস সাইটোকাইনেসিসের আগে ঘটে 

সাইটোকাইনেসিস 

১। এ পদ্ধতিতে কোষের সাইটোপ্লাজমের বিভাজন ঘটে।
২। অপেক্ষাকৃত সৱল পদ্ধতি এবং কম সময়ের প্রয়োজন। 
৩। একে কোনো পর্যায়ে বিভক্ত করা হয় না। 
৪। সাইটোপ্লাজম সমান দুটি ভাগে বিভক্ত হয়।
৫। কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে। 
৬। সাইটোকাইনেসিস ক্যারিওকাইনেসিসের পরে ঘটে। 

মাইটোসিস-এর ধাপসমূহ / Mitosis

মাইটোসিসের গুরুত্ব বা তাৎপর্য বা প্রয়োজনীয়তা (Significance of Mitosis): জীবদেহে মাইটোসিস প্রক্রিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। নিচে মাইটোসিস প্রক্রিয়ার গুরুত্ব উপস্থাপন করা হলো।

১। দেহ গঠন ও দৈহিক বৃদ্ধি : বহুকোষী জীবে জাইগোট নামক একটি মাত্র কোষের মাইটোসিস বিভাজনের মাধ্যমে বহুকোষী জীবদেহ গঠিত হয় এবং এর দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে। 

২। বংশবৃদ্ধি : কতক এককোষী সুকেন্দ্রিক (cukaryotic) জীবে মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় বংশবৃদ্ধি ঘটে (যেমন:Chlamydomonas)। 

৩। জননাঙ্গ সৃষ্টি ও জনন কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি : মাইটোসিস বিভাজনের ফলেই বহুকোষী জীবের জননাঙ্গ সৃষ্টি হয়, ফলে বংশবৃদ্ধির ক্রমধারা বজায় রাখতে পারে। জনন কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হলে এই প্রক্রিয়া আবশ্যক। 

৪। নির্দিষ্ট আকার-আয়তন রক্ষা : এ বিভাজন প্রক্রিয়ার ফলে কোষের স্বাভাবিক আকার, আকৃতি, আয়তন ইত্যাদি গুণাগুণ বজায় থাকে। 

৫। নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজমের ভারসাম্য রক্ষা : সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত বিভিন্ন ক্ষুদ্রাঙ্গ (অঙ্গাণু) ও রাসায়নিক উপাদানের সাহায্যে নিউক্লিয়াস কোষের বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজনের কারণে প্রতিটি কোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজমের মধ্যকার পরিমাণগত ও নিয়ন্ত্রণগত ভারসাম্য রক্ষিত হয়। 

৬। ক্রোমোসোমের সংখ্যার সমতা রক্ষা : মাইটোসিস কোষ বিভাজনের কারণে দেহের সব দেহকোষে সমসংখ্যক ও সমগুণ সম্পন্ন ক্রোমোসোম থাকে। 

৭। ক্ষতস্থান পূরণ : বহুকোষী জীবদেহে সৃষ্ট যেকোনো ক্ষতস্থান মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজনের মাধ্যমে পূরণ হয়। 

৮। ক্রমাগত ক্ষয়পূরণ : জীবকোষে কিছু কিছু কোষ আছে যাদের আয়ুষ্কাল নির্দিষ্ট। এসব কোষ বিনষ্ট হলে মাইটোসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এদের পূরণ ঘটে। 

৯। পুনরুৎপাদন : কিছু কিছু অতিপ্রয়োজনীয় কোষের জীবনকাল অতি সীমিত (যেমন- মানুষের লোহিত রক্তকোষ, কর্নিয়ার বাইরের কোষ) । এগুলো ক্রমাগত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। মাইটোসিস বিভাজনের মাধ্যমে এ কোষগুলোর পুনরুৎপাদন ঘটে।

১০। গুণগত বৈশিষ্ট্যের স্থিতিশীলতা রক্ষা : এ প্রকার বিভাজনের ফলে জীবজগতের গুণগত বৈশিষ্ট্যের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। 

১১ । অনিয়ন্ত্রিত মাইটোসিস-এর কুফল : অনিয়ন্ত্রিত মাইটোসিস-এর ফলে টিউমার, ক্যান্সার সৃষ্টি ইত্যাদি হয়। 

এই মাইটোসিস-এর ধাপসমূহ / Mitosis ছাড়াও আরো জানুন

Leave a Comment

You cannot copy content of this page

Scroll to Top